রকিব হাসানের ‘ক্যাম্পাসে ভূত’ (পঞ্চম পর্ব)

অলংকরণ: ধ্রুব এষ

পরদিন সকালে আবার রিচমন্ড কলেজে ফিরে এল কিশোর। সেই গার্ডের সঙ্গে দেখা করল, যে ওকে প্রফেসর ওয়াইল্ডারের ল্যাবরেটরিতে ঢুকতে দিয়েছিল।

‘বারান্দার দিকের দরজাটা তো তালাবদ্ধ থাকে,’ কিশোর বলল। ‘ওটা ছাড়া ল্যাবরেটরিতে ঢোকার আর কোনো পথ কি আছে?’

চিন্তিত ভঙ্গিতে ভ্রুকুটি করল গার্ড। জবাব দেওয়ার আগে মাথার টুপিটা পেছনে ঠেলে দিল। তারপর বলল, ‘ইয়ে, হ্যাঁ, আছে। ল্যাবরেটরির মালপত্র রাখার দেয়াল আলমারির পেছনে একটা ছোট্ট দরজা আছে। সেটা দিয়ে সেলারে নামা যায়। কিন্তু বহু বছর ওই ভাঙা নড়বড়ে সিঁড়িটা কেউ ব্যবহার করে না। রেলিংও নেই। বিপজ্জনক, তাই বাইরে থেকে দরজায় হুড়কো লাগিয়ে রাখা হয়।’

‘আমি যেদিন ঢুকলাম, সেদিন রাতেও কি হুড়কো লাগানো ছিল?’ কিশোরের প্রশ্ন।

‘তা তো ছিলই,’ মাথা ঝাঁকাল গার্ড। ‘সেদিন বিকেলে ল্যাবরেটরির দরজা বন্ধ করার আগে কিছু মালপত্র রেখেছিলাম আলমারিতে। তখন দেখেছি হুড়কোটা লাগানো আছে।’

‘এখন আবার দেখা যাবে?’

দ্বিধা করল গার্ড। অনিচ্ছা সত্ত্বেও কিশোরকে নিয়ে চলল সায়েন্স বিল্ডিংয়ের ভেতরে। অবাক হয়ে দেখল, আলমারির দরজায় হুড়কো লাগানো নেই।

‘আমি এখনো বলব, সোমবার রাতে হুড়কোটা লাগানো ছিল,’ গার্ড বলল। ‘এদিক দিয়ে যেতে পারেনি কেউ।’

মুচকি হাসল কিশোর। ‘না পারলে খুলল কেন? আর কেউ না পারলেও সে রাতে ওই আলো জ্বেলেছিল যে, সে ঠিকই পেরেছিল।’

আর সেই লোক, ভাবল কিশোর, ল্যাবরেটরিটা ভালোমতো চেনে; এর কোথায় কী আছে, সব জানে। এমনকি আলমারির ভেতর যে হুড়কো রয়েছে, সেটাও জানে।

অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিল্ডিংয়ের পাবলিক ফোন থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসে ডা. অ্যাডাম ফ্রিম্যানের অফিসে ফোন করল কিশোর। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইল। অ্যাটেনডেন্ট জানালেন, তিনি অফিসে নেই। কোথায় আছেন, জানার জন্য অ্যাটেনডেন্টকে বিষয়টার গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টা করল কিশোর। নিজের পরিচয় দিল। বলল, খুবই জরুরি ব্যাপার। অ্যাটেনডেন্ট তখন জানালেন, ডাক্তার সাহেব অফিসে নেই, তবে বন্দরে গেলে তাঁর খোঁজ পাওয়া যেতে পারে।

অ্যাটেনডেন্টকে ধন্যবাদ দিয়ে রিসিভার নামিয়ে রাখল কিশোর। বাইরে এসে, গাড়িতে চেপে, তাড়াহুড়ো করে লস অ্যাঞ্জেলেস বন্দরে ছুটল। বন্দরে পৌঁছে জানতে পারল, নিজের কেবিন ক্রুজার জাহাজ নিয়ে সাগরে বেরিয়েছেন ডাক্তার, তবে বিকেল নাগাদ ফিরে আসবেন।

বন্দরের রেস্টুরেন্টে বসে বার্গার আর মিল্কশেক দিয়ে ডিনার সারল কিশোর। তারপর ধৈর্য ধরে ডাক্তারের ফিরে আসার অপেক্ষা করতে লাগল। বেলা তিনটার পর জেটিতে ঢুকল ডাক্তার ফ্রিম্যানের কেবিন ক্রুজার। তাঁকে নিজের পরিচয় দিয়ে, কয়েকটা প্রশ্ন করতে চাইল কিশোর। রাজি হলেন ডাক্তার।

কিশোর জানাল, রিচমন্ড কলেজ ক্যাম্পাসের একটা ভূত রহস্যের সমাধান করতে চাইছে ও, আর সে জন্য কোরি অ্যালেঙ্গারের অতীত জানতে চায়। ‘তিনি যেখানে চাকরি করেন, সেই ল্যাবরেটরির মালিক বলেছেন আপনার সুপারিশেই ওখানে কোরির চাকরি হয়েছে। বিষয়টা আমাকে খুলে বলতে কোনো অসুবিধা আছে আপনার?’

‘না, নেই,’ জবাব দিলেন ফ্রিম্যান। ‘সাগর থেকে কোরিকে উদ্ধার করেছি আমি। জাহাজডুবি হয়ে সাগরে পড়ে গিয়েছিল ও। এক ঝড়ের রাতে সি কুইন নামের একটা ইয়ট সাগরে ডুবে গিয়েছিল। বেঁচে গিয়েছিল একমাত্র কোরি।’

কীভাবে ঘটনাটা ঘটেছিল খুলে বললেন ডাক্তার ফ্রিম্যান। ঝড়ের রাতের পরদিন সকালে নিজের জাহাজ নিয়ে বেরিয়েছিলেন তিনি। সি কুইনের একটা বয়া ধরে ভাসতে দেখলেন একজন মহিলাকে। তাঁকে তুলে নিলেন। দুর্ঘটনার শক থেকে পুরোপুরি স্মৃতিভ্রংশ হয়ে গিয়েছিল মহিলার। কয়েক মাস হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল তাঁকে।’

‘প্রথমে,’ বলে চললেন ডাক্তার, ‘বারবার শুধু একটা কথাই বিড়বিড় করছিল মহিলা, “ব্রহ্মা ক্যাটল”। পরের দিকে যখন আরও কথা বললেন, কথা স্পষ্ট হলো, তখন তাঁর কথার টান শুনে মনে হলো, মহিলা দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষ, টেক্সাসের। যেখানে ক্যাটল, অর্থাৎ গবাদিপশু পোষা হয়।’

‘ডুবে যাওয়া ইয়টের মালিক কিংবা মহিলার আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি?’ জানতে চাইল কিশোর।

মাথা নাড়লেন ডাক্তার। ‘না। সবাই সম্ভবত ডুবে গিয়েছিল ওই ইয়টের সঙ্গে, কোনো প্যাসেঞ্জার লিস্টও পাওয়া যায়নি। ধীরে ধীরে মহিলার স্মৃতিশক্তি কিছুটা ফিরে এল, তখন তিনি আমাকে জানালেন, তাঁর নাম কোরি অ্যালেঙ্গার।’

ইয়টের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানলাম, পৃথিবী ভ্রমণে বেরিয়েছিল ওটা। কোরির জামাকাপড় আর জিনিসপত্র বোধ হয় সব ইয়টেই ছিল, ইয়টের সঙ্গে ডুবে গেছে। একেবারে অসহায় অবস্থা। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য স্যাবাক মেডিকেল ল্যাবরেটরিতে তাঁর একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলাম।’

বাড়ি ফিরে, খেতে বসে, চাচাকে সব জানাল কিশোর। কোরি অ্যালেঙ্গারের ভয়ানক দুরবস্থার কথা, কীভাবে তাঁকে উদ্ধার করে তাঁর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছেন ডাক্তার ফ্রিম্যান, সব বলল চাচাকে।

মাথা ঝাঁকালেন রাশেদ পাশা। ‘আমি অবাক হইনি। ডাক্তারের পরোপকারের কথা অনেক শুনেছি।’

‘তাঁকে তুমি চেনো নাকি, চাচা?’

‘ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। তবে তাঁর খ্যাতির কথা জানি। শুধু পরোপকারই নয়, মানুষের চিকিৎসাও করেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের একজন বড় প্লাস্টিক সার্জন তিনি।’

‘প্লাস্টিক সার্জন?’ চাচার কথার প্রতিধ্বনি করল যেন কিশোর। বড় বড় হয়ে গেছে চোখ।

‘হ্যাঁ, কেন? সার্জন শুনে চমকে উঠলি যে?’ চাচা জিজ্ঞেস করলেন।

‘আমি শিওর না...তবে হতেও পারে,’ চাচার কথা জবাব না দিয়ে আনমনে বিড়বিড় করল কিশোর। কয়েক মিনিট চুপচাপ খাবার চিবাল। গভীর চিন্তায় নিমজ্জিত। খাওয়া শেষ করেই উঠে গিয়ে ফোন করল ডাক্তার ফ্রিম্যানকে। কয়েক মিনিট কথা বলল তাঁর সঙ্গে।

