আবিষ্কারের নেশায়

জয়, বিজ্ঞানের জয়।

প্রযুক্তি-জগতের অমোঘ বিস্ময়।

প্রস্তর-আগুন-পানি-বিদ্যুতের ত্রাস-

জয় করে বিজ্ঞান শঙ্কা করে নাশ।

মানুষের ভিড় থেকে উঠে আসে বীর,

বিজ্ঞানের সাহায্যে গড়ে তারা নীড়,

পাকা করে পৃথিবীতে আপন অবস্থান;

জীবনের স্বচ্ছন্দ বিজ্ঞানের দান।

এই হলো অ্যানিমে ‘ডক্টর স্টোন’-এর মূলকথা। ইচ্ছা হলে বাকিটুকু পড়া বাদ দিয়ে চট করে দেখতে বসে যেতে পারো এখনই। আর যদি মনে হয়, আরেকটু ধারণা নিতে চাও, তাহলে পড়তে থাকো।

ঘটনার শুরু এক আধুনিক পৃথিবীতে, যেখানে বিজ্ঞান–প্রযুক্তির ছোঁয়া অনায়াস করেছে জনজীবন। আসছে একটা নিয়মিত নিস্তরঙ্গ সমাজ। গল্পের মূল নায়ক সেনকুর বাস সেখানেই। ছেলেটির বাবা মহাকাশবিজ্ঞানে অভিজ্ঞ এক ব্যক্তি, আবার শিক্ষকতাও করে। বাবাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে সেনকুও গবেষণায় উদ্বুদ্ধ হলো শৈশবেই। কিন্তু গবেষণা তো আর এমনি এমনি করা যায় না, তার জন্য চাই উপযুক্ত সরঞ্জাম, একটি মোটামুটি মানের গবেষণাগার। ছেলের আগ্রহ দেখে নিজের গাড়ি বিক্রি করে টাকার জোগান দিল বাবা। তারপর আর সেনকুকে ঠেকায় কে! কোমর বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ল সে। শুরু হয়ে গেল একের পর এক গবেষণা আর আবিষ্কারের জেরবার। এসবে তার নিত্য সঙ্গী—তাইজু। পরে তাইজু দলে টেনে আনে বান্ধবী ইউজুরিহাকে। অবশ্য মেয়েটিকে পছন্দ করায় তাকে কাছাকাছি রাখাই ছিল তাইজুর মূল উদ্দেশ্য।

সেনকুর লক্ষ্য সে একসময় মহাকাশে ভ্রমণ করবে। তার চোখে টেলিস্কোপের শক্তিশালী লেন্সে ধরা দেয় নক্ষত্ররাজির রং-রূপ। সেই যাত্রার সঙ্গীদেরও ঠিক করে রেখেছে সে—ওর সঙ্গে যাবে তাইজু আর ইউজুরিহা। সেই উদ্দেশ্যেই তৈরি হলো একের পর এক গবেষণামূলক রকেট। সেগুলো আকাশে ওড়ে, আবার ভূপাতিতও হয় নিয়মিত। সবই ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু এমন সময় পৃথিবীতে নেমে এল দুর্যোগ। হঠাৎ সবুজ আলোর ঝলকানিতে ধাঁধিয়ে গেল চারপাশ। সব মানুষ তার ফলে বদলে গেল নিরেট পাথরে। তারপর? কেটে গেল ৩৭০০ বছর। হারিয়ে গেল জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তির সব ধারণা। দীর্ঘ অব্যবহার আর পরিচর্যাহীনতায় বিলুপ্ত হয়ে গেল আগের সব নির্মাণ, আবিষ্কার। পৃথিবী তত দিনে ফিরে গেছে প্রায় প্রস্তরযুগে। পশুদের আগ্রাসন জলে-জঙ্গলে। অগ্ন্যুৎপাত, জলোচ্ছ্বাস আর ভূমিধসে বদলে গেছে মানচিত্র। শেওলার স্তর জমেছে ভেঙে পড়া দালানকোঠার দেয়ালে দেয়ালে। মানুষ এখনো সবাই পাথর হয়েই আছে। তারই ভিড়ে জেগে উঠল তাইজু। খুঁজে পেল প্রিয়তমা ইউজুরিহার পাথুরে মূর্তিটাকে, একটা গাছের গুঁড়িতে আটকে থাকা অবস্থায়। আর সেই গাছেই বিশেষ বার্তা লেখা। লেখক, সেনকু। পড়িমরি ছুটল তাইজু বন্ধুর খোঁজে।

