জর্জ আর আর মার্টিনের সায়েন্স ফিকশন—আশা
‘হাইপারস্পেস আছে, এ নিয়ে সন্দেহ করার কোনো অবকাশ নেই। গাণিতিকভাবেও আমরা এর অস্তিত্ব প্রমাণ করেছি। হাইপারস্পেসের প্রকৃতি সম্পর্কে পুরোপুরি জানা এখনো সম্ভব হয়নি। তবে এটা নিশ্চিত যে আমাদের পরিচিত ত্রিমাত্রিক জগতের বাস্তবতা সেখানে খাটবে না। আমাদের জগতে আলোর গতিকেই সর্বোচ্চ গতি হিসেবে ধরা হয়; কিন্তু হাইপারস্পেসে এমনটা না–ও হতে পারে। এখন আমাদের কাজ হলো আমাদের জগৎ থেকে হাইপারস্পেসে যাওয়ার এবং ফিরে আসার সহজ পথ খুঁজে বের করা। হয়তো সেখানে আলোর চেয়েও বেশি গতিতে মহাকাশযান চালানো যায়। আমাকে হাইপারড্রাইভ (একপ্রকার কাল্পনিক প্রোপালশন সিস্টেম বা ইঞ্জিন, যার মাধ্যমে আলোর গতির চেয়েও দ্রুত মহাকাশযান চালানো যায়) বানানোর জন্য পর্যাপ্ত অনুদান দিন; কথা দিচ্ছি, কয়েক বছরের মধ্যে মহাকাশের দূরতম নক্ষত্রগুলোর গ্রহগুলো এসে যাবে আমাদের দখলে।’
—ড. ফ্রেডরিক ডি ক্যানফেরেলি
এফটিএল (ফাস্টার দ্যান লাইট) ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা
কারিগরি সহযোগিতা–সংক্রান্ত বৈশ্বিক আলোচনা সভায় তিনি এ কথাগুলো বলেন।
স্থান : আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তি ভবন, জেনেভা।
তারিখ : ১৬ মে ২০১৬
***
সবাই জানে যে একটি পিঁপড়ার দ্বারা কখনো রাবারগাছ হেলানো সম্ভব নয়। সম্মিলিত প্রয়াস ছাড়া কিছুই হয় না।
—এফটিএল ফাউন্ডেশনের প্রধান স্লোগান।
***
বগলের তলায় বেশ মোটা একটা ফাইল নিয়ে ঘরটাতে দ্রুত ঢুকে পড়ল কিনেরি। বেশ চটপটে একজন তরুণ সে। মাথাভর্তি ছোট করে ছাঁটা সোনালি চুল আর মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। ওর চোখ দুটোতে খেলা করছে রাজ্যের বিরক্তি। কিনেরিকে সবাই একটু বেয়াদব বলেই জানে। আজকেও অনুমতি ছাড়া ঘরটাতে ঢুকে সে নিজের বেয়াদবির ছাপ রাখল।
এফটিএল ফাউন্ডেশনের সহকারী প্রধান পরিচালক জেরোম শেচটার ক্লান্ত দৃষ্টিতে চেয়ে রইলেন কিনেরির দিকে। কোনো রকম অভিবাদন জানালেন না। বোঝাই যাচ্ছে, কিনেরি আসাতে উনি একদম খুশি হননি; কিন্তু সেসবকে পাত্তা দেওয়ার মতো লোক তো কিনেরি নয়।
ফাইলটা টেবিলের ওপর রেখে একটা চেয়ার টেনে নিয়ে সে বসে পড়ল জেরোমের ডেস্কের সামনে।
‘শুভ সকাল, মি. শেচটার,’ মাথা নাড়ল কিনেরি, ‘আপনার অফিসের গার্ডরা এত কড়া যে ওদের নজর এড়িয়ে এই চেম্বারে আসা প্রায় অসম্ভব। তারপরও আজকে অসম্ভবকে সম্ভব করে ফেলেছি। আপনি আসলেই অদ্ভুত লোক। একটা দিন আমার সঙ্গে কথা বললে কী হয়?’
