লাল পাহাড় (ষষ্ঠ পর্ব)

অলংকরণ: আরাফাত করিম

রাব্বির বন্ধুরা সব আম-কাঁঠালের ছুটি কাটিয়ে ফিরে এসেছে। রনি তো আগেই ফিরেছিল। গতকাল এল সাইদ, তার আগের দিন ঝন্টু আর মিলু; মেয়েদের মধ্যে নেলিরাও ফিরেছে। মোটামুটি সাতচারা খেলার সব পার্টনার চলে এসেছে। একমাত্র রাব্বি ছাড়া এবার সবাই স্কুলের ছুটিতে বেড়াতে গিয়েছিল। প্রত্যেকেরই একটা গল্প আছে মনে হচ্ছে। মানে বেড়াতে গিয়ে গল্প বানিয়ে ফিরেছে। হয়তো গল্পটা সত্যিই, কিন্তু রাব্বির কেন যেন মনে হচ্ছে বানোয়াট। যেমন সাইদের গল্পটা। সে নাকি বান্দরবানে বেড়াতে গিয়ে একদিন এক পাহাড়ে উঠেছে তার ছোট চাচার সঙ্গে। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বিশ্রাম করছিল, তখন হঠাৎ দেখে তার পায়ের ওপর দিয়ে সরসর করে চলেছে এক ভয়ংকর অজগর সাপ। রাব্বি খেয়াল করেছে, সাইদ এই গল্পটা যখন তাকে প্রথম বলল, তখন সাপটার দৈর্ঘ্য ছিল ৭ ফিট। পরে আমবাগানে (যেখানে ওরা খেলে) সবার সঙ্গে বসে যখন গল্প করছিল, তখন সেই সাপের দৈর্ঘ্য হলো ১২ ফিট। এবং আরও পরে পাড়ার নেলির সঙ্গে যখন এই গল্প করছিল, তখন সেই সাপ গিয়ে দাঁড়াল ১৪ ফিটে...

‘তুই কি পকেটে স্কেল নিয়ে ঘুরিস?’ বলেই ফেলল রাব্বি।

‘মানে?’

‘মানে সাপের দৈর্ঘ্য আমাকে বললি ৭ ফিট, ওদের বললি ১২ ফিট...নেলিকে বললি ১৪ ফিট…সব সময় তো সাপটাকে তোর মাপতে হচ্ছে।’

হো হো করে হেসে ফেলল সবাই। সাইদ কঠিন চোখে তাকাল রাব্বির দিকে।

কিংবা ঝন্টুর গল্পটার কথাই ধারা যাক। তারা ভাইবোন, মা-বাবা সবাই মিলে গিয়েছিল মালয়েশিয়ায় বেড়াতে। কোনো একটা সমুদ্রে নাকি গোসল করতে নেমেছে তারা, তখন একটা গোল লাইফ বয়া নিয়ে একটু ভেতরের দিকে চলে গিয়েছিল ঝন্টু। হঠাৎ দেখে একটা হাঙরের ফিন! সাঁই সাঁই করে তার দিকে ছুটে আসছে। সবাই চিৎকার করে ছুটে বিচে উঠে পড়েছে, শুধু ঝন্টু পারছে না। লাইফ বয়ার কারণে সাঁতরে কিছুতেই এগোতে পারছে না সে।

‘বলিস কী? তারপর কী করলি?’ মিলু পাশ থেকে আঁতকে ওঠে।

‘তুই ভয় পাসনি?’ রনি বলে।

‘নাহ!’ ঠোঁট উল্টে বলে ঝন্টু, ‘ভয় পেলে তো চলবে না। ওই মুহূর্তে আমি চিন্তা করলাম কী করা যায়...হাঙরটা এগিয়ে আসছে এগিয়ে আসছে...ঠিক যখন আমার ৩ ফিটের মধ্যে চলে এল তখন...’

অলংকরণ: আরাফাত করিম

‘তখন?’ সবাই প্রায় চেঁচিয়ে উঠল।

গল্পের বাকি অংশ রাব্বি মনোযোগ দিয়ে শুনলই না। তবে মিলুর গল্পটা ইন্টারেস্টিং মনে হলো একটু। সে যদি বানিয়েও বলে থাকে, তারপরও বলতে হবে, গল্পটা ক্রিয়েটিভ। মিলু অবশ্য গল্প বলেও ভালো…

‘বুঝলি, আমরা তো গিয়েছিলাম ব্যাংককে। থাকি মেইন রাস্তার ধারের একটা হোটেলে। তো একদিন হলো কী, সন্ধ্যা পার হয়ে রাত নয়টার মতো বাজে। মা বলল মিলু, যা তো আমার জন্য একটা পান নিয়ে আয়।’

‘কী বলছিস! ওখানে পান পাওয়া যায়?’

