পশুপাখির প্রতি দয়া করতে শেখায় এই রোবট কুকুর

ওয়ালডগকে এমন করে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্য হলো মন্টেরেতে পশু নির্যাতন বন্ধ করারয়টার্স

মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলীয় শহর মন্টেরের রাস্তায় এখন দেখা মিলছে নতুন এক দৃশ্যের। সেখানে রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলা সাধারণ পথচারীদের সঙ্গে নানা ভঙ্গি প্রকাশ করে কথা বলছে একটি রোবট কুকুর। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় চালিত এই রোবটটির নাম ওয়ালডগ (Waldog)। রোবট এই কুকুরের কাজ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া ছোট থেকে বড় সবাইকে জীবজন্তুর প্রতি ভালোবাসা ও সহানুভূতি দেখাতে শেখানো।

দেখতে বিগল জাতের কুকুরের মতো এই রোবটটি সাধারণ খেলনা কুকুরের চেয়ে অনেক উন্নত। এটি হাঁটে, কথা বলে, দৌড়ায় এবং শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলাও করে। যদিও এর কণ্ঠস্বর যান্ত্রিক, কিন্তু সেটি এত বন্ধুত্বপূর্ণ যে মানুষ সহজেই এর সঙ্গে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। ইন্টারনেটের ব্যবহার করে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে এবং মানুষের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে এআই-এর সাহায্যে।

ওয়ালডগকে এমন করে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্য হলো মন্টেরেতে পশু নির্যাতন বন্ধ করা এবং কল্যাণের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো। রাস্তায় চলার সময় শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে পশুর অধিকার নিয়ে আলোচনা শুরু করে এই রোবট কুকুর। পথচারীদের সঙ্গে চলতে চলতে কথা বলে। কেন প্রাণীদের যত্ন নেওয়া উচিত, এদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা কেন অন্যায় এবং যদি কেউ কোনো পশুকে নির্যাতিত হতে দেখে, তাহলে তার কী করা উচিত, এগুলো বলে। একটি রোবট কুকুরের মুখ থেকে যখন এই বার্তাগুলো আসে, তখন শিশুরা বিশেষ করে খুব সহজে তা গ্রহণ করে।

আরও পড়ুন

সাধারণত পশু সুরক্ষার জন্য পরিচালিত প্রচারণাগুলো অনেক সময় মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়। কিন্তু ওয়ালডগের মতো একটি উদ্ভাবনী প্রযুক্তি যে কারো মনোযোগ আকর্ষণ করে। একটি জরুরী বিষয়কে খেলার ছলে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। এটা শুধু তথ্য সরবরাহ করে এমন না, বরং একটি আবেগের সম্পর্ক তৈরি করে পথচারীদের সঙ্গে। কর্তৃপক্ষ মনে করে, এই রোবটটি বন্ধু হিসেবে মানুষের মনে জায়গা করে নেয়। যা পশুর প্রতি সহানুভূতির ধারণাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।

মন্টেরের ফেডারেল সিনেটর ওয়াল্ডো ফার্নান্দেজ নিজের অর্থায়নে ওয়ালডগ নামের এই রোবটটি কিনেছেন। এটির দাম ৪ হাজার ৮৪ ডলার, যা প্রায় ৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। তিনি নিজেই এর নামকরণ করেছেন নিজের নামে। ওয়াল্ডো ফার্নান্দেজ নিজেকে প্রাণীপ্রেমী হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘এই রোবট কুকুরটি মানুষকে প্রাণীদের প্রতি দয়া ও দায়িত্বশীলতা দেখাতে আরও উৎসাহিত করবে।’

আরও পড়ুন

ওয়ালডগ রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে পরিচালিত হয়। এজন্য একজনকে এর সঙ্গে থাকতে হয়। ফার্নান্দেজ একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বলেছেন, এটি একটি বাস্তব উদ্দেশ্যও পূরণ করবে। যেমন, এটি রাস্তায় আবর্জনা ও গর্ত চিহ্নিত করবে। অন্যান্য পথকুকুরদের চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে। এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানেও রোবট কুকুর ব্যবহার করা যাবে। এমনকি, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো সীমান্তে টহলের জন্যও রোবট কুকুর তৈরির কাজ চলছে।

সূত্র: রয়টার্স

আরও পড়ুন