আরও পড়ুন

এভাবেই শুরু হয় ডক্টর স্টোনের গল্পকথা। আরও অনেক চরিত্র এলেও সবকিছু এখানে সেনকুকে ঘিরেই। জন্মগত মেধা তার বড় সামর্থ্য। আর সঙ্গে আছে মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসা। যদিও তার কথা কিংবা অভিব্যক্তিতে সেসব স্পষ্ট হয় না। এই আঙ্গিক থেকে লেখক ‘ইনাগাকি’ তাকে কিঞ্চিৎ মুখচোরা হিসেবে তৈরি করেছেন। নিজের সত্যিকারের আবেগ সে লুকিয়ে রাখে কঠোর স্বভাবের মুখোশ পরে। একমাত্র বিজ্ঞানের প্রশ্নেই সে নির্লজ্জ। যখন-তখন যা খুশি তা–ই যাকে খুশি তাঁকে দিয়ে করাতে বিন্দুমাত্র পিছপা হয় না সেনকু, যদি তাতে বিজ্ঞানের কিছুমাত্র সাহায্য হয়।

এদিকে সেনকু যেমন বিজ্ঞানে পটু, তার বন্ধু তাইজু তেমনি পারদর্শী দৈহিক শ্রমসাধ্য কাজগুলোতে। তাই জেগে ওঠার পর তার ঘাড়েই দায়িত্ব পড়ে শিকার করার, ফলমূল সংগ্রহের। বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রবণ কিংবা নির্মাণে শ্রমের কাজটুকুর বেশির ভাগই খুশি মনে করে সে। এমনি করে ভালোই চলছিল। কিন্তু গোল বাধল বান্ধবী ইউজুরিহাকে পাথর থেকে মানুষে রূপান্তর করতে গিয়ে। ঘটনাচক্রে ওরা পড়ল হিংস্র সিংহের কবলে। পালাতে পালাতে মরিয়া হয়ে যখন ওদের প্রাণ যায় যায়, ঠিক তখন দৃষ্টি আটকে গেল এক মূর্তির ওপর। দেখেই চিনতে পারল ওরা। সেই ৩ হাজার ৭০০ বছর আগের পৃথিবীতে সেরা লড়াকু হিসেবে বিখ্যাত ছিল এই কিশোর। ওরা বাজি ধরল ছেলেটির ওপর। ইউজুরিহাকে তখনই রূপান্তর না করে বরং এই ছেলেটিকে তারা প্রাণ দান করল। ছেলেটির নাম সুকাসা। ছেলেটি ওদের তাৎক্ষণিক বাঁচাল বটে, তবে সমস্যা হলো অন্যত্র। আগেকার পৃথিবীর মানুষদের বর্বরতা দেখে সুকাসা যথেষ্ট তিতিবিরিক্ত ছিল। তাই গণহারে ৭ বিলিয়ন মানুষকে প্রাণদানের বিন্দুমাত্র আগ্রহ তার নেই। বরং সে চায় বেছে বেছে নবীনদের জীবিত করতে। আর শাসক বা শোষকশ্রেণির কাউকে দেখলেই তার মূর্তিটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে উদ্যত হয় সে। এই মতাদর্শে বাদ সাধল সেনকু, সে চায় বিজ্ঞান দিয়ে সবাইকে বাঁচাবে। সবাই মিলে ফিরিয়ে আনবে পুরোনো পৃথিবীর জৌলুশ। আবার আসবে বিজ্ঞাননির্ভর সমাজব্যবস্থা। ফলে জোর হলো সংঘাত। একদিকে বিজ্ঞান আর অন্যদিকে শক্তি। জয় হবে কার? জানতে হলে দেখতে হবে অ্যানিমে ‘ডক্টর স্টোন’।

