বিটিএস কি ভক্তদের মানসিক সুস্থতায় অবদান রাখে? গবেষণা কী বলছে
মন খারাপ হলে অনেকেই গান শোনেন। কিছু গান শুনলে মনে হয়, এগুলো যেন আমার জন্যই লেখা হয়েছে। এগুলো আমাদের জীবনের গল্প বলে। কে- পপ ভক্তরা তাঁদের প্রিয় শিল্পীদের গানগুলোর সঙ্গে নিজেদের জীবনের মিল যেন একটু বেশিই খুঁজে পান। বিশেষ করে বিটিএসের গানগুলো নাকি ভক্তদের জীবনই পাল্টে দিতে পারে!
অদ্ভুত শোনাচ্ছে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এমনই দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিটিএসের গান নিছকই বিনোদনের মাধ্যম নয়। এই গানগুলো মানসিক স্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতার জন্য উপকারী।
সম্প্রতি ‘জার্নাল দ্য সোশ্যালে’ এই গবেষণা প্রকাশিত হয়। গবেষণাটি পরিচালনা করা হয় ‘আর্মি ইন্দোনেশিয়া’ নামে একটি দলের ওপর। ‘আর্মি ইন্দোনেশিয়া’ হলো বিটিএসের ইন্দোনেশিয়ান ফ্যানদের নিয়ে গঠিত বড় একটি গ্রুপ। এই গবেষণা করতে কারেকশনাল কোয়ানটিটেটিভ অ্যাপ্রোচ প্রয়োগ করা হয়েছিল। এটি একটি সংখ্যাভিত্তিক গবেষণা পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে দুটি বিষয় একে অপরের সঙ্গে কতটা সম্পর্কিত, তা অনুসন্ধান করা হয়। ২০২৪ সালের এই গবেষণায় অনুসন্ধান করা হয়েছে, ভক্তরা বিটিএসের গান শোনার জন্য যে পরিমাণ সময় ব্যয় করেন, তা তাঁদের মানসিক সুস্থতার (সাইকোলজিক্যাল ওয়েলবিয়িং, সংক্ষেপে পিডব্লিউবি) ওপর প্রভাব ফেলে কি না।
এই গবেষণায় একটি বিষয় লক্ষ করা গেছে, যেসব ভক্তরা বেশি সময় ধরে বিটিএসের গান শুনেছেন, তাঁদের পিডব্লিউবি লেভেল অর্থাৎ মানসিক সুস্থতার মাত্রা তুলনামূলক বেশি। অন্যদিকে, যেসব ভক্তরা তুলনামূলকভাবে কম সময় ধরে বিটিএসের গান শুনেছেন, তাঁদের পিডব্লিউবি লেভেল তুলনামূলক কম।
গবেষণায় দেখা গেছে, আনন্দ, আত্মবিশ্বাস ও আত্মতুষ্টির মতো ইতিবাচক অনুভূতিগুলোর সঙ্গে বিটিএসের গানের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এই গানগুলো বলে, নিজেকে ভালোবাসতে হবে। জীবনে চলার পথে দৃঢ়তা বজায় রাখতে হবে, আশা হারানো যাবে না। বিটিএসের বেশির ভাগ গানেই শ্রোতাদের জন্য এই বার্তাগুলো থাকে। এর ফলে গানগুলো ভক্তদেরকে অনুপ্রেরণা জোগায়। ব্যক্তিগত সংকটের সময়গুলোতে গানগুলো থেকে শ্রোতারা দিকনির্দেশনা খুঁজে পান।
গবেষণাটির একজন অংশগ্রহণকারীর ভাষায়—বিটিএস সত্যি সত্যি তাঁর মনের কথা বুঝতে পারে।
গবেষণা বলা হয়েছে, ‘বিটিএসের গান শোনার সময়টুকুতে ভক্তদের মানসিক সুস্থতায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ অবদান রাখে’। সংখ্যাটি সামান্য মনে হতে পারে। তবে গান শোনা মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর পরিমাপযোগ্য প্রভাব ফেলে, গবেষকেরা এই বিষয়ে জোর দিয়েছেন।
ভক্তরা জানিয়েছেন, মন ভালো করা ছাড়াও বিটিএস আরও কিছু ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে। যেমন নিজেকে নিজের মতো করেই গ্রহণ করা, সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করা, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদি।
সূত্র: ইনকয়ারার ডট নেট