বাইডেন ও ট্রাম্পের বদলে অন্য প্রার্থীর দাবিতে নিজের নাম বদলে ফেলেছেন এই লোক, দাঁড়াবেন নির্বাচনেও

প্রায় ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরা হয় রিপাবলিকান প্রার্থী, না হয় ডেমোক্র্যাট। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে তো বটেই, বিশ্বরাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারকারী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদটি যেন আটকে আছে এই দুই দলের এক অদৃশ্য চক্রে।

দীর্ঘ বছরের ইতিহাসে আমেরিকার ভোটারদের কাছে রিপাবলিকান বা ডেমোক্র্যাটের বাইরে আর কোনো বিকল্প আসেনি, যাকে তাঁরা নির্বাচিত করার সুযোগ পেয়েছেন। বছর বছর এ দুই দলের প্রার্থী দেখতে দেখতে ৩৫ বছর বয়সী ডাস্টিন ইবে এতটাই বিরক্ত হয়ে পড়েছেন যে ভোটারদের কাছে এই দুই দলের বাইরে অন্য যে কাউকে নির্বাচিত করার বিকল্প হিসেবে নিজেই নেমেছেন নির্বাচনের মাঠে। ভোটারদের কাছে একজন বিকল্প তুলে ধরতে এর মধ্যেই নিজের নামটাও পরিবর্তন করে ফেলেছেন টেক্সাসের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের গণিত পড়ানো এই শিক্ষক। ডোনাল্ড ট্রাম্প আর জো বাইডেনের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে তিনি নিজের নাম পাল্টে রেখেছেন ‘অন্য যে কেউ’ (লিটার‍্যালি এনিবডি এলস)।

তাঁর সদ্য প্রতিষ্ঠিত প্রচারণামূলক ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘দুটি দলের ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতায় আমার মতো যাঁরা বিরক্ত, তাঁদের জন্য সত্যিই একটি জায়গা থাকা উচিত। কারণ, এই প্রতিযোগিতায় সাধারণ মানুষের কোনো লাভ নেই।’

ট্রাম্প ও বাইডেন

কিন্তু তিনি যত সহজে নাম বদল করতে পেরেছেন, তত সহজে ব্যালটে নিজের নাম সংযোজন করতে পারছেন না। এর জন্য মে মাসের মধ্যে তাঁকে সংগ্রহ করতে হবে টেক্সাসের নন–প্রাইমারি ১ লাখ ১৩ হাজার ভোটারের স্বাক্ষর, যা আপাতদৃষ্টে প্রায় অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে। টেক্সাসের একটি টিভি চ্যানেল, ডব্লিউএফএএকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লিটার‍্যালি এনিবডি এলস আসন্ন নির্বাচনে তাঁর প্রার্থিতা সম্পর্কে বলেন, ‘আমি বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী নই। আমার আশা ডোনাল ট্রাম্প, জো বাইডেন এবং তারপর আক্ষরিক অর্থে অন্য কেউ থাকবেন। কাজটি কঠিন, তবে অসম্ভব নয়।’

আরও পড়ুন

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ বিষয় নিয়ে কম আলোচনা হচ্ছে না। ফেসবুকের এক কমেন্টে ডোরিন ব্রিজ নামের একজন বলেন, ‘সমর্থন করার আগে নারী অধিকার নিয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাই।’ আবার জেরেমি রবিনসন বলেন, ‘গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে আপনি যদি অবস্থান না নেন, তাহলে আপনি “লিটার‍্যালি নট এনি বেটার”।’

লিটার‍্যালি এনিবডি এলসের মতে, ব্যালটে ‘নিদার’ বা ‘না’ ভোটের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি বলেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। জনসাধারণের সমর্থন পাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত তার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র দুর্নীতি ও পক্ষপাতিত্বের ছত্রাকে ছেয়ে গেছে। এখন সময় এসেছে এই শিকল ভেঙে মুক্ত হওয়ার, নতুন কিছু দাবি করার। সেখানে আরও বলা হয়, ‘লিটার‍্যালি এনিবডি এলস কোনো ব্যক্তি নয়, একটি ধারণা।’

লিটার‍্যালি এনিবডি এলস বলেন, ‘আমেরিকানরা দল সমর্থনের ফাঁদে পড়ে ভুলে যাচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালনা করার কথা। চলো, ওয়াশিংটনে আমরা এই বার্তা দিই যে হয় আমেরিকান হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করো, অথবা সরে দাঁড়াও।’ তিনি মনে করেন, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘ঋণের রাজা’ ট্রাম্প বা একজন ৮১ বছর বয়সী মানুষের (বাইডেন) মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে বেছে নেওয়া উচিত নয়। ‘একটি শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ আমেরিকা’ গড়তে তিনি নিজেকে, অর্থাৎ লিটার‍্যালি এনিবডি এলসকে সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন।

এ বছর নভেম্বরে ৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আমেরিকার ষাটতম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সময়ই বলবে ডোনাল্ড ট্রাম্প আর জো বাইডেনের সঙ্গে ব্যালট পেপারে থাকছেন কি না লিটার‍্যালি এনিবডি এলস।

আরও পড়ুন