লাল পাহাড় (সপ্তম পর্ব)

অলংকরণ: আরাফাত করিম

বাসায় এসে ঝর্ণা খালা কিছু বলল না। চলে গেল নিজের ঘরে। কিছুক্ষণ পরই বের হয়ে এসে রাব্বির ঘরে এল। কড়া গলায় বলল—

‘পঞ্চম মাত্রা না ঘোড়ার ডিম! তোর কৌশিকদা বিজ্ঞানের টিচার না?’

‘হুঁ।’

‘এ জন্যই কাহিনি বানাচ্ছে। কথা রেকর্ড করে স্পিকারে ছেড়েছে নিজের ঘরে। আমি ঠিকই বুঝতে পেরেছি। আমাদের সঙ্গে প্র্যাঙ্ক করার চেষ্টা করছে। এখন এই আরেক ফ্যাশন হয়েছে, সবাই সবার সঙ্গে করে। আসলে তোর বইটা মেরে দিয়ে ধরা খেয়েছে তো, তাই এই সব...।’

তখনই ঘরের ভেতর গম গম করে উঠল কৌশিকদার ভারী গলা।

‘...মিস ঝর্ণা, আপনি যা ভাবছেন তা নয়। একটা বিষয় মনে রাখবেন, পঞ্চম মাত্রায় এসে আমি এখন সব বুঝতে পারছি। যেমন লাল পাহাড় বইটা নিয়ে আমাকে সন্দেহ করা হচ্ছে। ওটা আমারই বই। রাব্বির বইটা রান্নাঘরে ডিপ ফ্রিজের পেছনে। রাব্বি, ৪৮-৪৯ পাতাটা পড়, আলোতে পড়লে সাদা দেখতে পাবি। কারণ, ওরা চায় না তুই ট্রিকসটা ধরে ফেলিস। তোকে পড়তে হবে ইনফ্রারেড চশমায় অন্ধকারে...। মনে রাখিস, আলো ওদের একটা অন্যতম মাত্রা। শোন, আমি বেশিক্ষণ কথা বলতে পারব না। আমি কীভাবে পঞ্চম মাত্রা থেকে চার মাত্রায় ফিরে আসব, ওখানেই তার একটা সমাধান আছে। বিদায়…আর হ্যাঁ, মিস ঝর্ণা বেগম, আপনি জলদি ঢাকা যান। কাল আপনার ভাইভার ডেট...!’

রাব্বি ছুটে গেল রান্নাঘরে। তখন তার মনে পড়ল, বইটা যেদিন হাতে এসেছিল, সেদিন বইটা হাতে নিয়ে রান্নাঘরে এসেছিল, মা কী একটা কাজে ডেকেছিল বলে। বইটা ডিপ ফ্রিজের ওপর রেখেছিল মাকে সাহায্য করার জন্য, এইটুক মনে পড়ছে। তারপর নিশ্চয়ই কেউ ডিপ ফ্রিজ খুলেছে আর বইটা পেছনে পড়ে গেছে। ঠিক তা–ই। বইটা পাওয়া গেল ডিপ ফ্রিজের পেছনে। এখন তার বাসায় দুটি লাল পাহাড়। বই হাতে নিজের ঘরে এসে দেখে, ঝর্ণা খালা ফোনে রীতিমতো চেঁচাচ্ছে—

‘কী বলছিস, কাল ফাইনাল ভাইভা? এটা কী করে সম্ভব? কলেজ বন্ধ!’

(এ পাশ থেকে ঝর্ণা খালা ফোনে যা শুনতে পাচ্ছিল) ‘আর বলিস না, প্রফেসর মঈন হঠাৎ করে সবাইকে ডেকে বলেছেন কাল ভাইভা; উনি একটা কনফারেন্সে লন্ডন যাচ্ছেন দুই সপ্তাহের জন্য। সবাই খেপেছে। কিন্তু উপায় কী? আমি তো কাল থেকে তোকে চেষ্টা করছি, নেটওয়ার্ক পাচ্ছি না। তুই কোথায়?’