‘হ্যাঁ, যায়। হোটেলের নিচে একটা বাঙালির দোকান আছে। ওখানে বাংলাদেশের অনেক কিছুই পাওয়া যায়। মালিক বাঙালি। আমাদের সাথে বেশ খাতিরও হয়ে গেছে। তো আমি নেমে এলাম হোটেল থেকে, নিচে এসে পান কিনলাম। দেখি, সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে, রাস্তা ফাঁকা। ভাবলাম একটু হাঁটি। হাঁটতে হাঁটতে বেশ একটু দূর চলে এসেছি। এ সময় দেখি ৮–১০টা কুকুর ছুটে আসছে আমার দিকে। আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম। ভাবলাম, দৌড় দিই একটা। তখন আবার মনে হলো কুকুর তাড়া করলে দৌড়ালে বিপদ আরও বাড়ে। তাই দাঁড়িয়ে পড়লাম। কুকুরগুলো সব ছুটে এসে আমাকে ঘিরে ধরল, তারপর গোল হয়ে ঘুরতে লাগল।’

‘মানে?’

‘মানে আমাকে কেন্দ্রে রেখে ঘুরতে লাগল সার্কেল করে।’

‘তারপর?’

‘আমি তো প্রচণ্ড ভয় পেলাম। কিন্তু ঘাবড়ালাম না। ওভাবেই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে আস্তে আস্তে হোটেলের দিকে হাঁটা শুরু করলাম। আর কুকুরগুলো ঘুরতে ঘুরতে আমার সঙ্গে সঙ্গে চলল, একদম হোটেল পর্যন্ত।’

‘বুঝতে পেরেছি।’ বেশ বিজ্ঞের মতো বলল অমি। ‘ওরা আসলে তোকে সেভ করল। তুই আরেকটু এগোলে বড় ধরনের বিপদ হতো। তাই তোকে বাঁচিয়ে দিল। ভালো প্রাণীরা অনেক সময় এমনটা করে।’

‘ঠিক তা–ই।’ মা-ও তা-ই বললেন।’

‘পরে কী করলি?’

‘মা একটা মুরগি সদকা দিল। জানের সদকা।’

‘ওখানে মুরগি সদকা দিলি কীভাবে?’

‘একটা আস্ত গ্রিল মুরগি আমরা সবাই মিলে খেলাম আরকি।’

সবাই হি হি করে হেসে ফেলল। তারপর তাকাল রাব্বির দিকে, অর্থাৎ তোর গল্পটা বল। এত দিন একা ছিলি, কোনো গল্প নিশ্চয়ই আছে। রাব্বি দাঁত বের করে বলল, ‘আমার কোনো গল্প নেই। তবে গল্পের বই পড়েছি অনেকগুলো এবার...’। তখনই লাল পাহাড় বইটার কথা মনে পড়ল ওর। বইটার ভেতরে ৪৮-৪৯ পাতা সাদা। বিষয়টা কৌশিকদার সঙ্গে আলাপ করা দরকার। তা ছাড়া অনেক দিন তার সঙ্গে দেখা নেই। সে উঠে বলল, ‘আমি কৌশিকদার বাসায় যাব, তোরা কেউ যাবি?’ কেউই যেতে তত আগ্রহী হলো না। সবাই মনে হচ্ছে নতুন নতুন গল্প বানানোর মুডে আছে।

নেলিদের বাসার সামনে দিয়ে যেতে যেতে দেখে, নেলি তাদের বাসার বারান্দায় রকিংচেয়ারে দুলছে, হাতে একটা কমিকস। রাব্বিকে দেখে উঠে দাঁড়াল।

‘অ্যাই রাব্বি, কই যাস?’

‘কৌশিকদার বাসায়।’

‘আমিও যাব তোর সঙ্গে।’ নেলি সঙ্গ নিল রাব্বির।

‘এই, তোকে না বলেছি আমাকে তুই তুই করে বলবি না। আমি যে তোর থেকে দুই ক্লাস ওপরে, এটা মনে হয় মাঝেমধ্যে ভুলে যাস।’

কাঁধ ঝাঁকাল নেলি। ‘এহ, দুই ক্লাস ওপরে! আর আমার যে এক বছর লস হয়েছে...’ ভাবটা এমন—এক বছর লস হলে বড় ক্লাসের ছেলেদের তুই-তোকারি করা যায়।

‘ফের যদি তুই তুই করিস, আমি আন্টিকে নালিশ করব।’

‘করিস...আমি বলব।’ নেলি মুখ বাঁকায়।

বন্ধের দিন। কৌশিকদা বাসাতেই ছিলেন। অবাক হলেন ওদের দেখে।

‘কিরে তোরা সাতসকালে?’

