ভূমিকম্প হলে কী করব

ভূমিকম্প হলে কী করতে হবে, সে বিষয়ে ছাত্রদের সচেতনতামূলক মহড়া দেয় ফায়ার সার্ভিসছবি: জুয়েল শীল

ভূমিকম্পের আগে

যদি কোন এলাকা ভূমিকম্প প্রবণ হয় তবে ভূমিকম্প হলে কী কী করতে হয় সে বিষয়ে সবাইকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে ও সে অনুসারে মাঝে মাঝে ড্রিল বা চর্চা করতে হবে। স্কুলে এ ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া খুব সহজ।

বাড়ির কাঠামো এমনভাবে নির্মাণ করতে যেন সেটা ভূমিকম্প সহনশীল হয়, ভূমিকম্প সহনশীল বাড়ি না হলে ভূমিকম্পে সে বাড়ি সহজে ধসে পড়তে পারে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী প্রস্তুত রাখা

ফায়ার সার্ভিস বা ফায়ার স্টেশন, প্রয়োজনীয় সেবা সংস্থার নাম্বার রাখা।

যদি আগেই থেকে ধারণা পাওয়া যায় যে ভূমিকম্প হতে পারে কিংবা কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ-এর সম্ভাবনা রয়েছে তবে সকল ইলেকট্রিক সামগ্রী বন্ধ রাখা, এমন কী তার খুলে রাখা। ওয়াটার সিস্টেম বন্ধ রাখা।

ভারী জিনিসপত্র কোনো কিছুর উপরে থাকলে সেগুলো মেঝেতে রাখা।

ভূমিকম্পের সময় যা করতে হবে

কেউ যদি কোন গাড়িতে বা যানবাহনে অবস্থান করে তবে দ্রুত সেখান থেকে নেমে যেতে হবে এবং সেই গাড়ি থেকে যতটা দূরে পারা যায় এমন কোন ফাঁকা জায়গায় চলে যেতে হবে।

প্রথমে যেটা মনে রাখতে হবে কোন ভাবে প্যানিক বা আতঙ্কিত হওয়া যাবে না, তাহলে ভুলের সংখ্যা বেড়ে যাবে।

ভূমিকম্প শুরু হচ্ছে টের পেলে যদি সম্ভব হয় খোলা জায়গায় চলে যেতে হবে। বাড়ি, স্থাপনা, গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি এগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে।

যদি বাড়ির ভেতরে কেউ থাকে, তাহলে চেষ্টা করতে হবে বিছানা, টেবিলের নিচে বা দরজার পাশে থাকতে। দেওয়ালের বিপরীতে অবস্থান নিলে রক্ষা পাওয়ার সুযোগ থাকে বেশী।।

আরও পড়ুন

ভূমিকম্পের সময় দৌড়ানো উচিত নয়। ক্রল বা হামাগুড়ি দিয়ে আশ্রয় খোঁজা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

যে কোনো ঘটনা মাথায় লাগা আঘাত সবচেয়ে গুরুতর। ভূমিকম্পের সময় যেন মাথায় আঘাত না লাগে সেটাতে খেয়াল রাখতে হবে। হাত বা কোন কাপড় কিংবা এমন কিছু দিয়ে মাথা ঢেকে রাখা যেন মাথা রক্ষা করা যায়।

মুখে যাতে ধুলা বা ময়লা না ঢোকে সেটার জন্য মুখ রুমাল, গামছা, বা শার্ট বা কোন কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।

চট্টগ্রাম নগরের সরকারি মুসলিম উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ভূমিকম্প সচেতনতা বিষয়ক মহড়া
ছবি: জুয়েল শীল

আফটার শক বা বড় ভূমিকম্পের পরে ছোট ছোট ভূমিকম্প ঘটে থাকে। তাঁর জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

যদি সম্ভব হয় হুইসেল বাঁশি সঙ্গে রাখা উচিত। কারণ ভূমিকম্পে কোন ভবনের নিচে আটকে পড়লে জোর জোরে আওয়াজ না করে বাঁশি বাজিয়ে সংকেত দিতে হবে যে ভবনে কেউ আটকে আছে।