‘উফ...আমি রাজশাহীতে।’

(এ পাশ থেকে ঝর্ণা খালা ফোনে যা শুনতে পাচ্ছিল) ‘কী বলছিস? তুই এখনই রওনা দে।’

‘দিচ্ছি, এখনই রওনা দিচ্ছি।’

ফোন রেখে পাগলের মতো ব্যাগ গোছাতে থাকে ঝর্ণা খালা। রাব্বির মা এসে অবাক হন।

‘হচ্ছেটা কী?’

‘আমি এখনই ঢাকা যাচ্ছি।’

‘কী বলছিস!’

‘কাল আমার ভাইভা।’

‘কাল ভাইভা আর তুই কিছুই জানিস না? তোর কলেজ না বন্ধ?’

‘আপু, পরে কথা হবে। আমাকে নয়টার বাসটা ধরতে হবে।’

বলে একরকম ছুটে বের হয়ে গেল ঝর্ণা খালা। দরজার কাছে গিয়ে ফিরে এল আবার। ‘রাব্বি, স্যরি রে। তোর কৌশিকদাকে অবিশ্বাস করেছি বলে।’

রাব্বি কিছু বলল না। তার দুই হাতে তখন দুটো লাল পাহাড় বই। কিন্তু দুটোরই ৪৮-৪৯ পাতা সাদা। কৌশিকদা বলেছে, অন্ধকারে ইনফ্রারেড চশমায় নাকি পড়া যাবে। কিন্তু এখন ইনফ্রারেড চশমা কোথায় পাবে রাব্বি?

*

ইনফ্রারেড চশমা একটা জায়গাতেই আছে। তাদের স্কুলের ল্যাবে। তাহলে এখন উপায়? রাব্বির মাথায় দ্রুত চিন্তা চলছে। কৌশিকদাকে বাঁচাতেই হবে যেকোনো মূল্যে। সে ছুটে গেল মায়ের কাছে।

‘মা, আমি একটু রনির বাসায় যাচ্ছি।’

‘এখন এত রাতে ওর বাসায় কেন?’

‘এত রাত কোথায়? মাত্র আটটা বাজে। মা, ও খুব রিকোয়েস্ট করছে। একটা খুব সুন্দর সিনেমা আমাকে সঙ্গে নিয়ে দেখতে চায় ও। মাত্র দুই ঘণ্টার ছবি।’

‘আচ্ছা যা। ছবির নাম কী?’

‘অ্যাঁ ইয়ে... মাস্টার কি’

‘ইংরেজি ছবি?’

‘হ্যাঁ, তবে বাংলায় ডাবিং করা।’

‘যা, বেশি রাত করিস না।’

‘আচ্ছা।’

রাব্বি ছুটতে ছুটতে গেল রনির বাসায়, বাসাতেই ছিল রনি।

‘রনি একটু বাইরে আয়।’

‘ঘটনা কী? এত রাতে?’

‘এত রাত কই? মাত্র আটটা বাজে। শোন, তোর মাস্টার কি–র চাবির গোছাটা একটু দে তো, খুব জরুরি।’

‘এত রাতে চাবি দিয়ে কী করবি?’

‘আমাদের স্কুলের ল্যাবের তালা খুলতে হবে। খুবই জরুরি।’

সংক্ষেপে পুরো ঘটনা খুলে বলল রাব্বি। কৌশিকদার পঞ্চম মাত্রায় আটকে যাওয়া, লাল পাহাড় বইয়ে উদ্ধারের সমাধান, দুটো লাল পাহাড় বইয়ের ৪৮-৪৯ পাতা সাদা..., কৌশিকদার ঝর্ণা খালার ভাইভার কথা বলে দেওয়া...। সব শুনে রনি অবিশ্বাসের চোখে তাকিয়ে রইল রাব্বির দিকে।

‘তোর বিশ্বাস না হলে চল বাসায়। লাল পাহাড় বইটা দেখাই, দুইটা বইয়েই ৪৮-৪৯ পাতা সাদা, অন্ধকারে ওই পাতা দুটো ইনফ্রারেড চশমায় পড়তে হবে।’

রনি একটু চিন্তা করল, তারপর বলল,

‘এ তো পুরা সায়েন্স ফিকশন রে!’

