নাচোস কীভাবে এল
নাচোস বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি খাবার। আমাদের দেশে রেস্টুরেন্টেও এখন নাচোস পাওয়া যায়। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে নাচোস জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তবে আদতে এটি টেক্স-ম্যাক্স খাবার।
টেক্স-ম্যাক্স? সেটা আবার কী
আসলে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস আর মেক্সিকো পাশাপাশি দুটি অঞ্চল। এই অঞ্চলে যে শস্য পাওয়া যায়, সেটা দিয়ে বিশেষ বিশেষ ধরনের যে খাবার তৈরি হয়, সেটাকেই বলা হয় টেক্স-ম্যাক্স ফুড। নাচোস হচ্ছে একধরনের টরটিলা চিপস (মূলত তিন কোনা আকৃতির বিশেষ চিপস), যার আরেকটি নাম টোটোপস।
যদি আমাদের দেশের মতো করে চিন্তা করি, তাহলে বলতে পারি, নাচোস আসলে মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের একধরনের পাঁপড়ভাজা। আর এটা বানানো হয় ভুট্টার আটা দিয়ে।
যারা ত্রিভুজ আঁকতে পছন্দ করে, তাদের কাছে নাচোস খুব প্রিয়। কারণ, এটা ত্রিভুজের আকারের হয়। এটা সাইড ডিশ বা অন্য খাবারের সঙ্গে খাওয়া হয়। যেমন গ্রিল চিকেন, ভাজা মাংসের সঙ্গে নাচোস খাওয়া হয়। আবার এটা খেতে লাগে সালসা বা চাটনি, বিশেষ করে অ্যাভোকাডো দিয়ে বানানো গুয়াকামেলো চাটনি।
নাচোসের জন্ম কিন্তু খুব বেশি দিন আগে নয়। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের সীমান্তের কাছে মেক্সিকোর একটি শহরের নাম পিয়েড্রাস নেগারাস কোয়াহুইলা। এই শহরে ভিক্টরি ক্লাব নামের একটি রেস্টুরেন্ট ছিল। এর মালিক ও শেফের নাম ছিল ইগনাসিও নাচো আনায়া।
১৯৪৩ সালে মিয়ামি ফিওনা নামের এক মার্কিন কিশোরী তাঁর তিন বান্ধবীকে নিয়ে ভিক্টরি ক্লাবে খেতে আসেন। তিনি রেস্টুরেন্টের মালিক ও শেফ নাচোকে বলেন নতুন ধরনের কোনো খাবার নিয়ে আসতে। নাচো তখন কর্ণফ্লাওয়ারকে ভেজে তার ওপর শেডার চিজ দিয়ে সেটাকে তিন কোনা আকৃতি দেন। তারপর এই খাবারকে হেলাপিনোর চাটনি দিয়ে পরিবেশন করেন।
খাবারটি ফিওনা ও তাঁর সঙ্গীদের খুব পছন্দ হয়। তাঁরা তখন আনায়াকে জিজ্ঞেস করেন, এই খাবারটি নাম কী? আনায়া উত্তর দেন, এটা হচ্ছে শেফ নাচোস স্পেশাল। সেই থেকে এই খাবারের নাম নাচোস। সেদিনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর সঙ্গে সারা বিশ্বে খাবারটি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
১৯৪৯ সালে নাচোস শব্দটি একটি খাবার হিসেবে বিশ্বের প্রথম কোনো কুক বুকে ঠাঁই করে নেয়।
বর্তমানে ৫ নভেম্বর দিনটিকে সারা বিশ্বে নাচোস ডে হিসেবে পালন করা হয়। নাচোস দিবস যদিও পেরিয়ে গেছে, তাই বলে তো নাচোস খেতে কোনো বাধা নেই। তোমরাও নিতে পারো নাচোসের স্বাদ। চাইলে ইউটিউব দেখে ঘরেও তৈরি করে নিতে পারো নাচোস।