দ্রুত পড়া শিখে বেশি দিন মনে রাখব যেভাবে

শিশুর পড়াশোনাফাইল ছবি

বছরজুড়ে আমাদের এত এত পড়া! বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞানসহ আরও কত কী! এত পড়ালেখার চাপে পরীক্ষার আগে প্রায়ই মনে হয়, যা পড়েছি সব যেন মাথা থেকে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। চাপ বাড়তে থাকে। পড়াশোনা আরও কঠিন মনে হয়। এই অনুভূতি কিন্তু শুধু তোমার একার নয়, বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরই।

তবে ভাবনার কিছু নেই। কয়েকটি সহজ কৌশল জানা থাকলে পড়াশোনা অনেক সহজ আর মজার হয়ে উঠতে পারে। কৌশলগুলো মোটেও কঠিন নয়। পড়াশোনার সাধারণ ও সহজ কিছু স্মার্ট অভ্যাস বদলে দিতে পারে তোমার শেখার পদ্ধতি। এতে তুমি পড়া শিখতে পারবে দ্রুত এবং তা অনেক দিন মনে রাখতে পারবে। চলো, সেই কৌশলগুলো জেনে নিই।

আরও পড়ুন

পড়ার টেবিল গুছিয়ে রাখ

সবচেয়ে সহজ সমাধান হলো নিজের পড়ার জায়গাটা গুছিয়ে রাখা

সহজে পড়াশোনা করার প্রথম ধাপ হলো, পড়ার জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা। পড়ার টেবিল বইপত্রে ঠাসা থাকলে সহজে বোঝা যায় না যে কোনটা প্রয়োজনীয় আর কোনটা অপ্রয়োজনীয়। এতে সময়ও নষ্ট হয়। তাই সবচেয়ে সহজ সমাধান হলো নিজের পড়ার জায়গাকে গুছিয়ে রাখা। ঘরে নিজের পড়ার জন্য একটা নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করো। সেখানে একটি টেবিল আর চেয়ার থাকতে পারে। যেসব বই তোমার প্রতিদিন দরকার হয়, সেগুলো টেবিলে সাজিয়ে রাখো। অন্যগুলো শেলফে তুলে রাখতে পারো। সঙ্গে একটা ডায়েরি বা ক্যালেন্ডার রাখতে পারো। ডায়েরিতে স্কুলের হোমওয়ার্ক জমা দেওয়ার তারিখ বা পরীক্ষার রুটিন লিখে রাখবে। হোমওয়ার্ক কি দেওয়া হয়েছে, তা–ও লিখে রাখতে পারো। এভাবে চললে এবং গোছানো জায়গায় পড়তে বসলে মনটাও শান্ত থাকবে আর মনোযোগ বাড়বে।

আরও পড়ুন

ক্লাস ফাঁকি দেওয়া যাবে না

নিয়মিত ক্লাসে যেতে হবে। অনেক সময় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া বা একটু মজা করার জন্য আমরা ক্লাস বাদ দিই। ক্লাসে শিক্ষক যখন কোনো বিষয় বুঝিয়ে দেন, তখন তা সরাসরি শুনলে অর্ধেক পড়া ক্লাসেই হয়ে যায়। পরে বাসায় এসে শুধু একবার চোখ বোলালেই বিষয়টা গেঁথে যায় মাথায়। কোনো জরুরি কারণে বা অসুস্থ থাকার কারণে ক্লাস বাদ গেলে পরে শিক্ষকের কাছ থেকে সাহায্য চাইতে লজ্জা পেয়ো না। মনে রাখবে, ক্লাসের পড়া ক্লাসেই শেষ করা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

নোট করার অভ্যাস করো

পড়তে বসে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিজের মতো করে খাতায় লিখে রাখছ কি? অভ্যাসটা কিন্তু দারুণ কাজের। পুরো বই বারবার না পড়ে, পরীক্ষার আগে নিজের হাতে লেখা নোটগুলো পড়লেই পুরো অধ্যায় মনে পড়ে যাবে। শিক্ষক যখন ক্লাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন, সেটাও সঙ্গে সঙ্গে টুকে নাও। যদি নোট বানাতে ইচ্ছা না করে, তাহলে একটা হাইলাইটার পেন দিয়ে বইয়ের জরুরি লাইনগুলো দাগিয়ে রাখতে পারো। এতে রিভিশন দেওয়ার সময় অনেক সুবিধা হবে।

আরও পড়ুন

প্রশ্ন করতে হবে

যে শিক্ষার্থী প্রশ্ন করতে ভালোবাসে, তার শেখার আগ্রহও বেশি। কোনো কিছু না বুঝে মুখস্থ করার থেকে প্রশ্ন করে বিষয়টা বুঝে নেওয়া অনেক ভালো। তোমার মনে যখনই কোনো প্রশ্ন আসবে, সেটা শিক্ষক বা মা-বাবাকে জিজ্ঞেস করতে দ্বিধা করবে না। কেন এমন হলো? কীভাবে এটা কাজ করে? এসব প্রশ্নই তোমার চিন্তার জগৎকে বড় করে তুলবে। যেখানে বুঝবে না, সেখানেই প্রশ্ন করবে। কারণ, বুঝে পড়লে সেই পড়াটা তুমি আর সহজে ভুলবে না।

পড়ার জন্য রুটিন বানাও

পড়াশোনার জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা বা রুটিন তৈরি করাও খুব জরুরি। সপ্তাহের কোন দিন কোন বিষয় পড়বে, কখন হোমওয়ার্ক করবে আর কখন একটু বিশ্রাম নেবে, তা একটা ছক বানিয়ে নিতে পারো। দিন শেষে মিলিয়ে দেখ, পরিকল্পনা অনুযায়ী কতটা এগোতে পারলে। যদি কোনো কাজ বাকি থেকে যায়, সেটা পরের দিনের রুটিনে যোগ করে নাও। পরিকল্পনাটা তোমাকে সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে শেখাবে।

আরও পড়ুন

শেষের আগে

অনেকগুলো বই থেকে না পড়ে নির্দিষ্ট কয়েকটি ভালো বই বারবার পড়া ভালো। দশটা বই থেকে একবার করে পড়ার চেয়ে একটা ভালো বই দশবার পড়া অনেক বেশি কাজের। এতে তোমার ধারণা আরও স্পষ্ট হবে এবং মনে রাখতেও সুবিধা হবে।

এই সহজ কৌশলগুলো তোমার প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিণত করতে পারলে পড়া শিখতে পারবে দ্রুত। এগুলো পড়াশোনার স্মার্ট উপায়। তখন আর পড়াশোনা করতে ভয় লাগবে না। বরং তুমি শেখার আনন্দে মেতে উঠবে। তাই চাপ না নিয়ে, স্মার্ট উপায়ে পড়াশোনা করো আর সাফল্যের পথে এগিয়ে যাও।

সূত্র: তৈয়ারি জিত কি ডটইন

আরও পড়ুন