‘তুমি খুব একটা সুবিধার লোক নও, বুঝলে?’ বিরক্ত কণ্ঠে বললেন জেরোম, ‘এভাবে গায়ের জোরে আমার চেম্বারে আসার অর্থ কী? গার্ডদের ডাকব?’ এফটিএল ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক জেরোম শেচটার বিশালদেহী লোক, বেশ মোটাও…ভদ্রলোকের দুই চোখের ওপর ঘন ভ্রু আর মাথাভর্তি ধূসর চুল।
‘এসব করতে আপনারাই আমাকে বাধ্য করেছেন! যাহোক, সরাসরি কাজের কথায় আসি…আর কত দিন এভাবে ঘুরলে আপনাদের কাছ থেকে অনুদান পাব আমি? নাকি আমাকে কোনো প্রকার সাহায্যই আপনারা করবেন না? যদি সেটাই হয়, তাহলে শুধু শুধু একটা সংস্থা খুলে রাখার কী অর্থ?’
‘ঘুরছ তুমি?’ মৃদু হাসলেন জেরোম, ‘তা তোমাকে কীভাবে ঘোরাচ্ছি আমরা? আমাদের সঙ্গে তোমার কী কাজ? একটু খুলে বলো দেখি।’
‘ঢং করবেন না। আমি এবং আপনি দুজনেই জানি যে আপনাদের সংস্থার কাছে গত কয়েক বছরে যে কজন সেরা পদার্থবিজ্ঞানী এসেছে, তাদের মধ্যে আমি অন্যতম। হাইপারস্পেস নিয়ে আমার বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলোর কথা আপনি জানেন না, এমনটা মনে হয় না। আপনি এটাও জানেন যে হাইপারস্পেসে পৌঁছানোর সবচেয়ে নিখুঁত পদ্ধতি আমিই বর্ণনা করেছি। মি. লোপেজের পর আমিই হাইপারস্পেসের ব্যাপারটা সবচেয়ে বাস্তবসম্মতভাবে ব্যাখ্যা করতে পেরেছি। ওই ভদ্রলোক কাজ করেছিলেন ৩০ বছর আগে…সেই তুলনায় আমার পদ্ধতি অনেক উন্নত। হাইপারড্রাইভ ইঞ্জিন তৈরির দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছি আমি। অনেকেই এ কথা জানে…আপনিও জানেন, কিন্তু না জানার ভান করছেন।
‘কিন্তু আমার অনুদানের দরকার। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি শিক্ষকতা করি তাদের পক্ষে আমার গবেষণার পুরো খরচ বহন করা সম্ভব নয়। বাধ্য হয়ে তাই আমি এফটিএল ফাউন্ডেশনের দ্বারস্থ হই। ভেবেছিলাম আমার গবেষণাপত্রগুলো দেখে আপনারা খুশি হবেন…অনুদানটা খুব সহজেই জুটে যাবে; কিন্তু তেমন কিছুই হলো না! আপনারা আমাকে কোনো সাহায্যই করলেন না…সরাসরি “হ্যাঁ” বা “না” কিছুই বলেন না। যতবার আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি, উত্তর পাই—“যথাসময়ে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।” ফোন করেও আপনাকে পাই না। আপনার সেক্রেটারি যান্ত্রিক কণ্ঠে বলে, “স্যার কনফারেন্স রুমে রয়েছেন।” আর মি. লোপেজের কী খবর? উনি কি এই অফিসে বসেন না? অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে আছেন নাকি?’