লড়াইটি মাঝখানে থাকলেও ধারাবাহিকের মূল আকর্ষণের জায়গা হলো বিজ্ঞান। সেনকুর শূন্য থেকে একের পর আবিষ্কার পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম চমৎকারভাবে উদ্বুদ্ধ করে। কী আবিষ্কার করেনি ছেলেটা! প্রথমে রাসায়নিক দ্রবণ, অ্যাসিড থেকে শুরু করে আকরিক, চৌম্বক, বিদ্যুৎ, ময়দা, এমনকি অ্যান্টিবায়োটিক পর্যন্ত আবিষ্কারের পথে হেঁটেছে একে একে। কখনো মানুষকে খাইয়ে মুগ্ধ করেছে। কখনোবা অন্ধকার দূর করে চমকে দিয়েছে। শীতের দিনে হিটার বানিয়ে রেখেছে উষ্ণ। আবার একই সঙ্গে তৈরি করেছে বিলুপ্ত অস্ত্রশস্ত্র। মোটের ওপর সেনকুর একগুঁয়ে বিজ্ঞানচিন্তা, আর অমানুষিক পরিশ্রমে আবিষ্কার করা এক একটি প্রযুক্তি তাদের শক্তি বাড়িয়েছে নিয়মিত। ফলে সুকাসা কিংবা তার দলের সঙ্গে লড়াইয়ের আশঙ্কা সেনকুর মিত্রদের ভিত করলেও তাদের মনোবল একেবারে গুঁড়িয়ে দিতে পারেনি।

২০১৭ থেকে ২০২২ পর্যন্ত জাপানিজ শৌনেন-জাম্প পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রকাশিত এই মাঙ্গাটি লেখক ‘রিইচিরও ইনাগাকি’র চমৎকার ব্যতিক্রমী এক সৃষ্টি। ইতিপূর্বে তিনি বিখ্যাত হন আইশিল্ড ২১ সিরিজটি লিখে। ওই সিরিজে তাঁর সঙ্গী হয়েছিলেন কিংবদন্তি আঁকিয়ে ইউস্কে মুরাতা; যাঁর আঁকায় তৈরি ওয়ান-পাঞ্চ-ম্যান সিরিজটি সম্পর্কে তোমাদের ইতিপূর্বে জানিয়েছি। তবে ডক্টর স্টোন সিরিজটি আঁকার দায়িত্ব নিয়েছেন আরেক কিংবদন্তি কোরিয়ান আঁকিয়ে ‘বোইচি’। তাঁর আরেকটি সিরিজ ইতিপূর্বে পড়েছিলাম—সান-কেন-রক। তখন থেকেই আমি ভদ্রলোকের আঁকার ভক্ত; যদিও ওই সিরিজটিতে শেষ পর্যন্ত গিয়ে তৃপ্তিদায়ক সমাপ্তি টানতে পারেননি। তবে তোমরা যারা ওয়ান-পিসভক্ত তারা বোইচির আঁকায় ওয়ান-পিস গল্পজগতের অন্যতম আলোচিত চরিত্র ‘পোর্টেগাস-ডি-এইস’-এর ‘ওয়ান পিস এপিসোড এ’ কাহিনিটি পড়ে দেখতে পারো। এমন দুর্দান্ত এঁকেছেন, দেখে একবারেরও জন্য হলেও মনে হবে মূল সিরিজের কিছুটা উনি আঁকলে মন্দ হতো না!

