ঋতুপর্ণার গোল মানেই বাংলাদেশের জয়
আবারও ঋতুপর্ণা চাকমার গোলে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় ম্যাচে তারা মিয়ানমারকে হারিয়েছে ২-১ গোলে। দুটি গোলই করেছেন ঋতুপর্ণা চাকমা।
২০২৪ সালেও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জয়সূচক গোল করেছিলেন ঋতুপর্ণা চাকমা। তাঁর বাঁ পায়ের দুর্দান্ত গোলে স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ১-১ সমতা ছিল খেলায়। ৮১ মিনিটে ঋতুপর্ণার দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের জয় নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সানজিদা-ঋতুপর্ণাদের দল।
ঋতুপর্ণার জন্ম রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের দুর্গম গ্রাম মগাছড়িতে। ঋতুরা চার বোন। একমাত্র ভাই তিন বছর আগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। তিন বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। মা একা। ফুটবল থেকে আয় করা ঋতুপর্ণার অর্থ কিছুটা সচ্ছলতার মুখ দেখিয়েছে।
এবার এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে নিজেদের প্রথম ম্যাচেও জিতেছিল বাংলাদেশ। র্যাঙ্কিংয়ে ৩৬ ধাপ এগিয়ে থাকা বাহরাইনকে ৭-০ গোলে হারায় পিটার বাটলারের দল। আজ মিয়ানমারের বিপক্ষে ম্যাচটি খুব গুরত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশের জন্য। মিয়ানমার হেরে যাওয়ায় ‘সি’ গ্রুপে থাকা বাংলাদেশের পয়েন্ট হলো ৬। ৫ জুলাই গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ঋতুপর্ণাদের জন্য ম্যাচটি সহজই হওয়ার কথা। আগের ম্যাচে মিয়ানমারের কাছেই ৮ গোলে হেরেছিল তুর্কমেনিস্তান। তাদের বিপক্ষে ম্যাচটি জিতলে তো কথাই নেই, ড্র করলেও এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠে যাবে বাংলাদেশ।
ঋতুপর্ণার জন্ম রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের দুর্গম গ্রাম মগাছড়িতে। ঋতুরা চার বোন। একমাত্র ভাই তিন বছর আগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। তিন বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। মা একা। ফুটবল থেকে আয় করা ঋতুপর্ণার অর্থ কিছুটা সচ্ছলতার মুখ দেখিয়েছে। যদিও এখনও সংগ্রাম করে চলছেন ঋতুপর্ণার মা ভূজোপতি চাকমা। সাফ জিতে আসার পর নিজের সাংসারিক অবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি ঋতুর।
খুব যে পরিবর্তন হয়েছে, তা নয়, তবে কিছুটা আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে, এটা ঠিক। পরিবারকে এখন আরও বেশি করে আর্থিক সহায়তা করতে পারছি। মায়ের পর পরিবারের উপার্জনকারী আমিই। আমার আয়ে মায়ের হয়তো কিছুটা আরাম হয়।
গত বছর কিশোর আলোকে ঋতু বলেছিলেন, ‘খুব যে পরিবর্তন হয়েছে, তা নয়, তবে কিছুটা আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে, এটা ঠিক। পরিবারকে এখন আরও বেশি করে আর্থিক সহায়তা করতে পারছি। মায়ের পর পরিবারের উপার্জনকারী আমিই। আমার আয়ে মায়ের হয়তো কিছুটা আরাম হয়।’২০১৫ সালে ক্যানসারের মারা যান ঋতুপর্ণার বাবা বরজ বাঁশি চাকমা। বাবার অণুপ্রেরণায় ফুটবলে এসেছেন ঋতুপর্ণা। পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে পড়ছেন এই তারকা ফুটবলার।
ঋতুপর্ণা আর বাংলাদেশ দলের এখন একটাই লক্ষ্য—এএফসি এশিয়ান কাপে জায়গা করে নেওয়া। মর্যাদপূর্ণ এই টুর্নামেন্টে কখনোই সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। আগামী বছরের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে টুর্নামেন্টটির ২১ তম আসর। এর এক ম্যাচের অপেক্ষা। তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জিতেই বাংলাদেশ নিশ্চিত করবে অস্ট্রেলিয়ার টিকিট—এই আশা করতেই পারে বাংলাদেশের মানুষ।