একসঙ্গে এতগুলো কথা বলে রীতিমতো হাঁপাতে লাগল কিনেরি। চেয়ারে হেলান দিয়ে বসল সে।
চুপচাপ টেবিলে রাখা পেপার-ওয়েটটা নাড়াচাড়া করতে করতে জেরোম বলেন, ‘তুমি রেগে আছ কিনেরি। রাগলে কোনো লাভ হয় না, বুঝলে? বরং ক্ষতিই হয়।’
‘তাই না?’ রাগে মুখটা লাল হয়ে গেল কিনেরির, ‘তা আমি রাগ করব না? এফটিএল ফাউন্ডেশনের জন্মই হয়েছে হাইপারড্রাইভ তৈরির জন্য। এতগুলো বছর ধরে কাজ করেও আপনারা সেটা বানাতে পারেননি। আমি বানাতে চাইছি…কিন্তু সে জন্য অনুদানও দিচ্ছেন না! এমনকি আমার কথাও আপনারা শুনতে চান না।’
‘তোমার ধারণা ভুল কিনেরি,’ দীর্ঘশ্বাস ফেললেন জেরোম, ‘এফটিএল ফাউন্ডেশনের জন্ম হয়েছে এমন কিছু মহাকাশযান তৈরির জন্য, যেগুলো আলোর চেয়েও দ্রুতগতিতে ভ্রমণ করতে পারবে। যাতে করে ভবিষ্যতে আমরা দূরদূরান্তের গ্রহগুলোতে যেতে পারি। হাইপারস্পেস স্রেফ আমাদের কাজের একটি ক্ষেত্র, এর বেশি কিছু নয়। ওখানকার বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন…এবং ওখানে যদি সহজেই কোনো যান আলোর চেয়ে বেশি গতিতে চলতে পারে তাহলে আমরা খুব সহজেই হাইপারস্পেস ব্যবহার করে দূরের গ্রহগুলোতে যেতে পারব। তবে শুধু ওই একটা ব্যাপার নিয়েই আমরা কাজ করি না। আমাদের কাজের আরও কয়েকটি ক্ষেত্র রয়েছে। সেগুলোও তো দেখতে হবে। হয়তো আলোর চেয়েও দ্রুতগতিতে ভ্রমণ করার নতুন কোনো পথ…।’
‘এসব ফালতু কথা বাদ দিন মি. শেচটার…আমার গবেষণাপত্রগুলো দেখুন…অনুদানের ব্যবস্থা করুন। আর স্রেফ দুটো বছর সময় দিন আমাকে। দুই বছরের মধ্যেই আমি এমন ইঞ্জিন বানিয়ে ফেলব, যার মাধ্যমে হাইপারস্পেসে যাওয়া যাবে, আবার ফেরাও যাবে।’
‘ধুর ধুর,’ খেঁকিয়ে উঠল কিনেরি, ‘সব তো শুনেছিই…ওগুলো সব ফালতু কাজ। আলোর চেয়ে দ্রুতগতিতে ভ্রমণের একটাই পথ রয়েছে আর সেটা হলো হাইপারস্পেস। কিন্তু আপনারা সেখানে বিনিয়োগ না করে বিনিয়োগ করছেন ফালতু সব প্রকল্পে। করদাতাদের টাকাগুলো এভাবে নষ্ট করছেন? সরকার কিছু বলে না? অ্যালিসনের “টেলিপোর্টেশন প্রকল্প”তে কত টাকা দিয়েছেন? সে নাকি মানুষের শরীরকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত করে সেগুলোকে আলোর চেয়ে দ্রুতগতিতে ভ্রমণ করাবে! ক্লডিয়া ড্যানিয়েলসের অদ্ভুত একপ্রকার ইঞ্জিনের কাজে টাকা দিচ্ছেন…যেটা এখন পর্যন্ত একবারও চালু করতে পারেনি মেয়েটা। আর চুং নামের একজন বিজ্ঞানী নাকি সময়কে স্থির করে দিয়ে বস্তুর গতিবেগ বাড়াতে চায়? এই লোকটাকেও টাকা দিচ্ছেন আপনারা! কত দিচ্ছেন এদের সবাইকে? একটা কথা বলি, কিছু মনে করবেন না…মি. ক্যানফেরেলির মৃত্যুর পর এফটিএল ফাউন্ডেশন কাজের কাজ বলতে কিছুই করেনি। ওনার নির্দেশনাতে সংস্থাটা ভালোই এগিয়ে চলেছিল…হ্যাঁ, মি. লোপেজও ভালো কাজ করছিলেন। কিন্তু তারপর হুট করেই উনি কাজ করা বন্ধ করে দিলেন কেন? ওনাকে সংস্থার একজন পরিচালক কেন বানিয়ে দেওয়া হলো? খুব দ্রুতই আপনারা নিজেদের ভুল বুঝতে পারবেন…।’
জেরোম কোনো উত্তর দিলেন না। রাগ আরও বেড়ে গেল কিনেরির, দাঁতে দাঁত চেপে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল সে। তখনই জেরোম আস্তে করে বলে উঠলেন, ‘শুনলাম তুমি সিনেটর মার্কহামের সঙ্গেও দেখা করবে। তা ওনার কাছেও কি আমাদের নামে এসব অভিযোগ করবে?’