ওই দেখো! স্মৃতিচারণা করতে করতে প্রসঙ্গ থেকে সরে যাচ্ছি! ফিরছি দাঁড়াও। ডক্টর স্টোনের গল্প আধুনিক যুগে, অথচ একই সঙ্গে তা প্রস্তর যুগেরও কাহিনি। যেখানে মানুষ লড়াই করছে প্রতিকূলতা আর দুর্যোগের সঙ্গে। সামান্য অসুস্থতা এখানে বড় বিপদ। এ সময়ের মানুষগুলো প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রায় অজ্ঞ। সেনকুর বাইরে একমাত্র ‘ক্রোম’কেই যা একটু বিজ্ঞানমনস্ক হিসেবে দেখা যায়। তবে তার বুদ্ধিও খোলে মূলত সেনকুর গবেষণায় সহকারীর কাজ করতে করতেই। এ ছাড়া দুটি বিশেষ চরিত্র হচ্ছে ‘কিনরো’ আর ‘গিনরো’। এদের মধ্যে কিনরো নীতিমান ও লড়াকু হলেও গিনরো ভিতু ফাঁকিবাজ, যদিও প্রয়োজনে দুজনকেই দেখা যায় অস্ত্র হাতে। আবার মাঝেমধ্যেই তারা নানা কর্মকাণ্ডে হাসির পাত্রও হয়ে ওঠে। আছে ‘সুইকা’ নামের এক শিশু। মেয়েটি চোখে ভালো দেখতে পায় না, কিন্তু তারপরও গুপ্তচরের দক্ষতায় জোগাড় করতে পারে খবর। গল্পের নানান পর্যায়ে তাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। আরও আছে এক নির্মাতা বৃদ্ধ। যে না থাকলে সেনকুর গবেষণা হয়তো আরও কয়েক দশক পিছিয়ে যেত অনায়াসে।

আরও পড়ুন

অন্যদিকে সুকাসা বাহিনীও কম নয়। সেখানে আছে জাদুকর, যোদ্ধা, সাংবাদিক, পুলিশ, পালোয়ান কিংবা সার্কাস কর্মীদের মতো দৈহিক কসরতে পারদর্শী মানুষ। এরা সবাই সুকাসার ক্ষমতায় প্রভাবিত এবং নিজেদের আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে সচেষ্ট। নানান সময়ে নিজেদের দল নিয়ে এরা চড়াও হয়েছে সেনকুদের ওপর। কখনো জিতেছে, কখনো হেরেছে। কিন্তু যার যার লক্ষ্যে ছিল স্থির।

ঘটনার মারপ্যাঁচ আর গতিপ্রকৃতি নিয়ে অনেক কিছুই বলা যেত, কিন্তু এখনই আর বলছি না। মূলত পুরোটা আমারও দেখা হয়নি। দুটো সিজন দেখেছি। বাকিগুলো এখনো দেখা চলছে। তা ছাড়া সিরিজটি এখনো সম্প্রচার শেষ হয়নি, নিয়মিত বিরতিতে তা নির্মিত হচ্ছে। যেহেতু মাঙ্গার কাহিনি খতম হয়েছে, আশা করা যায় অ্যানিমেটিও নির্বিঘ্নেই শেষ হবে একদিন। সুতরাং ঘাবড়ানোর কিছু নেই।

ধারাবাহিকটির কিছু ত্রুটি কিংবা অসংগতির কথা অবশ্য তোমাদের জানাতে ইচ্ছা হচ্ছে; সেইগুলো বলছি। যেমন ধরো, দুটি সিজন ধরে খুব বেশি হিংস্র প্রাণীর মোকাবিলা করতে হয়নি সেনকু বাহিনীর। ওই সিংহের সঙ্গে শুরুতে একবার মোকাবিলার পর ভয়ানক প্রাণীরা তাদের একপ্রকার এড়িয়েই চলেছে। আবার এমন নয় যে সেনকুর ঘাঁটি থেকে সুকাসাদের আস্তানা বহুদূরে; তাই গল্পের এক পর্যায়ে এক পক্ষের আরেক পক্ষকে আক্রমণ করার জন্য শীত পেরিয়ে গ্রীষ্ম পর্যন্ত অপেক্ষা করার ব্যাপারটাও খানিক অযৌক্তিক অনুভূত হয়। আর কিছু চরিত্রের কণ্ঠশিল্পী এত চেঁচিয়ে কথা বলে যে বড্ড বিরক্ত লাগে। এ ছাড়া বিজ্ঞানের অনেক গবেষণা সঠিক দেখানো হলেও সব কটিতে কিন্তু আবার শতভাগ বিশ্বাস করে বোসো না। কিছু অতিকল্পনাও এতে মিশেল আছে। যেমনটা থাকে কোনো চমৎকার বিজ্ঞান কল্পকাহিনিতে।

