সূর্যের চারপাশে পৃথিবীকে অনুসরণ করছে খুব ছোট একটি চাঁদ
আমাদের এই পৃথিবীর একটিই চাঁদ আছে, আকাশের দিকে তাকিয়ে আমরা এমনই জানি। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের চারপাশে শুধু চাঁদ না, অসংখ্য গ্রহাণু ঘুরে বেড়ায়। বহু মহাজাগতিক বস্তু আমাদের চারপাশে আছে। এর মধ্যে কিছু বস্তু পৃথিবীর সঙ্গে এমনভাবে চলে, যেন এগুলো আমাদের সঙ্গী। বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এমনই এক নতুন 'আধা চাঁদ' বা কোয়াসি মুনের সন্ধান পেয়েছেন।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই নতুন গ্রহাণুটির নাম দিয়েছেন '২০২৫ পিএন৭'। এটি সরাসরি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে না, বরং সূর্যের চারপাশে এমন একটি কক্ষপথ অনুসরণ করে, যা দেখে মনে হয় এটি আমাদের গ্রহের সঙ্গে একই পথে ঘুরছে। অনেকটা একই হাইওয়ের দুটি গাড়ির মতো। একটি আরেকটির পেছনে একই গতিতে চলছে।
এই নতুন চাঁদটি আকারে খুব ছোট। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫২ থেকে ১৬০ ফুট হতে পারে। একটি সাধারণ ক্রিকেট পিচের চেয়ে ছোট। টেলিস্কোপের সাহায্যেও একে ভালোভাবে দেখা যায় না। এর সঠিক আকার নিশ্চিতভাবে বলা কঠিন। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এটি হয়তো মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝখানের গ্রহাণু বলয় থেকে এসেছে।
পৃথিবীর এই ক্ষুদ্র সঙ্গীটি কিন্তু আমাদের সঙ্গে সবসময় থাকবে না। জানা গেছে, এটি ১৯৫৭ সাল থেকে পৃথিবীর সঙ্গী হয়েছে। মোট ১২৬ বছর আমাদের সঙ্গে থাকবে। ২০৮৩ সালে এটি আবার নিজের পথে মহাকাশের গভীরে চলে যাবে।
তোমার মনে হতে পারে, এই ছোট গ্রহাণুর খোঁজ পাওয়া নিয়ে বিজ্ঞানীদের এত আগ্রহ কেন? এমন গ্রহাণু তো অনেক আছে। এর কারণ হলো, পৃথিবীর আশেপাশে ঘুরতে থাকা এই গ্রহাণুগুলো আসলে সৌরজগতের ভেতরের ইতিহাসের অংশ বহন করে। এগুলো নিয়ে গবেষণা করলে আমরা সৌরজগতের বিবর্তন নিয়ে অনেক কিছু জানতে পারি।
যেমন বিজ্ঞানীরা কামোওআলেয়া নামের আরেকটি ছোট চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহের জন্য চীনের মহাকাশযান ‘তিয়ানওয়েন-২’ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একইভাবে নতুন আবিষ্কৃত এই চাঁদটিও বিজ্ঞানীদের কাছে একটি মূল্যবান গবেষণাগার বস্তু।
তাই আকাশে তাকিয়ে তুমি এখন ভাবতে পারো, আমাদের চাঁদের বাইরেও আছে আরেকটি চাঁদ, আমাদের মতো সূর্যের চারপাশে ছুটে চলছে।
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস