চাঁদ নিয়ে বড় ঝুঁকির সতর্কতা নাসার নতুন প্রধানের
এই সপ্তাহে মার্কিন সিনেটে একটি শুনানি হয়েছে। সেখানে বক্তব্য দেন জ্যারেড আইজ্যাকম্যান। তিনি নাসার সম্ভাব্য নতুন প্রধান। তিনি একজন বিলিয়নিয়ার উদ্যোক্তা। তাঁর বার্তা ছিল স্পষ্ট। এখনই কাজ করতে হবে। অপেক্ষা করার সময় নেই।
আইজ্যাকম্যান বলেন যুক্তরাষ্ট্র আবার চাঁদে ফিরবে। সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বীর আগেই ফিরবে। তিনি বলেন এবার শুধু যাওয়া নয়। চাঁদে স্থায়ী উপস্থিতি গড়ে তোলা হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে নাসার প্রধান হিসেবে মনোনয়ন দেন। এটি তাঁর দ্বিতীয় সিনেট শুনানি। প্রথম শুনানি হয়েছিল আট মাস আগে। সেই সময় হঠাৎ করেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়। পরে নভেম্বর মাসে সিদ্ধান্ত বদলায়। ট্রাম্প আবার তাঁকে সামনে আনেন।
প্রথম শুনানির পর থেকে তাঁর অবস্থান একই রয়েছে। তিনি মহাকাশে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব ফিরিয়ে আনতে চান। তিনি বৈজ্ঞানিক গবেষণা রক্ষার কথা বলেন। তিনি বেসরকারি খাতের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর পক্ষে। তাঁর লক্ষ্য নাসাকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখা।
তবে এবারের শুনানিতে একটি বড় পরিবর্তন দেখা যায়। আগেরবার আলোচনার কেন্দ্রে ছিল মঙ্গল গ্রহ। এবার পুরো আলোচনাই ঘুরেছে চাঁদকে ঘিরে। এর পেছনে রয়েছে বাড়তে থাকা উদ্বেগ।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। চীনের চন্দ্র কর্মসূচি খুব দ্রুত এগোচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে পড়তে পারে। চীনা নভোচারীরা আগে চাঁদে নামতে পারেন।
চীন একের পর এক সফল পরীক্ষা চালাচ্ছে। অন্যদিকে নাসার আর্টেমিস থ্রি মিশন সমস্যায় পড়েছে। এই মিশন নির্ভর করছে স্পেসএক্সের স্টারশিপের ওপর। সেখানে রয়েছে প্রযুক্তিগত জটিলতা। রয়েছে সময়সূচির অনিশ্চয়তা। ফলে চাপ বাড়ছে নাসার ওপর।
সিনেটের সামনে আইজ্যাকম্যান ছিলেন দৃঢ়। তাঁর কণ্ঠ ছিল তাগিদে ভরা। কখনো আক্রমণাত্মকও। তিনি বলেন এটি অপেক্ষার সময় নয়। এটি কাজ করার সময়। তিনি বলেন যদি আমরা পিছিয়ে পড়ি। যদি আমরা ভুল করি। তাহলে আর ধরতে নাও পারি।
তিনি সতর্ক করে বলেন এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। পৃথিবীতেই ক্ষমতার ভারসাম্য বদলে যেতে পারে। তাঁর বক্তব্য ছিল পরিষ্কার। যদি চীন আগে চাঁদে মানুষ পাঠায়। তাহলে মহাকাশে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
চীনের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে অবতরণ। আইজ্যাকম্যানের দাবি নাসা তার আগেই প্রস্তুত থাকবে।
এই নতুন মহাকাশ প্রতিযোগিতায় তাঁর মনোনয়ন এখন জোর পাচ্ছে। আগের চেয়ে বেশি সিনেটর তাঁর পক্ষে। অনেক নভোচারীও সমর্থন জানিয়েছেন।
শুনানিতে তাঁকে প্রশ্ন করা হয় বাস্তবায়ন পরিকল্পনা নিয়ে। বিশেষ করে চাঁদে ফেরার পথ নিয়ে। নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শন ডাফি বলেছেন। স্টারশিপ প্রত্যাশা পূরণ না করলে চুক্তি নতুন করে দেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্লু অরিজিনের মতো প্রতিষ্ঠান সুযোগ পেতে পারে।
ইলন মাস্কের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত হলেও আইজ্যাকম্যান বিষয়টি পরিষ্কার করেন। তিনি বলেন তিনি কাউকে অগ্রাধিকার দেবেন না। তাঁর একমাত্র লক্ষ্য মিশনের সফলতা।
তবে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট। নাসা ও বেসরকারি খাতের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে। এতে স্পেসএক্স উপকৃত হতে পারে। ব্লু অরিজিনও উপকৃত হতে পারে।
এই ভাবনার ছাপ রয়েছে তাঁর প্রজেক্ট অ্যাথেনা পরিকল্পনায়। এই পরিকল্পনার তথ্য পলিটিকো প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়েছিল শিল্পনির্ভর নাসা হলে সংস্থাটি আবার বিশ্ব প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে পারবে।