রিসিভার সবে নামিয়েছে, এই সময় ঘরে ঢুকল মুসা। কী কী করে এসেছে, কিশোরকে তার রিপোর্ট দিতে। উত্তেজিত ভঙ্গিতে মুসা যে খবর জানাল, সেটা কিশোরকেও উত্তেজিত করে তুলল। মুসা জানাল, হোটেল থেকে বেরিয়ে টিনা হার্বার্ট সোজা রিচমন্ড কলেজে প্রফেসর জনসনের বাসায় চলে গেছে, আর সেখানে এখন পাহারা দিচ্ছে রবিন। রবিনকে রেখে খবরটা কিশোরকে জানাতে ছুটে এসেছে মুসা।

‘খুব ভালো করেছ!’ চেঁচিয়ে উঠল কিশোর। ‘চলো এখন, আমরাও যাই। অবস্থাটা দেখে আসি।’

‘হ্যাঁ...যাব।’ দ্রুত ডায়নিং টেবিলের দিকে চোখ বোলাল মুসা। ‘কিন্তু পেটের ভেতর যে ছুঁচো নাচছে, ওটাকে না তাড়িয়ে যাই কীভাবে? সত্যি বলছি, কিশোর, আমার প্রচণ্ড খিদে পেয়েছে।’

হেসে ফেলল কিশোর। ‘ঠিক আছে। খেয়ে নাও।’

শিগগির আবার স্টোনভিলের দিকে গাড়ি ছোটাল কিশোর। পাশে বসা মুসা। প্রফেসর জনসনের বাড়ির সামনে চলে এল। একটা ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে থেকে বাড়ির ওপর চোখ রাখছিল রবিন। কিশোরদের দেখে বেরিয়ে এল।

‘টিনা কি এখনো ভেতরেই আছে?’ জিগ্যেস করল কিশোর।

‘আছে, যদি পেছনের দরজা দিয়ে চুপি চুপি বেরিয়ে গিয়ে না থাকে,’ জবাব দিল রবিন।

‘গুড। এখন আমি কী করব মন দিয়ে শোনো।’ দ্রুত ওর প্ল্যানের কথা দুই সহকারীকে জানাল কিশোর। তারপর গাড়ি থেকে ছোট একটা কাগজের ব্যাগ বের করে এনে দিল রবিনের হাতে। মেরি চাচি দিয়েছেন রবিনের জন্য। স্যান্ডউইচ, আপেল, আর পানির বোতল।

‘আমি কাজ সেরে আসি,’ কিশোর বলল। ‘এই সুযোগে তুমি খেয়ে ফেলো। মুসাকে নিয়ে ভাবনা নেই। ও আমাদের বাড়ি থেকে খেয়ে এসেছে।’

প্রচণ্ড খিদে পেয়েছে রবিনের; ব্যাগ থেকে ওর খাবার খোলার ভঙ্গি দেখেই বোঝা গেল। কিশোরকে ধন্যবাদ দিল।

দুই সহকারীকে ঝোপের কাছে রেখে, রাস্তা পেরিয়ে গিয়ে দরজার ঘণ্টা বাজাল কিশোর। খুলে দিলেন প্রফেসর জনসন। অস্বস্তি বোধ করলেন। এ সময় কিশোরকে দেখবেন আশা করেননি। ইতস্তত করে বললেন, ‘আমি...ইয়ে...আমি এখন খুবই ব্যস্ত।’

‘অসুবিধা নেই। আমি দেরি করব না।’ মুখে উজ্জ্বল হাসি ছড়িয়ে দিয়ে বলল কিশোর। প্রফেসর জনসনের অনুমতি ছাড়াই তাঁর পাশ কাটিয়ে ঘরে ঢুকে পড়ল।

লিভিং রুমে বসে থাকতে দেখা গেল টিনা হার্বার্টকে। কিশোরের অপ্রত্যাশিত আগমনে মোটেও খুশি হলো না। ‘এসেই যখন পড়লে,’ তিক্তকণ্ঠে বলল ও, ‘দয়া করে বলবে কি, ওই দলিলটার বৈধতা প্রমাণ করতে কত সময় লাগবে?’

