ট্রাম্পের কারণে আমেরিকায় ফুটবলের নাম বদলে যেতে পারে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছোটবেলা থেকেই ফুটবল পছন্দ করেনএক্স

১৪ জুলাইয়ের কথা। ফুটবল বিশ্ব যখন ব্যস্ত ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনাল নিয়ে, তখন সব আলো কেড়ে নিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চেলসির কাছে পিএসজির ভরাডুবির চেয়ে বেশি আলোচ্য হয়ে উঠেছিল ফাইনালের মঞ্চে ট্রাম্পের কর্মকাণ্ড। শিরোপা হাতে চেলসি যখন উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, ট্রাম্প তখনও মঞ্চে। 'ব্লুজ'দের সঙ্গে দাঁড়িয়ে উদ্‌যাপন করেছেন প্রথম ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা। তবে তার চেয়েও বেশি আলোচনায় এসেছেন ১৫ জুলাই। কারণ এবার যা করতে যাচ্ছেন তাতে আমেরিকার ফুটবল ঐতিহ্য নিয়ে টানাটানি পড়ে যেতে পারে।

আমেরিকার সঙ্গে ইউরোপিয়ান ফুটবলের যোজন যোজন তফাত। খেলায় নয়, নামে। ফুটবল নামটা জনপ্রিয়তা পেয়েছে পুরো বিশ্বজুড়ে। শুধু ইংলিশ বলে নয়, ইউরোপের বড় বড় সব দেশেই ফুটবলকে ডাকা হয় ফুটবল বলেই। জার্মানিতে ‘ফুসবল’, স্প্যানিশে ‘ফুতবল’ আর ইতালিয়ানে ‘কালসিও’, যার অর্থও ঘুরেফিরে দাঁড়ায় ফুটবল। অর্থাৎ ফুটবলের নাম পৃথিবীর সব জায়গাতেই এক–ফুটবল!

নির্বাহী আদেশ হলো আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দেয়া নির্দেশাবলি, যা সরাসরি কার্যকর হয়। এই আদেশ চালু করতে কোনো ভোটাভুটি বা সংশোধনীর প্রয়োজন হয় না। যদিও তর্কসাপেক্ষে মাঝেমধ্যে তা সিনেটে ওঠে

কিন্তু না, পুরো পৃথিবী এক হয়ে যাওয়া তো আর সম্ভব নয়। সবাই এক হলেও আমেরিকাকে আলাদা হতেই হবে। তাই তো পুরো পৃথিবী যখন ফুটবলে একমত, আমেরিকা তখন ফুটবলকে ডাকে ‘সকার’ বলে। শুধু আমেরিকা নয়, কানাডা-অস্ট্রেলিয়াও এর সঙ্গী। গোল চর্মগোলকের খেলা, তাদের চোখে ফুটবল নয়, ‘সকার’।

আরও পড়ুন

কিন্তু সেটা বোধহয় আর বেশিদিন থাকছে না। ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনাল শেষে ছোট এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ট্রাম্প। সেখানেই কথা বলেছেন ফুটবল নিয়ে, ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা আর পরিকল্পনা নিয়ে। প্রধান অতিথি হিসেবে শিরোপা দিতে এসে ট্রলের স্বীকার হলেও সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে ফুটবলের প্রতি তাঁর ভালোবাসার কথা। সেখানেই তাঁকে ফুটবল-সকার দ্বন্দ্বের কথা মনে করিয়ে দেন উপস্থাপক। আর সেখানেই কথা ওঠে আনুষ্ঠানিক পালাবদলের।

ট্রাম্প বলেন, আমরা এখানে এটাকে সকার বলি, বাইরে অন্যরা ফুটবল বলে। কে জানে, হয়ত নামটা পরিবর্তন হয়েও যেতে পারে। ডিএজেডএন-এর উপস্থাপক এমিলি অস্টিন তখন যোগ করেন, চাইলে তো একটা নির্বাহী আদেশও করতে পারেন। তাতে সায় দিয়ে ট্রাম্প বলেন, হ্যাঁ, চাইলে তো করাই যায়।

পুরো পৃথিবী এক হয়ে যাওয়া তো আর সম্ভব নয়। সবাই এক হলেও আমেরিকাকে আলাদা হতেই হবে। তাই তো পুরো পৃথিবী যখন ফুটবলে একমত, আমেরিকা তখন ফুটবলকে ডাকে ‘সকার’ বলে।

নির্বাহী আদেশ হলো আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দেয়া নির্দেশাবলি, যা সরাসরি কার্যকর হয়। এই আদেশ চালু করতে কোনো ভোটাভুটি বা সংশোধনীর প্রয়োজন হয় না। যদিও তর্কসাপেক্ষে মাঝেমধ্যে তা সিনেটে ওঠে। পরে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংশোধনী কার্যকর হয়। ট্রাম্প আসার পর থেকেই একের পর এক সংশোধনী দিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন ব্যবস্থায়। সেই সংশোধনীর মধ্যে যদি ‘সকার’ থেকে ‘ফুটবল’-এ পরিবর্তন হয়, তাহলে মন্দ কী?

ট্রাম্প যেমন মানুষ, কে জানে হয়ত হয়ে যেতেও পারে। আর যদি হয়েই যায়, তাহলে একটা চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলা যাবে। আগামী বিশ্বকাপকে আর ‘ফিফা সকার বিশ্বকাপ’ শুনতে হবে না। মুশকিল হলো, আমেরিকান ফুটবল নামেও একটি খেলা আছে আমেরিকায়। অনেকটা রাগবির মতো এই খেলাটি তুমুল জনপ্রিয় আমেরিকা-কানাডায়। 'সকার'-এর নাম ফুটবল করা হলে 'আমেরিকান ফুটবল'-এর নাম কী হবে?

আরও পড়ুন