রেক্সি নামের এই বিড়ালের ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ার সাত লাখের বেশি

বিশ্বের সবচেয়ে অভিব্যক্তিপূর্ণ বিড়াল রেক্সিবোর পান্ডা

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করে লাইক আর ফলোয়ার বাড়াতে আমাদের অনেকেই প্রচুর চেষ্টা করে। ফিল্টার, অ্যাঙ্গেল আর ক্যাপশন নিয়ে মাথা ঘামানোর পরও দেখা যায়, ফলোয়ার তেমন বাড়ছে না। তবে এখন বেশ কিছু পোষা প্রাণী আছে যাদের ছবি বা ভিডিও পোস্ট করলেই নিমেষেই ভাইরাল হয়ে যায়।

তেমনি একটি পোষা ট্যাবি প্রজাতির বিড়াল সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ বিখ্যাত। বিড়ালটির মুখের অদ্ভুত ভাবের জন্য এটিকে অন্য বিড়াল থেকে আলাদা লাগে। এটি সব ধরনের আবেগ প্রকাশ করতে পারে, যা দেখে মানুষ অবাক হয়। ১০ বছর বয়সী এই তারকা বিড়ালের নাম রেক্সি, যার ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার ৭ লাখের বেশি। এটিকে অনেকেই ‘বিশ্বের সবচেয়ে অভিব্যক্তিপূর্ণ বিড়াল’ বলে ডাকেন।

আরও পড়ুন

রেক্সির জীবনটা সব সময় সহজ ছিল না। রেক্সির একটি বিশেষ শারীরিক অবস্থা রয়েছে। ছোটবেলায় অবহেলা আর পিঠে আঘাতের কারণে এর পেছনের পা দুটি অবশ হয়ে যায়। যার কারণে সে পেছনের পা ব্যবহার করে হাঁটতে পারে না। সাধারণত এমন কোনো বিড়ালকে মানুষ সহজে দত্তক নিতে চায় না। কিন্তু বিড়ালটার বর্তমান মালিক ফটোগ্রাফার দাশা মিনায়েভার একে একটি আশ্রয়কেন্দ্র থেকে দত্তক নেন। তিনি অনলাইনে ছোট বিড়ালছানা রেক্সির ছবি দেখে তাকে দেখতে যান। প্রথম দেখায় পছন্দ হয়ে যায় রেক্সিকে। তখন থেকে ভালোবাসা আর যত্ন দিয়ে বড় করে তোলেন।

রেক্সি তার শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে জয় করে দারুণভাবে চলাফেরা করে। সে সামনের পা দুটির ওপর ভর করে হাঁটতে ও খেলতে ভালোবাসে। যদিও মাঝেমধ্যে একটি গোলাপি রঙের হুইলচেয়ারও ব্যবহার করে। সম্প্রতি এর দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ ধরা পরেছে। কিন্তু এত কিছুর পরও রেক্সি এর প্রাণবন্ত স্বভাব হারায়নি।

আরও পড়ুন
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পোষা প্রাণীদের জন্য দূত হিসেবে কাজ করছে রেক্সি
ছবি: হোলা ওয়েব

রেক্সিকে যা সত্যিই বিশেষ করে তোলে তা হলো এর মানুষের মতো মুখের ভাব করে মনের কথা বোঝানোর ক্ষমতা। এর মুখে দুষ্টু হাসি থেকে শুরু করে নাটকীয় ভাবভঙ্গি সবকিছুই দেখা যায়। মজার বিষয় হলো, রেক্সির মালিক এর এই মজার ভঙ্গিগুলোকে খুব বুদ্ধি করে ছবিতে ও ভিডিওতে তুলে ধরেন। কোনো ছবিতে একে দেখা যায় গম্ভীর মুখে বসে থাকতে। আবার কোনোটিতে দেখা যায় জিব বের করে দুষ্টুমি করতে। এই বৈচিত্র্যময় ছবিগুলো মানুষকে বেশ আকর্ষণ করে। এ জন্য রেক্সিকে ‘জীবন্ত ইমোজি বিড়াল’ বলেও ডাকা হয়। লাখ লাখ মানুষকে রেক্সির এই মুখের ভাবগুলো বেশ আনন্দ দেয়।

রেক্সি শুধু বিনোদনের জন্য এই কাজ করে, তা কিন্তু নয়। সে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পোষা প্রাণীদের জন্য দূত হিসেবে কাজ করছে। ওর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী প্রাণী সম্পর্কে মানুষের যে ভুল ধারণা ছিল, তা ধীরে ধীরে ভাঙতে শুরু করেছে। অনেকেই মনে করেন, এমন একটি প্রাণীর যত্ন নেওয়া অনেক কঠিন। কিন্তু রেক্সির মালিক জানান, রেক্সির মতো একটি বিড়ালের যত্ন নেওয়ার জন্য প্রতিদিন মাত্র ২০ মিনিট অতিরিক্ত সময় লাগে। আর এই সামান্য অতিরিক্ত যত্নের বিনিময়ে সে যে ভালোবাসা আর আনন্দ দেয়, তা অসীম। রেক্সি প্রমাণ করেছে, এই প্রাণীগুলোও হাসতে জানে, খেলতে ভালোবাসে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে। আজও, এই অসাধারণ বিড়ালটি সোশ্যাল মিডিয়ার সবচেয়ে প্রিয় তারকা পোষা প্রাণীদের মধ্যে একটি। শারীরিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও রেক্সির মধ্যে কোনো কষ্ট বা হতাশা নেই।

আরও পড়ুন