‘তাহলে আর বলছি কী তোকে?’

‘আচ্ছা, এটা আমি যদি লিখি কেমন হয়?’

‘উফ...!’ রাব্বি তার মাথা চেপে ধরে। রাব্বির বন্ধুদের গ্রুপে রনি হচ্ছে একজন লেখক। পাড়ার সূর্যতরুণ ক্লাবের প্রদীপ্ত ভাস্কর দেয়ালপত্রিকায় নিয়মিত গল্প লেখে সে। কেউ জানে না, ‘কালো ছায়া’ ছদ্মনামে সে একটা ডিটেকটিভ সিরিয়ালও লেখা শুরু করেছে সম্প্রতি। এটা অবশ্য টপ সিক্রেট। ব্যাপারটা শুধু জানে প্রদীপ্ত ভাস্কর-এর সম্পাদক শিরিন আপু আর ‘কালো ছায়া’র লেখক, মানে আমাদের রনি।

‘আচ্ছা লিখিস। এখন চাবিটা নিয়ে আয় জলদি। আমি রাতেই দিয়ে যাব তোকে।’

‘আচ্ছা দাঁড়া।’

রনি বাসার ভেতরে গেল চাবি আনতে। একটু বাদেই চাবির গোছা নিয়ে ফিরল রনি। বলল, ‘চল।’

‘তুইও যাবি?’

‘অবশ্যই। একজন লেখককে সরেজমিনে পরিবেশ অনুধাবন করতে হয়।’ গম্ভীর হয়ে বলে রনি। আর কথা না বলে দুজনই পা চালাল স্কুলের দিকে। রাব্বি তবে ভেতরে ভেতরে খুশি হয়। একা একা তার একটু ভয় ভয় করছিল ঠিকই। এখন ভালো হলো সঙ্গে রনি আছে। ২০ মিনিটের মধ্যে দুজন স্কুলের গেটের কাছে এসে হাজির হয়। গেট দিয়ে ঢুকলে হবে না, গেটের আশপাশে নিশ্চয়ই দারোয়ান মজিদ ভাই আছে। পেছনের দেয়াল টপকে দুজন ঢুকল। রনি ফিসফিস করে, ‘বেশ একটা অ্যাডভেঞ্চার গল্পও হয়ে যাবে, কী বলিস?’

‘হুম।’

‘আমি ভাবছি আজ রাতেই দুই পাতা লিখে ফেলব।’

‘লিখিস। এখন চুপ কর। শব্দ করিস না।’

দোতলায় কোনার ঘরে ওদের ল্যাব। ইনফ্রারেড চশমাটা কোথায় আছে জানে রাব্বি। ওটা আছে একদম কোনার আলমারির ৩ নম্বর তাকে। এত কিছু মনে আছে, কারণ, স্কুল বন্ধের কিছু আগে বিজ্ঞান স্যার ওদের এটা সম্পর্কে বলেছিলেন; তখন চশমাটা চোখে দিয়ে দেখেছিল কেউ কেউ, তার মধ্যে রাব্বিও আছে। যদিও দিনের বেলা ওই চশমায় কোনো কাজ হয়নি।

‘চশমাটা ফেরত দিতে তো আবার আসতে হবে, তাই না রে রাব্বি?’

‘অবশ্যই। আমরা কৌশিকদাকে বাঁচাতে এই কাজটা করছি।’

‘একজন বিজ্ঞান শিক্ষককে বাঁচাতে বিজ্ঞান ল্যাবে চুরি করতে ঢুকছে একদল দুরন্ত কিশোর—আমার সায়েন্স ফিকশনের প্রথম লাইনটা হবে এ রকম, কেমন হবে রে?’