‘একদম। আপনারা কেন আমাকে অনুদান দিচ্ছেন না, সেই উত্তর আমাকে আজই দেবেন। আপনাদের উত্তরে যদি আমি সন্তুষ্ট না হই তবে সিনেটরের কাছে তো যাবই যাব…এ ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সংসদীয় কমিটির কাছেও আপনাদের নামে অভিযোগ করব। এফটিএল ফাউন্ডেশনের শেষ দেখে ছাড়ব একদম…।’
‘হ্যাঁ, উত্তরটা আজকে তোমাকে আমি দেব কিনেরি,’ চোখ নাচালেন জেরোম, ‘তুমি নিশ্চয়ই জানো যে পৃথিবীর জনসংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। কোথাও তিল ধারণের জায়গা নেই…।’
‘আবার কোনো ফালতু গল্প শুরু করছেন, আমি কিন্তু…,’ ভেংচি কাটল কিনেরি।
‘নাহ,’ গম্ভীর গলায় বললেন জেরোম শেচটার, ‘শুধু শুধু মাথা না গরম করে আমার কথাগুলো শোনো। আমাদের গ্রহের জনসংখ্যা আসলেই অনেক বেড়ে গেছে…পৃথিবীতে মানুষের থাকার জায়গা হচ্ছে না। বেশ কয়েক দশক আগে মঙ্গল গ্রহ আর চাঁদে বসতি স্থাপন করেছে মানুষ, কিন্তু সেখানেও আর জায়গা নেই। বৃহস্পতির চাঁদ ক্যালিস্টোতেও বসতি স্থাপন শুরু হয়েছে…ওখানেও কিছুদিন পর জায়গার অভাব দেখা দেবে। এরপর মানুষ কোথায় থাকবে? একটাই উপায়…বহু দূরে অবস্থিত নক্ষত্রগুলোকে ঘিরে আবর্তিত হওয়া যে গ্রহগুলো মানুষের বসবাসের উপযুক্ত, সেগুলো দ্রুত খুঁজে বের করতে আমাদের। এফটিএল ফাউন্ডেশন হলো মানুষের আশা আর স্বপ্নের প্রতীক। মি. ক্যানফেরেলির বলা সেই কথাগুলোর জন্য এখনো মানুষ আশা করে আছে যে একদিন হাইপারস্পেসের মাধ্যমে আমরা বহুদূরের বসবাসযোগ্য গ্রহগুলোতে যেতে পারব।’
‘বাদ দিন মি. শেচটার,’ উঠে দাঁড়াল কিনেরি, ‘এমন অনেক কথা কয়েক বছর ধরে শুনেই যাচ্ছি। আর শোনার ইচ্ছা নেই। থাকুন আপনি…।’
চুপচাপ চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালেন জেরোম। তারপর জানালার সামনে গিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলেন। আকাশছোঁয়া উঁচু ভবনগুলোকে কেমন যেন রহস্যময় লাগছে।
‘কিনেরি শোনো,’ ঘুরে তাকালেন জেরোম, ‘তোমার মনে কি কখনো এই প্রশ্ন জাগেনি যে এই সংস্থার একজন পরিচালক হওয়ার পরেও কেন মি. লোপেজ পরবর্তী সময়ে হাইপারস্পেস–সংক্রান্ত কোনো প্রকল্পে অনুদান দিতে রাজি হলেন না? হাইপারস্পেস নিয়ে তো তিনিও কাজ করতেন…তাহলে তো তাঁর এসব ব্যাপারে আগ্রহ বেশি থাকার কথা, তাই না?’
