কুমির ছেড়ে জেফ বেজোসের বিয়ে ঠেকানোর হুমকি!
মার্কিন ধনকুবের ও অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস ও সাংবাদিক লরেন সানচেজের রাজকীয় বিয়ে সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে। তিন দিনের এই জমকালো আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে ইতালির ভেনিসে। ইতালির সান জর্জিও মাজিওরে দ্বীপে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে বিশ্বের অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি আমন্ত্রিত ছিলেন। প্রায় ২০০ জন তারকা ও প্রভাবশালী ব্যক্তি এই ব্যয়বহুল বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন।
ইতালির ভেনিসে জেফ বেজোসের এই বিয়ের আয়োজন ঘিরে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও ‘নো স্পেস ফর বেজোস’ নামক একটি প্রতিবাদী গোষ্ঠীর হুমকির কারণে সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এই গোষ্ঠীটি হুমকি দেয় যে তারা ভেনিসের খালগুলোতে কুমির ছেড়ে দেবে, যাতে অতিথিরা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে না পারেন। এমন উদ্ভট এবং গুরুতর হুমকির পাওয়ার পর ভেনিস কর্তৃপক্ষ মার্কো পোলো বিমানবন্দরসহ পুরো শহরে ব্যাপক নিরাপত্তা অভিযান চালায়। যাতে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে।
তবে প্রতিবাদ চললেও বিশ্বের ধনী ও প্রভাবশালীদের অনেকেই এই বিয়েতে যোগ দিয়েছেন। সুপার ইয়ট ও ৯০টিরও বেশি ব্যক্তিগত জেটে করে ইতালিতে আসেন তাঁরা।
২০১৪ সালে ভেনিসে অভিনেতা জর্জ ও আমাল ক্লুনির বিয়ের পর সবচেয়ে বড় হাই-প্রোফাইল অনুষ্ঠান এটা। দ্য গার্ডিয়ানের তথ্য অনুযায়ী এই বিয়েতে খরচ হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৮ মিলিয়ন ইউরো। টাকার মূল্যে যা প্রায় ৫০০-৫৯০ কোটি টাকা। তবে বেজোসের বিয়ে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। শহরের বিভিন্ন দেয়ালে বেজোসের মাথা, মহাকাশে বিস্ফোরিত রকেটের পোস্টার লাগানো হয়েছে।
জেফ বেজোসের বিয়েতে তীব্র প্রতিবাদের কারণ হলো শহরের অতিরিক্ত পর্যটন চাপ ও স্থানীয়দের অসন্তোষ। ভেনিস এমনিতেই সারা বছর পর্যটকদের ভিড়ে হিমশিম খায়। আন্দোলনকারীরা বলছেন, এই ধরনের জমকালো অনুষ্ঠান ভেনিসের পরিবেশ ও বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে আরও দুর্বিষহ করে তুলছে।
প্রতিবাদকারীরা শুধুমাত্র পর্যটনের বিরুদ্ধে নয়, পুঁজিবাদের বাড়াবাড়ি ও জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা নিয়েও সোচ্চার। আমেরিকার ‘গ্রিনপিস’-এর মতো পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো জেফ বেজোসের এই বিলাসিতা প্রদর্শনীর মাধ্যমে ধনী ব্যক্তিদের সীমাহীন ব্যয়ের সমালোচনা করছে। আন্দোলনকারীরা ব্যানার হাতে স্লোগান দিচ্ছেন– ‘যদি বিয়ের জন্য ভেনিস ভাড়া নিতে পারে, তবে আরও করও দিতে পারবে’। এই প্রতিবাদের মুখে জেফ বেজোস ও লরেন সানচেজ তাঁদের বিয়ের একটি ভেন্যু পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা যায় মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস ও তার বান্ধবী পাওলা হার্ডকে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের অনুসারে, তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত কিছু আমন্ত্রিত অতিথি আরও আগেই ভেনিসে পৌঁছে গিয়েছেন।
তবে প্রতিবাদ চললেও বিশ্বের ধনী ও প্রভাবশালীদের অনেকেই এই বিয়েতে যোগ দিয়েছেন। সুপার ইয়ট ও ৯০টিরও বেশি ব্যক্তিগত জেটে করে ইতালিতে আসেন তাঁরা। গত ২৫ জুন গ্র্যান্ড ক্যানালের আমান ভেনিস হোটেলে প্রবেশ করার সময় বিশ্বের চতুর্থ ধনী বেজোস এবং সানচেজকে একটি ওয়াটার ট্যাক্সি থেকে নামতে দেখা যায়। এই হোটেলেই থাকছেন অনেক সেলিব্রিটি।
অনেক বিদেশি মিডিয়া এই বিবাহকে ‘শতাব্দীর সেরা বিবাহ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন শুরু হওয়ার আগে প্রথমে আসা অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প, তার স্বামী জ্যারেড কুশনার ও তাদের সন্তানেরা। তারা সেন্ট মার্ক্স স্কয়ারের কাছে অবস্থিত সেন্ট রেজিস হোটেলে ছিলেন। এই পাঁচ তারকা হোটেলটি ২০০ জন অতিথির জন্য সম্পূর্ণ বুক করা হয়েছিল।
বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা যায় মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস ও তার বান্ধবী পাওলা হার্ডকে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের অনুসারে, তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত কিছু আমন্ত্রিত অতিথি আরও আগেই ভেনিসে পৌঁছে গিয়েছেন। মার্কিন ফান্ড ম্যানেজার ও অ্যামাজনের বিনিয়োগকারী বিল মিলারের ৬০ মিটার লম্বা ইয়ট আরিয়েন্স সপ্তাহের শুরুতেই সেন্ট মার্ক্সে গিয়ে পৌঁছায়। এছাড়াও, পাকিস্তানি-আমেরিকান বিলিয়নেয়ার ও ফুলহ্যাম এফসির মালিক শহীদ খানের মালিকানাধীন সুপারইয়ট কিসমেটও শহরে দেখা যায়।
আন্দোলনকারীরা ব্যানার হাতে স্লোগান দিচ্ছেন– ‘যদি বিয়ের জন্য ভেনিস ভাড়া নিতে পারে, তবে আরও করও দিতে পারবে’। এই প্রতিবাদের মুখে জেফ বেজোস ও লরেন সানচেজ তাঁদের বিয়ের একটি ভেন্যু পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে অনুষ্ঠানের বিস্তারিত সব তথ্য সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয়। এমনকি, এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত সকল কর্মীকেও কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন তারা ফোনে বা অন্য কোনো মাধ্যমে বিয়ের ব্যাপারে কোনো তথ্য প্রকাশ না করেন।
অতিথিদের তালিকায় থাকা অন্যান্য ভিআইপিদের মধ্যে ছিলেন আমেরিকান উপস্থাপক এবং টেলিভিশন প্রযোজক অপরাহ উইনফ্রে, অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র প্রযোজক ইভা লঙ্গোরিয়া, অভিনেতা অরল্যান্ডো ব্লুম, সংগীতজ্ঞ মিক জ্যাগার এবং ব্রিটিশ গায়ক-গীতিকার ও পিয়ানোবাদক এলটন জন।