‘প্লিজ, এখন চুপ কর।’

তিনতলায় ওঠার সিঁড়ির কলাপসিবল গেটটা খোলাই পাওয়া গেল। আস্তে করে টান দিয়ে ফাঁক করল। তারপর ঢুকে গেল দুজন। তিনতলায় এসে ল্যাবের দরজার সামনে এসে দাঁড়াল। তাদের পরিচিত চেনা স্কুল বলে দুজনের কেউই খুব একটা ভয় পাচ্ছিল না, তবে বেশ টেনশন হচ্ছিল।

‘চাবি বের কর রনি।’

রনি চাবির গোছা বের করে একটার পর একটা চাবি ঢোকাতে থাকে। ৪ নম্বর চাবিটায় কট করে খুলে গেল তালা। আস্তে করে ঢুকল দুজনই। পকেটে টর্চটা বুদ্ধি করে এনেছিল রাব্বি। সেটা জ্বালাতেই চট করে পেয়ে গেল আলমারিটা। ভাগ্য ভালো আলমারিতে তালা নেই। খুব সাবধানে আলমারি খুলে ৩ নম্বর তাক থেকে বের করল চশমাটা। সাবধানে ঢোকাল পকেটে। তারপর পা টিপে টিপে দরজার কাছে চলে এল। দরজা খুলে বেরোতে যাবে...তখনই কে যেন খুব কাছে গুনগুন করে গান গেয়ে উঠল, ‘ওরে পোড়া মন...হাত বানলি পা বানলি মন বানলি নারে...।’ দারোয়ান মজিদ ভাইয়ের গলা। সে ঠিক ল্যাবের দরজার কাছে এসে ‘হায় হায় ল্যাবের তালা দেহি খোলা!’ বলে সশব্দে ঢুকল ল্যাবে। তার হাতে পাঁচ ব্যাটারির টর্চ, সেটা জ্বালিয়ে এদিক–ওদিক টর্চ মারতে লাগল। ওরা দুজন তখন আলমারির পাশের দেয়ালের সঙ্গে মিশে গেল। প্রচণ্ড আতঙ্কে দুজনের বুকই একসঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঢিপঢিপ করতে লাগল! অবশ্য ল্যাবের ভেতর বেশিক্ষণ থাকল না মজিদ মিয়া। ‘ওরে পোড়া মন...হাত বানলি পা বানলি মন বানলি নারে...’—এই গান গুনগুন করতে করতে বাইরে গিয়ে সশব্দে তালা মেরে দিল ল্যাবের। রনি আতঙ্কিত গলায় বলল,

‘আমাদের আটকে দিয়েছে! এখন বের হব কীভাবে?’

*

রাত ১১টার দিকে রাব্বির বাসায় ফোন এল। রনির মা ফোন করেছেন।

‘হ্যালো ভাবি, কেমন আছেন?’

‘ভালো, আপনার বাসায় তো রাব্বি গেল কী একটা মুভি দেখতে।’

‘তাই বলেছে? আর রনি বলল, আপনার বাসায় গেছে মুভি দেখতে, দেখুন তো কাণ্ড। মুভির নামও বলেছে ফেলুদার চশমা রহস্য।’

‘আর আমার পুত্র বলেছে, মুভির নাম মাস্টার কি।’

‘বা বা বা...তার মানে বুঝতে পারছেন, ফাজিল দুটো কোনো মতলব করে বের হয়েছে একসঙ্গে। আসুক আজ।’

‘আমিও দেখছি ভাবি...কত বড় লায়েক হয়েছে দুটা...।’

‘এ জন্যই বলি, স্কুল বেশি দিন বন্ধ থাকলে এমনটাই হয়, অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা, আসুক আজ। আপনি টাইট দিয়েন কিন্তু ...।’

‘অবশ্যই...।’

ল্যাবের ভেতর একটা জানালার একটা শিক পাওয়া গেল বেশ নড়বড়ে। সেটা দুজন মিলে টানাহেঁচড়া করে খুলতে পারল।

‘দেখ তো রনি, তোর মাথা ঢোকে কি না।’ বলল রাব্বি।

‘ঢোকে।’

‘ব্যস, তাহলে তো হয়েই গেল, মাথা ঢুকলে শরীরও ঢুকবে। তুই আগে বের হ, নিচে সানশেডে দাঁড়াবি। ভয়ের কিছু নেই, সানশেডটা বড় আছে। আর আমরা মাত্র দোতলায় আছি।’

