শীতে হাতের তালু ঘামা কি কোনো রোগ
পরীক্ষা দিতে গেলে কি তোমার হাতের তালু ঘামে? কিংবা অন্য কোনো কারণে যখন চাপে থাকো তুমি, তখন কি ঘটে এমনটা? অনেকেই এ ধরনের সমস্যায় ভোগে। এমনটাও দেখা যায়, ঘেমে যাওয়া হাতের কারণে কেউ একজন পরীক্ষায় ঠিকমতো লিখতে পারছে না। কারও হাতের তালু আবার বেশি ঘামে শুধু শীতকালে। এমন সমস্যা কি কোনো রোগের লক্ষণ?
নানা কারণেই হাতের তালু ঘামে। সাময়িকভাবে হাতের তালু ঘামার একটা কারণ হতে পারে ওই সময়কার দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ। আবার কারও কারও হাতের তালু অতিরিক্ত ঘামার জন্য দায়ী হতে পারে কোনো রোগ। অনেকের হাতের তালু ঘামার কোনো কারণ খুঁজেই পাওয়া যায় না। এমনটাই বলছিলেন স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা. তাসনোভা মাহিন।
বিষয়টা স্বাভাবিক হতেই পারে
অনেকের হাত ঘেমে যাওয়ার ব্যাপারটা শুরুই হয় শৈশবে। পরিবারের অন্য কোনো সদস্যেরও এমন হওয়ার ইতিহাস থাকতে পারে। তবে এর সঙ্গে আর কোনো উপসর্গ না থাকলে বিষয়টা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।
পরিবেশের তাপমাত্রার তারতম্যের কারণেও হাতের তালু ঘামে। অতিরিক্ত ঝাল বা মসলা দেওয়া খাবার, বেশি চিনি বা বেশি লবণ দেওয়া খাবার কিংবা চা-কফি খেলেও হাত ঘামতে পারে। এগুলো সবই স্বাভাবিক বিষয়।
এসব উপসর্গ নেই তো?
কোনো রোগের কারণে যদি হাতের তালু ঘামে, তাহলে আরও কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এসব উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবে অবশ্যই। এমন কিছু উপসর্গ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
বুক ধড়ফড় করা
গলার সামনের অংশ ফুলে থাকা বা সেখানে কোনো গোটা দেখা দেওয়া
অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ওজন কমে যাওয়া
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া সত্ত্বেও চুল ভঙ্গুর হয়ে পড়া
গরম আবহাওয়া একেবারেই সহ্য করতে না পারা
প্রায়ই জ্বর আসা
বারবার মুখ শুকিয়ে যাওয়া
বারবার প্রস্রাব বা পায়খানা হওয়া
মেয়েদের ক্ষেত্রে মাসিক কমে যাওয়া বা না হওয়া
অস্বস্তি কমাতে
এটা ঠিক যে বারবার হাত ঘেমে গেলে একটু অস্বস্তিই লাগে। বিশেষ করে কারও সঙ্গে হাত মেলাতে গেলে ভীষণ অস্বস্তি হতে পারে। বিভিন্ন কারণে প্রায়ই যাদের হাতের তালু ঘেমে যায়, অস্বস্তি কমাতে সব সময় তারা হাতের কাছে রুমাল বা টিস্যু পেপার রাখতে পারো। কোনো রোগের কারণে যদি হাত ঘামে, সেটির চিকিৎসা করানো হলে অতিরিক্ত ঘামের সমস্যাও কমে যায়।
প্রশ্ন হলো, যাদের হাতের তালু ঘামার নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই, তারা কী করবে। যদি জীবনধারায় বড় কোনো প্রভাব না পড়ে, তাহলে এর জন্য আলাদা কিছু করার প্রয়োজন নেই। খুব বেশি অসুবিধা হলে তখন একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারো। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
দোকান থেকে ওষুধ নেবে কি না
দোকানে অ্যান্টিপারসপিরেন্ট বা ঘাম নিবারক ওষুধ কিনতে পাওয়া যায়। এ ওষুধ হাতের তালুতে প্রয়োগ করা যায়। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে। ত্বক লালচে হয়ে যেতে পারে, চুলকানি হতে পারে, ফুসকুড়ি হতে পারে। কারও আবার ত্বক কালচে হয়ে যেতে দেখা যায়। কারও ত্বকে গোটা সৃষ্টি হয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এ ধরনের ওষুধ ব্যবহার করবে না। সব ওষুধ সবার উপযোগী নয়। তা ছাড়া ওষুধ ব্যবহারের সঠিক নিয়মও জানা থাকা চাই। নইলে পার্শ্বপ্রিক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
আর অবশ্যই মনে রাখবে, ডিওডোরেন্ট ও অ্যান্টিপারসপিরেন্ট কিন্তু এক নয়। ডিওডোরেন্ট ঘাম কমায় না। কেবল ঘামের দুর্গন্ধ কমায়। আর ডিওডোরেন্টেরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি আছে।