প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা ঘুমাতেন আইনস্টাইন

আলবার্ট আইনস্টাইনছবি: সংগৃহীত

বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের বিচিত্র সব অভ্যাস ছিল। এর মধ্যে বিখ্যাত একটি হলো জুতার সঙ্গে মোজা না পরা। এই অভ্যাসের পেছনের কারণ নাকি আইনস্টাইনের পায়ের বুড়ো আঙুল। আইনস্টাইনের পায়ের বুড়ো আঙুল ছিল খানিকটা লম্বা। যার ফলে ছোটবেলায় তাঁর মোজা ছিঁড়ে যেত। ফলে আইনস্টাইন মোজা ছাড়াই জুতা পরে চলাফেরা করতেন। আর সেটাই কালক্রমে অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল।

একবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের আমন্ত্রণে আইনস্টাইন ও তাঁর স্ত্রী এলসা হোয়াইট হাউসে দাওয়াত খেতে গিয়েছিলেন। এমনকি সেদিনও তিনি মোজা ছাড়া জুতা পরে দাওয়াতে গিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন

আইনস্টাইনকে নিয়ে আরও

ঘুমের প্রতি ভালোবাসা

আইনস্টাইন আরেকটি বিষয়ের প্রতি তাঁর ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন, সেটা হলো ঘুম। তাঁর বিভিন্ন সঙ্গীর মাধ্যমে জানা যায়, আইনস্টাইন নাকি ঘুমাতে ভালোবাসতেন খুব। বলা হয়, তিনি সাধারণত ১০ ঘণ্টা ঘুমাতেন।

লিনার প্রতি ভালোবাসা

আইনস্টাইনের জীবনে সবচেয়ে গভীর ভালোবাসা লিনাকে নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। তাঁর গভীর প্রেম ছিল লিনার প্রতি। তিনি যেখানে যেতেন সঙ্গে থাকত লিনা। কেউ ভাবতে পারে লিনা বুঝি কোনো সুন্দরী মেয়ের নাম।

লিনা আসলে কোনো মেয়ে নয়, আইনস্টাইনের বেহালার নাম। আর লিনা একটি নয়, ছিল দশটি। আইনস্টাইন ছয় বছর বয়স থেকে বেহালা বাজানো শেখা শুরু করেন। ১৩ বছর বয়সে মোজার্টের বাজনা শুনে তিনি বেহালার প্রেমে পড়েন। আইনস্টাইন অনেকবার বলেছিলেন, তিনি যদি বিজ্ঞানী না হতেন, তাহলে একজন বেহালাবাদক হতেন।

আরও পড়ুন

আইনস্টাইনের ব্রেন চুরি

১৯৫৫ সালে আইনস্টাইন মৃত্যুবরণ করেন। তিনি চাননি মৃত্যুর পর তাঁর দেহ ও ব্রেন নিয়ে গবেষণা করা হোক। তবে তাঁর মৃত্যুর পর থমাস স্টোলজ হার্ভে নামের এক আমেরিকান ডাক্তার তাঁর শব ব্যবচ্ছেদ করেন। এই সময় তিনি আইনস্টাইনের ব্রেন শরীর থেকে আলাদা করে ফেলেন। আর দীর্ঘদিন নিজের কাছে সংরক্ষণ করে রাখেন। তিনি আইনস্টাইনের ব্রেনকে ২৪০ টুকরা করে সেটাকে সেলোডিন নামের এক উপাদানে সংরক্ষণ করেন। যদিও এই কাজ করার সময় তিনি আইনস্টাইনের পরিবারের কোনো অনুমতি নেননি।

যখন হার্ভের স্ত্রী হুমকি দেন যে তিনি এই ব্রেন ধ্বংস করে ফেলবেন (হার্ভের স্ত্রী জানতেন না যে এটা আইনস্টাইনের ব্রেন), তখন হার্ভে সেটাকে তাঁর ল্যাবের গবেষণাগারে রেখে দেন।

এরপর হার্ভে নানান সময় আইনস্টাইনের ব্রেন নিয়ে গবেষণা করেন। ১৯৭৮ সালে স্টিভেন লেভি নামের এক সাংবাদিক প্রথম বিষয়টি বিশ্বকে জানান যে আইনস্টাইনের ব্রেন সংরক্ষিত আছে হার্ভের কাছে।

তখন সবাই হার্ভের কীর্তি জানতে পারে। তবে তখন হার্ভে এই কাজের জন্য চাকরি হারিয়েছিলেন। এমনকি চাইলে আইনস্টাইনের পরিবার হার্ভের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারত, কিন্তু একজন ব্যক্তির উদারতায় তিনি এ যাত্রায় বেঁচে যান। ব্যক্তির নাম হ্যানস আলবার্ট আইনস্টাইন। তিনি আইনস্টাইনের ছেলে। হ্যানস বিজ্ঞানের স্বার্থে তাঁর পিতার মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণার অনুমতি দেন।

বর্তমানে আইনস্টাইনের ব্রেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব হেলথ অ্যান্ড মেডিসিনে সংরক্ষিত আছে।

আরও পড়ুন