‘আসলে…আমি…’ কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল কিনেরি।
‘কিছু বলতে হবে না তোমাকে, স্রেফ শুনে যাও। হাইপারস্পেস বাদে অন্য সব প্রকল্পে আমরা অনুদান দিচ্ছি কারণ, “নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো”…হাইপারস্পেস নিয়ে কাজ করার আর কিছুই নেই। কোনো লাভ হবে না কাজ করে। তবে আমরা এটাও চাই না যে মানুষের মনের মধ্যে হাইপারস্পেস নিয়ে থাকা আশাগুলো মরে যাক…এই আশাটুকু কেড়ে নেওয়ার অধিকার আমাদের নেই। মানুষ এই আশা নিয়ে বেঁচে থাকুক যে একদিন হাইপারস্পেসের মাধ্যমে আমরা বহুদূরের গ্রহগুলোতে চলে যেতে পারব। আসল সত্যটা যদি ওদের সামনে প্রকাশিত হয়, তাহলে ভয়ংকর হতাশা দেখা দেবে সমাজে…সেটাকে সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না।’
‘এসব ফালতু কথা বাদ দিন মি. শেচটার…আমার গবেষণাপত্রগুলো দেখুন…অনুদানের ব্যবস্থা করুন। আর স্রেফ দুটো বছর সময় দিন আমাকে। দুই বছরের মধ্যেই আমি এমন ইঞ্জিন বানিয়ে ফেলব, যার মাধ্যমে হাইপারস্পেসে যাওয়া যাবে, আবার ফেরাও যাবে।’
‘আমি জানি তুমি ওই ইঞ্জিন বানাতে পারবে,’ কিনেরির চোখে চোখ রেখে বললেন জেরোম, ‘মি. ক্যানফেরলি কী যেন বলেছিলেন? ও হ্যাঁ, উনি বলেছিলেন, “আমাদের জগতে আলোর গতিকেই সর্বোচ্চ গতি হিসেবে ধরা হয়, কিন্তু হাইপারস্পেসে এমনটা না–ও হতে পারে।” উনি ঠিকই বলেছিলেন…আমাদের জগতে কোনো বস্তু সর্বোচ্চ যে গতিতে চলতে পারে, হাইপারস্পেসে ওই একই বস্তু চলবে ভিন্ন গতিতে।’
‘আমি দুঃখিত কিনেরি, তোমাকে এখন কিছু কঠিন কথা বলতে যাচ্ছি। এই কথাগুলো আমাদের সংস্থার বাইরের কেউই তেমনভাবে জানে না। আজকে তুমিই জানবে। ৩০ বছর আগে মি. লোপেজই হাইপারড্রাইভ বানিয়েছিলেন। তারপর বিশেষ এক যান চলে যায় হাইপারস্পেসে…সেই যানটা আর ফেরেনি! ওখান থেকে ফেরা বোধ হয় অসম্ভব। কারণ, হাইপারস্পেসে সর্বোচ্চ যে গতিতে ভ্রমণ করা যায়, তা আলোর গতির চেয়ে বেশি নয়…বরং কম…এতই কম যে একবার তুমি ওখানে গেলে আর ফিরতে পারবে না…।’