এই ৬টি লক্ষণ দেখলেই বুঝবে এটি বিড়াল

বিড়ালের মধ্যে লুকিয়ে আছে বনের রাজা বাঘ বা সিংহের মতো ভয়ংকর শিকারি প্রাণীর বৈশিষ্ট্যএআই আর্ট

তোমার বাড়ির পোষা বিড়ালটাকে ভালোভাবে দেখেছ কখনো? নরম তুলতুলে শরীর। আদর করে দিলে কেমন গরগর করে শব্দ করে। কিন্তু জানো কি, এই ছোট্ট বিড়ালের মধ্যে লুকিয়ে আছে বনের রাজা বাঘ বা সিংহের মতো ভয়ংকর শিকারি প্রাণীর বৈশিষ্ট্য? শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি—বাঘ, সিংহ, চিতা বা জাগুয়ার আসলে বিড়ালজাতীয় প্রাণী। প্রত্যেকের আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকলেও এরা একই পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। চলো, ছয়টি বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে এদের আরও ভালোভাবে চেনা যাক—

১. রাতের অন্ধকারেও পরিষ্কার দেখতে পায়

রাতে যখন সব অন্ধকার থাকে, তখনো বিড়াল সবকিছু স্পষ্ট দেখতে পায়। ওদের চোখ রাতে চকচক করে। কারণ, ওরা অন্ধকারে আমাদের চেয়ে ছয় গুণ ভালো দেখতে পায়। এটা ওদের একটা সুপারপাওয়ার। এ জন্য বিড়ালজাতীয় প্রাণীরা রাতের অন্ধকারে শিকার করে। তখন অন্য প্রাণীরা চোখে না দেখলেও বিড়াল পরিবারের প্রাণীরা দেখতে পায়। ওদের চোখের পেছনে ‘ট্যাপেটাম’ নামে একটা আয়নার মতো স্তর আছে। এটির কারণেই অল্প আলোতেও এরা দেখতে পায়।

আরও পড়ুন

২. এদের আছে ধারালো দাঁত আর জিব

বিড়ালরা জন্ম থেকেই শিকারি

বিড়ালরা জন্ম থেকেই শিকারি। তাই শিকারকে ধরে রাখা, মেরে ফেলা এবং খাওয়ার জন্য ওদের দাঁতগুলোও খুব শক্তিশালী। ওদের ক্যানাইন বা ছেদন দাঁতগুলো এত বড় আর ধারালো হয় যে শিকার একবার ধরলে আর পালাতে পারে না। একটা বাঘের ছেদন দাঁত পাঁচ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে! আর ওদের জিবটা অনেকটা শিরিষ কাগজের মতো খসখসে। জিবের সাহায্যে ওরা মাংস ছিড়ে খেতে পারে।

৩. কান পেতে শোনে সব

শিকার করার সময় বিড়ালরা শুধু চোখের ওপর নির্ভর করে না, ওদের কানও কিন্তু দারুণ শক্তিশালী। ছোট্ট একটা ইঁদুরের কিচকিচ শব্দও ওরা বহু দূর থেকে শুনতে পারে। ওদের বড় বড় কান ঠিক অ্যান্টেনার মতো কাজ করে। অল্প শব্দও স্পষ্ট শুনতে পারে। তাই শিকার কোথায় লুকিয়ে আছে, তা ওরা সহজেই বুঝে ফেলে।

আরও পড়ুন

৪. ছদ্মবেশে পারদর্শী

শিকারকে তো খুঁজে পাওয়া গেল, কিন্তু তার কাছাকাছি যাবে কীভাবে? এখানেই কাজে লাগে ওদের গায়ের রং। সিংহ বা পুমাদের গায়ের রং অনেকটা বালির মতো। এটা ওদের আশপাশের পরিবেশের সঙ্গে মিশে যেতে সাহায্য করে। আবার বাঘ বা চিতাবাঘের গায়ে থাকে ডোরাকাটা বা গোল গোল ছোপ। বনের ভেতর যখন আলো-ছায়ার খেলা চলে, তখন এই দাগগুলোই ওদের শরীরটাকে এমনভাবে লুকিয়ে ফেলে যে শিকার বুঝতেই পারে না সামনে বিপদ!

৫. চার পায়ে নেমে দাঁড়ায়

বিড়ালদের আরও একটা জাদুকরি ক্ষমতা হলো, ওরা যেকোনো জায়গা থেকে পড়লে ঠিক চার পায়ে মাটিতে নামে। এটা কোনো জাদু নয়, ওদের শরীরের একটা দারুণ কৌশল। ওদের কানের ভেতরের একটা অংশ শরীরকে সব সময় সোজা রাখতে সাহায্য করে। মাটিতে পড়ার সময় মাথাটা যখন সোজা হয়, পুরো শরীরটাও সেদিকে ঘুরে যায়। এভাবে ওরা নিরাপদে মাটিতে দাঁড়িয়ে পড়তে পারে।

আরও পড়ুন

৬. লুকিয়ে রাখে ধারালো নখ

নখ দিয়ে ওরা শিকার ধরে
ছবি: রয়টার্স

বিড়ালের শেষ এবং সবচেয়ে ভয়ংকর অস্ত্র হলো ওদের ধারালো নখ। এই নখ দিয়ে ওরা শিকার ধরে, গাছে চড়ে বা শত্রুর সঙ্গে লড়াই করে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, বেশির ভাগ বিড়ালই ইচ্ছেমতো নখ লুকিয়ে রাখতে পারে, আবার বের করতে পারে। দরকার হলেই বের করে। ফলে ওদের নখগুলো হাঁটাচলার সময় ভোঁতা হয় না এবং সব সময় ধারালো থাকে। তবে চিতাবাঘ ওদের নখ কিছুটা লুকাতে পারলেও পুরোপুরি পারে না।

সূত্র: বিবিসি ওয়াইল্ডলাইফ ম্যাগাজিন

আরও পড়ুন