‘সাতসকাল কই? এখন বাজে সাড়ে ১০টা।’

ওই হলো। বন্ধের দিনে আমি ঘুম থেকে উঠি ১২টায়। আজ ঘুম ভেঙে গেল। আমার জন্য তো সাতসকালই। তারপর নেলি বেগম, খবর কী তোমার? কেমন বেড়ালে সবাই?’

‘খুব বাজে।’

‘বাজে কেন?’

‘ওখানে নেট নাই, কিছু নাই...ধুৎ!’

‘ওহ, বেড়াতে গেলেও গ্যাজেট ছাড়া চলে না, না? তোরা চা খাবি?’

‘খাব।’

কৌশিকদা তার বিখ্যাত রাশিয়ান সমোভারে চা বানাতে চলে গেল, রাব্বি আর নেলি কৌশিকদার বই ঘাঁটতে লাগল। কৌশিকদার সারা ঘরে ছড়ানো–ছিটানো শুধু বই আর বই। হঠাৎ রাব্বির বুকটা ধক করে উঠল। লাল পাহাড়। এই বই এখানে এল কী করে? বইয়ের প্রথম পাতায় লেখা ‘কৌশিক রায়, নিজস্ব সংগ্রহ’, তার নিচে তারিখ লেখা, বৈশাখ, ২০১৭। তার মানে এটা কৌশিকদার বই। ২০১৭ সালে কেনা।

‘নে, তোদের চা।’

‘কৌশিকদা, এই বইটা পড়তে নিতে পারি?’

‘পারিস। তারপর তোর ডাক্তার খালা এখনো আছে?’

‘আছে।’

‘ওরে বাপ রে! ওই দিন আমাকে যে রকম ঝাড়ল।

তোর বাসার ত্রিসীমানায় আর যাওয়া যাবে না।’

‘ওহ, রাব্বি তোর ওই ডাক্তার খালা এসেছে?’ নেলি বলল।

‘হুঁ।’

‘উনি তো অনেক ভালো কৌশিকদা, তোমার সঙ্গে আবার কী হলো?’

‘তোদের জন্য হয়তো ভালো। কিন্তু আমার জন্য ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেত। আচ্ছা বাদ দে, চাটা কেমন লাগছে? এটা একটা স্পেশাল চা।’

‘কী চা?’

‘ভেবে বল দেখি।’

কৌশিকদার সঙ্গে লাল দোতলা বাড়িতে ঢোকার বিষয়টা নিয়ে কথা বলা দরকার, কিন্তু নেলির সামনে বলা ঠিক হবে না ভেবে চেপে গেল রাব্বি। কৌশিকদাও কিছু বলল না। তবে বের হওয়ার সময় কৌশিকদা একটু গলা নামিয়ে বলল, ‘বিকেলে একবার আসতে পারবি?’

রাব্বি মাথা নাড়ল, পারবে।

বাসায় আসতেই একবারে ঝর্ণা খালার মুখোমুখি।

‘ওহ, বই পেয়েছিস? কাকে দিয়েছিলি? নিশ্চয়ই ওই ধড়িবাজকে।’

‘না…মানে এটা কৌশিকদার...’ ঝর্ণা খালা বইটা একরকম ছিনিয়ে নিয়ে খুলল, তারপর চেঁচিয়ে উঠল।

‘উফ, কী ভয়ংকর লোক। নিজের নাম লিখে রেখেছে, তা–ও আবার প্রথম পৃষ্ঠায়। আর আমি যে পাতাটায় লিখেছিলাম, সেটা সাদা, তার মানে মুছে ফেলেছে। আমি তো পেনসিলে লিখেছিলাম। ইরেজার দিয়ে মোছা কোনো ব্যাপার না। ছি ছি এত বাজে মানুষ হয়।’ এই সময় ঝর্ণা খালার চেঁচামেচি শুনে বের হয়ে এলেন মা।

‘কী হয়েছে রে?’

‘আপু, দেখো না কাণ্ড...’

‘না না, এটা কৌশিকদার বই। আমারটা খুঁজে পাচ্ছি না...’ দুর্বল গলায় বলার চেষ্টা করল রাব্বি। খালা পাত্তাই দিল না। হড়বড় করে সব বলল মাকে। মা ভ্রু কুঁচকে তাকাল রাব্বির দিকে। খালা রাব্বিকে কিছুক্ষণ ঝাড়ল মায়ের সামনেই। উপহারের বই নিজে না পড়ে কেন সে দিতে গেল আরেকজনকে? এত কিসের খাতির একটা বয়স্ক লোকের সঙ্গে?