‘হয়তো কয়েক দিন,’ জবাব দিল কিশোর। ‘চাচা ওটা একজন উকিলের কাছে দেবেন। উকিল সাহেব তখন সেটা আদালতে উপস্থাপন করবেন। বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে দেখে ওটা আসল কি না, রায় দেবেন।’

পরস্পরের দিকে তাকাল টিনা ও জনসন। দুজনের ভুরুই কুঁচকে গেছে। তারপর যেন হঠাৎ করেই মনে পড়ল এমন ভঙ্গিতে কিশোর বলল, সংক্ষেপে তার তদন্তের রিপোর্ট লিখে কলেজের অফিসে রেখে যেতে চায়। ডিন হয়তো দেখতে চাইবেন। বাড়ি থেকে লিখে আনতে মনে ছিল না, সময়ও ছিল না। এখন লেখার জন্য জনসনের টাইপরাইটারটা ব্যবহারের অনুমতি চায়।

‘লেখো,’ রুক্ষকণ্ঠে জবাব দিলেন জনসন। মাথা ঝটকা দিয়ে ইশারায় নিজের স্টাডিরুমটা দেখিয়ে দিলেন।

দরজা দিয়ে ডেস্কটা দেখতে পেল কিশোর। ডেস্কে রাখা টাইপরাইটারটাও দেখল। জিগ্যেস করল, ‘কাগজ কোথায় পাব?’

‘ওখানেই পাবে।’

কয়েক মিনিট টাইপ করার পর, কাগজটা মেশিন থেকে বের করে নিয়ে লিভিং রুমে ফিরে এল কিশোর।

‘কি, তোমার কাজ শেষ হলো?’ বিরক্তির হাসি হেসে জিগ্যেস করল টিনা।

ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিতে হাসল কিশোর। ‘হয়েছে। তবে একটা কথা না বলে পারছি না, আমাকে মিথ্যা কথা বলা হয়েছে।’

‘মিথ্যা কথা? কোন ব্যাপারে?’ প্রশ্ন করলেন জনসন।

‘বলছি। আপনার টাইপরাইটারটা ব্যবহার করেই মিথ্যা বলা হয়েছে যে শিওর হলাম। আমি আসলে আপনার মেশিন দিয়ে ওই দলিলটার একটা কপি করছিলাম, যাতে মিলিয়ে দেখতে পারি। বুঝলাম, এই টাইপরাইটার দিয়েই দলিলটা টাইপ করা হয়েছে।’

‘কী!’ লাফিয়ে উঠে দাঁড়ালেন জনসন। টিনাও লাফিয়ে উঠল। ‘কী বলতে চাও তুমি?’ ভুরু নাচালেন জনসন। ‘দলিল নকলের অভিযোগ আনছ তুমি আমাদের ওপর?’

‘এখনো আনিনি,’ কিশোর বলল। ‘তবে আনা হবে। বনের ভেতরের কেবিনে পাওয়া দলিলটা এই টাইপরাইটার দিয়ে টাইপ করেই নিয়ে গিয়ে বাক্সে রাখা হয়েছে। কবিতাটাও, আমার ধারণা, লরা লেখেননি। অন্য কেউ লিখে দলিলের সঙ্গে বাক্সে ভরে রেখেছে। বোঝানোর জন্য যে, লরা তাঁর সম্পত্তি টিনাকে দান করে গেছেন। জালিয়াতিটা বুঝতে পারছেন? যা-ই হোক, আপনাদের দুজনকে সাবধান করে দিচ্ছি, আপনাদের সন্দেহের আওতায় রাখা হয়েছে। ও, আরও একটা কথা মিস হার্বার্ট, হোটেলের যে পরিচারিকা আপনার রুম গুছিয়েছে, সে জানিয়েছে, আপনার ঘরের আলমারিতে একটা ধূসর রঙের হুডওয়ালা আলখেল্লা, আর একটা সাদা রঙের ডাইনির মুখোশ পাওয়া গেছে।’

রেগে গিয়ে চিৎকার করে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করল টিনা আর জনসন। কিন্তু কিশোরের কানে ঢুকল বলে মনে হলো না। সে তাকিয়ে আছে জানালা দিয়ে। এক ব্লক দূরে, অন্ধকার সায়েন্স বিল্ডিংয়ের কালো জানালায় কাঁপা আলো চোখে পড়েছে তার।

‘আপনাদের কথা পরে শুনব,’ বাধা দিয়ে বলল কিশোর। ‘আমাকে এখন কলেজে যেতে হবে, এক্ষুনি।’

টিনা আর জনসনের বিস্মিত চোখের সামনে দৌড়ে বেরিয়ে এল ও। রাস্তায় পেরিয়ে ঝোপের কাছে এসে দুই বন্ধুকে ডাকল, ‘জলদি এসো! ক্যাম্পাসের ভূতটা মনে হয় ফিরে এসেছে!’

আরও পড়ুন