তবে এসব শুনে পিছিয়ে পড়ার কিছু নেই। মোটের ওপর গল্পটা ভালোই। তা ছাড়া এই গতানুগতিকতার যুগে, যেখানে গড়পড়তায় বহু অ্যানিমেই হয় ফ্যান সার্ভিস অথবা ই-সেকাইয়ের চক্করে পড়ে হাঁসফাঁস করছে, সেখানে ডক্টর স্টোন খানিক সুবাতাসের মতোই। এখানে যৌক্তিক আর অযৌক্তিকতার কিছু দ্বন্দ্ব আছে, যা তোমাদের ভাবাবে। যদি ভিন্ন আঙ্গিক থেকে চরিত্রগুলোর কর্মকাণ্ডকে যাচাই করো, দেখবে সবার দিকেই কিছু না কিছু মোক্ষম কারণ রয়েছে নিজের মতাদর্শ নির্ধারণের ক্ষেত্রে। যা হয়তো তোমার–আমার মতাদর্শের সঙ্গে খাপ খায় কিংবা খায় না। আর বাড়তি হিসেবে আছে হাস্যরস। একেবারে শুরুতে একটু ঘাটতি থাকলেও কাহিনি যত এগিয়েছে, হাসিও এসেছে নিয়মিত। আমার তো এখনো ওই দৃশ্যগুলো ভাবলে হাসি পায়, যখন সেনকু জেগে উঠে বিজ্ঞানকে নানাভাবে প্রয়োগের চেষ্টা করছিল আর তা দেখে কৌতূহলী বাঁদরের দল নিজেদের মধ্যে জল্পনাকল্পনা করে মন্তব্য ছুড়ছিল নিয়মিত।

সবশেষে বলব, যদি বিজ্ঞান ভালো লাগে, তবে সিরিজটি তোমার জন্য। আর যদি বিজ্ঞান তোমাদের আকর্ষণ না–ও করে, তবু অনুরোধ থাকবে অন্তত কয়েকটা পর্ব দেখে তারপর সিদ্ধান্ত নাও। কারণ, মানুষের প্রকৃতিকে জয় করার যে অধ্যায় হাজার হাজার বছরের ইতিহাসে লেখা রয়েছে, তা খুব সংক্ষেপে ও প্রাসঙ্গিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে এখানে। এসব ইতিহাসের কিছুটা অনুভব করা জরুরি। কারণ, তাহলে বর্তমানের আবিষ্কার বা প্রযুক্তিগুলোর পিছে যে অক্লান্ত পরিশ্রম আর অগণিত বিজ্ঞানীর ভাবনাচিন্তাগুলো রয়েছে, তার সম্পর্কে কিছুটা হলেও তোমাদের সচেতনতা বাড়বে। অন্তত আমার বেড়েছিল। হয়তো তোমরা বুঝতে পারবে গৎবাঁধা শিক্ষার বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগত আগ্রহ থেকে যা জানা যায়, তা-ই কাজে আসে উপযুক্ত সময়ে। আমাদের এই যে অন্ধের মতো পুস্তকপাঠ, পরীক্ষায় হুড়োহুড়ি করে ঝাঁপিয়ে পড়া এবং অচিরেই সেসব ভুলে যাওয়া—এর বাইরেও স্বতঃস্ফূর্ত জ্ঞান অর্জনের একটা মসৃণ পথ রয়েছে। যেখানে হাঁটা এই মুক্ত তথ্যের যুগে একেবারেই অসম্ভব নয়। যদি সেনকু পারে, তবে তোমরাও পারবে। নাহ্‌, তার মতো ৩৭০০ বছরের প্রতিটি সেকেন্ড গুনে তা স্মরণে রাখার প্রয়োজন নেই, শুধু নিজের আগ্রহে শিখতে পারার অভ্যাসটুকু থাকলেই দিব্যি চলে যাবে।

আরও পড়ুন