বেলুনটি ওঠাতে পুকুরে নেমে পড়লাম
অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ায় সেদিন বিকেলে মা ও আফিয়া খালামণিসহ (যিনি আমাকে দেখাশোনা করেন ও স্কুলে নিয়ে যান) আমরা রংপুর থেকে নানুবাড়ি মিঠাপুকুর যাই। বাবাও অফিস শেষে নানুবাড়ি চলে আসেন। পরদিন শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে নানুবাড়ি থেকে কিছুটা দূরে আমি, আফিয়া খালামণি, মুয়াজ ভাইয়াসহ (আমার তিন বছরের খালাতো ভাই) আমরা তিনজন প্রতিবেশী মুবিনা আপুর বাড়ি যাই।
মুবিনা আপুর বাড়ি থেকে নানুবাড়ি ফেরার পথে রাস্তার পাশেই ছিল একটি বড় পুকুর। আমার হাতে ছিল একটি বেলুন। বেলুনটি নিয়ে আমি খেলতে খেলতে সবার আগে নানুবাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ বেলুনটি রাস্তার পাশের পুকুরে পড়ে গেল। আমিও সাতপাঁচ না ভেবে বেলুনটি ওঠাতে পুকুরে নেমে পড়লাম। বেলুনটি ধরতে আমি বুকসমান পানিতে নেমেছিলাম (আমি সাঁতার জানি না)। রাস্তা দিয়ে দুটি ছেলে যাচ্ছিল। তারা আমাকে পানি থেকে টেনে তোলে এবং বেলুনটিও তুলে দেয়।
আফিয়া খালামণি ও মুয়াজ ভাইয়া একটু দূরে ছিল। আফিয়া খালামণি ‘নেমো না, নেমো না’ বলে চিৎকার করছিলেন, তবু আমি তাঁর কথা না বুঝে পুকুরে নেমেছিলাম। ছেলে দুটি না থাকলে কী অবস্থা যে হতো, ভাবতেই গা শিউরে ওঠে। ভাগ্যিস বেঁচে গেছি!
বর্ষাকালে কত শিশু যে পুকুরে ডুবে মারা যায়। এরপর নানু বাসায় এসে আমার ভেজা কাপড় দেখে ও ঘটনা শুনে সবাই আমাকে বকাবকি করে।
লেখক: শিক্ষার্থী, প্রথম শ্রেণি, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর