এ কেমন আইন? (প্রথম পর্ব)

সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে অদ্ভুত সব আইন। এমন সব বিষয়ের জন্য তুমি শাস্তি পেতে পারো, যা হয়তো তুমি কল্পনাও করোনি।

সিঙ্গাপুরে রাস্তায় চুইংগাম চিবানো আইনত অপরাধ!
অলংকরণ: সব্যসাচী চাকমা
  • মনে করো তুমি রাস্তা দিয়ে হাঁটছ। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ পকেটে হাত দিয়ে পেয়ে গেলে সকালেই কেনা চুইংগামটা। সারা দিন ক্লাস, স্যারের লেকচারের চাপে খাওয়ার সুযোগই পাওনি আর। প্যাকেটটা খুলে মুখে দিয়ে চিবুতে শুরু করলে তুমি। ব্যস, সঙ্গে সঙ্গে অপরাধী হয়ে গেলে তুমি (বলা যায় না, মাথার ভেতর ‘পোলা ও পোলা তুই অপরাধী রে...’ এই গানও বেজে উঠতে পারে) অস্বাভাবিক লাগছে? কিন্তু সিঙ্গাপুরে এই ব্যাপারটিই বেশ স্বাভাবিক। সেখানে রাস্তায় চুইংগাম চিবানো আইনত অপরাধ! যার জন্য তোমাকে গুনতে হবে ৫০০ থেকে ২ হাজার ডলার জরিমানা!

  • চুইংগাম চিবানো যে অপরাধ তা জানে সিঙ্গাপুরের অধিবাসীরা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের অপরাধীদের কথাই নাহয় ভাবো একবার। বেচারারা যে অপরাধই করতে যাক না কেন, তার কথা ২৪ ঘণ্টা আগেই পুলিশকে মৌখিক কিংবা লিখিতভাবে তা জানাতে হবে। না জানালেই শাস্তি! বলেকয়ে অপরাধ করতে যাবেই বা কে?

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের অপরাধীরা যে অপরাধই করতে যাক না কেন, তার কথা ২৪ ঘণ্টা আগেই পুলিশকে তা জানাতে হবে।
অলংকরণ: সব্যসাচী চাকমা
  • গ্রামের বাড়িতে গেলে পুকুরে প্রায়ই মাছটাছ ধরেছ বড়শি দিয়ে। সাধারণত পুকুরপাড়ে বসেই মাছ ধরে সবাই, কেউ হয়তো নৌকায় বসেও ধরতে পারে। কারও হয়তো মনে হতে পারে, ‘আচ্ছা, গাছে উঠে মাছ ধরলে কেমন হয়?’ কিন্তু জিরাফের গলায় ঝুলতে ঝুলতে কাতলা মাছ ধরার কথা কি কল্পনায় আসবে কারও? কে জানে, শিকাগোর মানুষজন হয়তো এ রকম চিন্তা করত খুব, হয়তো জিরাফ ভাড়াই করে বসত মাছ ধরার জন্য। তা না হলে শিকাগোতে কেন জিরাফের গলা ঝুলে মাছ ধরা নিষিদ্ধ হবে? সত্যি সত্যি শিকাগোতে এই আইনটা আছে কিন্তু!

শিকাগোতে জিরাফের গলা ঝুলে মাছ ধরা নিষিদ্ধ।
অলংকরণ: সব্যসাচী চাকমা
  • ধরো, শনিবার তুমি যখন স্কুল থেকে ফিরছিলে, মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছিল তখন। সুয্যি মামাও ওঠেননি সেদিন। রোববার সকাল থেকেই কঠিন রোদ। ভাবলে, চট করে স্কুল ড্রেসটা শুকিয়ে নেওয়া যাক। খবরদার! পৃথিবীর আর যেখানেই ওই কাজটা করো না কেন, ভুলেও সুইজারল্যান্ডে করতে যেয়ো না। সেখানে রোববার দিন দড়িতে ঝুলিয়ে কাপড় শুকাতে দেওয়া নিষেধ।

সুইজারল্যান্ডে রোববার দিন দড়িতে ঝুলিয়ে কাপড় শুকাতে দেওয়া নিষেধ।
অলংকরণ: সব্যসাচী চাকমা
  • দক্ষিণ কোরিয়ার এই আইনটাও বেশ মজার। ট্রাফিক পুলিশ আংকেলদের খুব বিপদ সেখানে। ধরো, আশপাশটা দেখে একটু ঘুষ খেয়ে আইন ভঙ্গকারী কোনো গাড়ির চালককে ছেড়ে দিল ট্রাফিক। এভাবে সারা দিনে পকেটটা বেশ ভারীই হলো তার। কিন্তু কোনো লাভ নেই, দিন শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সব ট্রাফিককে রিপোর্ট করতে হয়। কে কত টাকা ঘুষ খেয়েছে তার রিপোর্ট! আর কি ঘুষ খাওয়া যায়?

দিন শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সব ট্রাফিককে রিপোর্ট করতে হয়। কে কত টাকা ঘুষ খেয়েছে তার রিপোর্ট!
অলংকরণ: সব্যসাচী চাকমা
আরও পড়ুন