কোন ভবনে এ থাকলে যতক্ষণ ভূমিকম্প হবে ততক্ষণ নড়চড় করা যাবে না বা ভবন থেকে বের হওয়ার চেষ্টা না করা।, ভূমিকম্প থেমে গেলে বের হওয়ার চেষ্টা করতে হবে ।

ভূমিকম্প থেমে গেলেই কিন্তু বিপদ কেটে যায় না, ভূমিকম্পের পরে আফটার শক হতে পারে, যার মানে কিছুক্ষণ পর পর ভূমি আবার কেঁপে ওঠে।

কেউ যদি কোন গাড়িতে বা যানবাহনে অবস্থান করে তবে দ্রুত সেখান থেকে নেমে যেতে হবে এবং সেই গাড়ি থেকে যতটা দূরে পারা যায় এমন কোন ফাঁকা চলে যেতে হবে।

ভূমিকম্পের পর কোনো ধরনের দাহ্য বস্তু জ্বালানো যাবে না। যেমন ম্যাচ, লাইটার ইত্যাদি। এমনকি ভূমিকম্পের পর কোন ইলেকট্রিক সুইচ জ্বালানো যাবে না।

ভূমিকম্পের সময় কোন ভাবেই লিফট ব্যবহার করা যাবে না। এমন কী ভূমিকম্পের পরে লিফট না ব্যবহার করাই ভালো।

আরও পড়ুন

ভূমিকম্পের পরে যা করতে হবে বা যা করা যাবে না

বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও ফার্স্ট এইড বক্স সংরক্ষণ করে রাখা।

গুজবে বিশ্বাস না করা ও গুজব না ছড়ানো।

ভূমিকম্প থেমে গেলেই কিন্তু বিপদ কেটে যায় না, ভূমিকম্পের পরে আফটার শক হতে পারে, যার মানে কিছুক্ষণ পর পর ভূমি আবার কেঁপে ওঠে। এগুলো বিপজ্জনক হয়। ভূমিকম্পের পর দ্রুত ঘরে ঢুকে কোন কিছু বের না করার চেষ্টা করা।

ভূমিকম্পের পর পারতপক্ষে কোনো ইলেকট্রনিক যন্ত্র না চালানো।

খুব সাবধানে দরজা বা জানালা খোলা। কারণ ভারী কোনো জিনিস বা ধ্বংসস্তূপ দরজা বা জানালায় আটকে থাকতে পারে।

ভূমিকম্পের পর কোথাও আটকে গেলে সাহায্যের জন্য জোর জোরে আওয়াজ না করা। কারণ এতে মুখে অনেক ধুলা ও ময়লা ঢুকে যেতে পারে।

ভূমিকম্প
প্রতীকী ছবি

ভূমিকম্পের সময় যে জিনিসগুলো প্রয়োজন হয়

ব্যাটারি টর্চ, সাথে অতিরিক্ত ব্যাটারি

ব্যাটারি চালিত রেডিও

ফার্স্ট এইড বক্স

শুকনো খাবার

ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগ ও সে ব্যাগে রাখা মোমবাতি ও ম্যাচ

চাকু

ভূমিকম্প থেমে গেলেই কিন্তু বিপদ কেটে যায় না, ভূমিকম্পের পরে আফটার শক হতে পারে, যার মানে কিছুক্ষণ পর পর ভূমি আবার কেঁপে ওঠে।

ক্লোরিন ট্যাবলেট

প্রয়োজনীয় ওষুধ

নগদ টাকা

ক্রেডিট কার্ড থাকলে ক্রেডিট কার্ড

মোটা রশি

এমন সব জুতা যা পিছলে যায় না। সাধারণত জাতীয় জুতা পড়ে ভূমিকম্পের পর ঘোরাফেরা করা উচিত।

ভূমিকম্পে অনেক সময় রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে কারণে সরকারি বা ত্রাণ সংস্থার সাহায্য আসতে সময় লাগতে পারে। এই সময় নিজেরা এক হয়ে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত একে অন্যের পাশে থাকলে বিপদ কমে আসে। সে সময় পানি, খাদ্য ইত্যাদি রেশনিং করতে হয়, মানে বেশি বেশি খরচ না করে হিসেব করে ব্যবহার করা ও প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করা।

আরও পড়ুন