এই ৮টি জাংক ফুড খেলে অসুবিধা তো নেই, বরং উপকার

ফাস্ট ফুড হজমে ব্যঘাত ঘটায়

তুমি নিশ্চয়ই দোকানে বসে চিপস, বার্গার, ফ্রাই, সফট ড্রিংকস খেয়েছ? এসব হলো জাংক ফুড। নামটা একটু মজার, খেতেও বেশ মজাদার হলেও শরীরের জন্য অতটা ভালো নয়। 'জাংক' শব্দের মানে আবর্জনা। এর অর্থ হলো, এই খাবারগুলো দেখতে দারুণ, খেতেও মজা, কিন্তু শরীরের জন্য সুবিধাজনক নয়।

জাংক ফুডে থাকে অনেক তেল, অতিরিক্ত লবণ এবং চিনি। তবে পুষ্টি থাকে কম। এতে না থাকে ভিটামিন, না থাকে প্রোটিন। ঠিকমতো ফাইবারও থাকে না। শরীর ঠিক রাখতে এই উপাদানগুলো আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ দরকারি। জাংক ফুড খেলে ওজন বাড়ে, পেট খারাপ হয়। এমনকি ডায়াবেটিস আর হার্টের সমস্যাও হতে পারে।

তবে সমস্যা কী জানো? এসব খাবার খেতে এত মজা লাগে যে বারবার খেতে মন চায়। এতে প্রয়োজনীয় ক্যালোরি নেই। মানে শুধু আমাদের দেহকে মোটা করে, কিন্তু শক্তি বা উপকার কিছু করে না।

আরও পড়ুন

জাংক ফুড খেতে তাই ডাক্তারেরা সব সময় নিষেধ করেন। বেশিরভাগ জাংকফুডের দুর্নাম আসলে ফাস্টফুডের দখলে। কৌটা বা বক্স করে রাখা খাবার, ফ্রিজে রেখে দেওয়া খাবার, চট করে গরম করে খেয়ে ফেলা যায়, এমন খাবারকে আমরা বলি ফাস্টফুড। এই ফাস্টফুডে নানা রকম উপাদান থাকে। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

জাংক ফুড-ফাস্ট ফুডের মধ্যে এমন কিছু খাবার আছে, যেগুলো খেতে ভালো। ছোটরা এ খাবারগুলো খেলে বড়রা চোখ কুঁচকে ফেলেন। যেমন পপকর্ন, চিপস, চকলেট বা পিনাট বাটার। বড়রা অনেক সময় এসব দেখে চোখ কুঁচকে বলেন, 'ও এগুলো জাংক ফুড, খারাপ, খেও না!'

কিন্তু তুমি কি জানো, কিছু কিছু 'জাংক ফুড' আসলে শরীরের জন্য ভালো হতে পারে? যদি সঠিক পরিমাণে খাওয়া হয়?

চলো, আজ জেনে নিই এমন ৮টি মজার খাবারের কথা। লোকে এগুলোকে 'অপকারী' ভাবলেও সঠিকভাবে এই খাবারগুলো খেলে তোমার শরীরের জন্য বেশ উপকারী হতে পারে।

আরও পড়ুন
পপকর্ন আর সুইট কর্ন সবচেয়ে জনপ্রিয় হলেও ভুট্টা আরও বেশ কিছুভাবে প্রসেস করে খাওয়া যায়।

১. পপকর্ন: সিনেমা দেখতে বসলে অনেকের পপকর্ন ছাড়া চলেই না। কিন্তু এটা কি শুধু সময় কাটানোর খাবার? উত্তর হলো না। পপকর্নে আছে প্রচুর আঁশ (ফাইবার), যা হজমে সাহায্য করে। তবে অবশ্যই বাটার ছাড়া, লবণ কম, এয়ার-পপ করা পপকর্ন খেতে হবে। এগুলো ঠিক থাকলে পপকর্ন কিন্তু বেশ স্বাস্থ্যকর!

২. পিনাট বাটার: চীনা বাদাম থেকে যে বাটার তৈরি হয়, সেই পিনাট বাটারের কথা বলছি। এই পিনাট বাটার শুধু খেতে মজাদার এমন না, এতে থাকে প্রোটিন, ভিটামিন ই এবং পটাশিয়াম। তবে খেয়াল রাখতে হবে, অতিরিক্ত মিষ্টি বা কৃত্রিম উপাদান মেশানো পিনাট বাটার থেকে দূরে থাকতে হবে।

৩. ফ্রোজেন দই: আইসক্রিমের মতো ঠান্ডা মজার এই দইয়ে থাকে প্রোটিন আর প্রোবায়োটিক। এটি পেট ভালো রাখে। তবে চকলেট সিরাপ বা ক্যান্ডি দিয়ে ভরপুর না করে সাদামাটা দই খাওয়া ভালো।

৪. চিজ বা পনির: পিজ্জায় অনেকে ভরপুর চিজ পছন্দ করে। চিজে আছে ক্যালসিয়াম আর ভিটামিন কে২, যা দাঁত ও হাড়ের জন্য খুব দরকারি। তবে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত করা চিজ কিন্তু ভালো নয়। পাশাপাশি ভালো মানের চিজ খেতে হবে।

আরও পড়ুন

৫. ডার্ক চকলেট: তুমি কি ডার্ক চকলেট খাও? উত্তর যদি হয় হ্যাঁ, তাহলে জেনে খুশি হবে, এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর ফ্ল্যাভোনয়েড, যা রক্তচাপ কমায়। এতে মন ভালো থাকে। মাথা বেশি কাজ করে। তবে দিনে ২-৩ টুকরার বেশি ডার্ক চকলেট খাওয়া ঠিক না।

৬. বেকড চিপস: সোজা কথা আলু ভাজা। তবে ফ্রায়েড চিপস না। মানে তেলে ভাজা না, ওভেনে বেক করা চিপস। এই চিপসে কিছু কম ক্যালরি থাকে। তবে মূলত এতে থাকে পটাশিয়াম, যা মাংসপেশি ঠিক রাখে।

৭. লবণ দেওয়া বাদাম: আমরা সবাই জানি, বাদাম খুবই স্বাস্থ্যকর। এতে আছে উপকারী চর্বি, প্রোটিন ও ভিটামিন। হালকা লবণ দেওয়া বাদাম অনেক সময় ভালো স্ন্যাক হতে পারে। বিশেষ করে স্কুলের টিফিনে তুমি বাসায় ভাজা বাদাম নিয়ে যেতে পারো। তবে বাদামে বেশি লবণ সব সময় ক্ষতিকর।

৮. হোমমেড জুস বা আইস ললি: অনেকেই বাজারের কোল্ড ড্রিংকস বা আইসক্রিম খেতে ভালোবাসে। কিন্তু তুমি যদি বাসায় ফলের রস দিয়ে জুস বা আইস ললি তৈরি করো, তবে সেটা হবে স্বাস্থ্যকর। আবার নিজে নিজে বাসায় কিছু একটা বানানো হবে। এতে তোমার স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকবে, তোমার মানসিক প্রশান্তি বা স্যাটিসফেকশন তৈরি হবে।

আরও পড়ুন