পরে শেষমেশ ঠিক হলো, বিকেলে রাব্বির সঙ্গে ঝর্ণা খালাও যাবে কৌশিকদার বাসায়। লাল পাহাড় বইয়ের ফয়সালা একটা করবেই সে। কেন রাব্বির উপহার পাওয়া বইয়ে নিজের নাম লিখল এই লোক... এই সব। মা অবশ্য যেতে নিষেধ করেছেন, কিন্তু ঝর্ণা খালা যাবেই। সে এর একটা বিহিত করবে। রাব্বি মন খারাপ করে শুয়ে আছে নিজের ঘরে। কেন যে ঝর্ণা খালা এই সময় বেড়াতে এল। এবারের বন্ধে না এলে কী হতো? লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল রাব্বি। একফাঁকে লাল পাহাড় বইটা তুলে নিল। সত্যিই কি তার বই এটা? তাহলে কৌশিকদার কাছে গেল কীভাবে? সে তো এই বই কাউকে দেয়নি, যেটা খালাকে কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছে না।

বইটা খুলে ৪৮-৪৯ পাতায় গেল রাব্বি। হতভম্ব হয়ে গেল! পাতা দুইটা ধবধবে সাদা! একটা অক্ষরও ছাপা নেই। তাহলে কি সত্যিই এটা তার বই? নাকি কৌশিকদার বইটাতেও ৪৮-৪৯ পাতা সাদা? তাহলে কি কেউ ওই দুই পাতা তাদের পড়তেই দিচ্ছে না কোনো কারণে? কারা এরা?

বিকেলে রাব্বি ঝর্ণা খালাকে নিয়ে চলল কৌশিকদার বাড়িতে। রাব্বির ধারণা ছিল, শেষ মুহূর্তে ঝর্ণা খালা হয়তো যাবেন না। কিন্তু ঠিকই তিনি চলেছেন। তার হাতে লাল পাহাড় বইটা। রাব্বি বেশ ভীত, কে জানে কী হতে যাচ্ছে কৌশিকদার বাড়িতে। ঝর্ণা খালার এই রূপ সে আগে কখনো দেখেনি।

কৌশিকদার বাসায় গিয়ে দেখে দরজা খোলা, কিন্তু কৌশিকদা নেই। মানে কী? ‘কৌশিকদা’, ‘কৌশিকদা’ বলে কিছুক্ষণ চেঁচাল রাব্বি। কোনো উত্তর নেই। তার মানে কেউ নেই বাসায়। ঝর্ণা খালা বলল, ‘তোর কৌশিকদা মনে হচ্ছে ভেগেছে!’ তখনই গমগম করে একটা উত্তর এল, ‘না আমি ভাগিনি, আমি কৌশিক, কৌশিক রায়। কেমন আছেন আপনি মিস ঝর্ণা? আপনার হাতের বইটা আমার ২০১৭ সালে কেনা। আপনি যা ভেবেছেন, তা নয়। তবে এই বইটা এই মুহূর্তে খুব ইম্পরট্যান্ট। রাব্বি, তুই দেখ তো এই বইয়ের ৪৮-৪৯ পাতায় কী লেখা? পড়ে একদম মুখস্থ করে ফেল...।’ ওরা দুজনেই হতভম্ব হয়ে গেল! কৌশিকদার গলা, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তিনি কোথায়?

‘তুমি কোথায় কৌশিকদা?’

‘আমাকে ওরা উঠিয়ে নিয়েছে।’

‘কারা উঠিয়ে নিয়েছে?’

‘ওরা পঞ্চম মাত্রার মানুষ। ওরা আমাকে তাদের পঞ্চম মাত্রার জগতে উঠিয়ে নিয়েছে। আমি তোদের দেখতে পাচ্ছি। তোরা আমায় দেখতে পাচ্ছিস না। দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা আর সময় নিয়ে তুই, আমি, তোর ঝর্ণা খালা—আমরা সবাই ছিলাম চতুর্থ মাত্রায়। এখন দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা, সময় আর আলো নিয়ে আমি চলে এসেছি পঞ্চম মাত্রায়, এদের এখানে আলোও একটা মাত্রা। আমি ইচ্ছে করে আসিনি এই জগতে, ওরা আমাকে নিয়ে এসেছে...!’

‘কিন্তু কেন?’ প্রশ্নটা একসঙ্গে দুজনের মাথায়ই এল—রাব্বি আর ঝর্ণা খালার। রাব্বি হতভম্ব হয়ে তাকায় ঝর্ণা খালার দিকে। ঝর্ণা খালা ভ্রু কুঁচকে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করছে বলে মনে হচ্ছে, তবে তার চোখে সন্দেহ!

(চলবে...)

আরও পড়ুন