শুরুতে বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিল, তবে এখন সামলে নিয়েছে। শুধু ফোঁস ফোঁস করে শ্বাস ফেলছে। তবে ঠিকঠাকমতোই জানালার শিক গলিয়ে বের হলো রনি। অবশ্য বেশ কষ্ট হলো, তবে ব্যাপারটা অসম্ভব না; এরপর দেয়াল ধরে সানশেডে দাঁড়াল সাবধানে। তারপর বেরোল রাব্বি। রাব্বি রনির থেকে শুকনা, সে আরও সহজে বের হতে পারল। দুজনই সাবধানে দাঁড়াল সানশেডে। তারপর এক এক করে লটকি দিয়ে ঝুপ করে নিচে ঘাসের ওপর পড়ল। তেমন কোনো সমস্যা হলো না। খালি জানালার সানশেড থেকে লটকি দিয়ে পড়ার সময় দেয়ালে ঘষা খেয়ে রাব্বির হাঁটুর ছাল উঠে গেল অনেকটা। তারপর আর কী, দেয়াল টপকে একদম সোজা বড় রাস্তায়।

‘ওহ্‌, দারুণ অ্যাডভেঞ্চার হলো রে একটা।’ রনি বলল।

‘ভয় পেয়েছিলি?’

‘প্রথম দিকে একটু পেয়েছিলাম, যখন আমাদের তালা মেরে আটকে দিল।’

‘তবে তুই একটা কিশোর অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাস লিখে ফেলতে পারবি, আজকে যা ঘটল তা নিয়ে।’

‘ঠিক বলেছিস। প্রদীপ্ত ভাস্কর–এ ধারাবাহিকভাবে লিখব ভাবছি।’

‘কোনটা আগে লিখবি, সায়েন্স ফিকশন না অ্যাডভেঞ্চার?’

‘দুটোই একসঙ্গে শুরু করব ভাবছি। ইয়ে আমি কিন্তু বলেছি তোর বাসায় ফেলুদার চশমা রহস্য মুভি দেখতে গিয়েছি।’

‘আর আমি বলেছি তোর বাসায় মাস্টার কি দেখতে গেছি। দুজনই একসঙ্গে হি হি করে হেসে উঠল।

দুজন বাসায় যখন পৌঁছাল, তখন বাজে পৌনে ১২টা। রনিকে তার বাসায় পৌঁছে দিয়ে নিজের বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে ১২টা। রাব্বির মা দরজা খুলে ঠান্ডা স্বরে বললেন—

‘ছবি কেমন দেখলি?’

‘দারুণ মা।’

‘কী নাম যেন ছবির?’

‘মাস্টার কি।’

‘মারপিটের ছবি নিশ্চয়ই?’

‘অ্যা...হ্যাঁ।’

‘তা–ই হবে, হাঁটু ছিলে রক্ত পড়ছে তোর মারপিটের চোটে।’ বলে ঝপ করে রাব্বির কান ধরলেন মা। হিড়হিড় করে বাসার ভেতরে টেনে এনে বললেন, ‘রনির মা ফোন দিয়েছিল। বলল, রনিও তোর বাসায় ফেলুদার চশমা রহস্য দেখতে আসছে...।’ রাব্বি তাকিয়ে দেখে, সত্যি তার হাঁটু বেয়ে রক্ত পড়ছে। তবে রাব্বির কানে মায়ের কড়া কড়া কথা একটাও ঢুকছে না। সে সাবধানে পকেটে হাত দিয়ে দেখে নিল ইনফ্রারেড চশমাটা জায়গামতোই আছে। এত কিছুর পরও তার শান্তি লাগছে, ইনফ্রারেড চশমাটা শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করে আনতে পেরেছে।

‘কোথায় গিয়েছিলি শয়তান! রনিকে নিয়ে?’ হুংকার দিলেন মা। রাব্বি মোটেই ভয় পেল না, হাসিমুখে তাকাল মায়ের দিকে। বলল, ‘মা, ঝর্ণা খালা কি নয়টার বাসটা ধরতে পেরেছিল ঠিকঠাকমতো?’

(চলবে...)

আরও পড়ুন