টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ২০ দল সুযোগ পেল যেভাবে
আগামী ফেব্রুয়ারিতে ভারত আর শ্রীলঙ্কায় বসতে চলেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দশম আসর। এর মধ্যে সব প্রস্তুতি একে একে সম্পন্ন হচ্ছে। এই সপ্তাহেই শেষ হয়ে গেল এশিয়ান বাছাইপর্ব। বিশ্বকাপের শেষ দলটাও নিশ্চিত হয়ে গেল এই লড়াই থেকে। আগামী বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ২০ দল কারা আর কীভাবে বাছাইপর্ব পার করল তারা, সেটা নিয়েই আজকের লেখা।
স্বাগতিক:
২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্বাগতিক হিসেবে সরাসরি সুযোগ পেয়েছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা।
শীর্ষ আট:
গত বিশ্বকাপে সুপার এইট খেলা আটটি দল (স্বাগতিক ভারত বাদে সাতটি) সরাসরি সুযোগ পেয়েছে বিশ্বকাপে। সেই আটটি দল হলো আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
টি-টোয়েন্টি র্যাংকিং:
বিশ্বকাপের পরবর্তী পর্যায়ে যোগ দিয়েছে আরও তিনটি দল। আয়ারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান। এই তিন দল বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছে তাদের র্যাংকিংয়ের বদৌলতে। শীর্ষ ১২-তে থাকার সুবাদে বিশ্বকাপের সরাসরি টিকিট মিলেছে তাদের।
বাছাইপর্ব:
বিশ্বকাপের বাকি আটটি জায়গা পূরণ করতে আইসিসি শরণাপন্ন হয়েছে বাছাইপর্বের। বিশ্বের প্রতিটি ক্রিকেট খেলুড়ে দল আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পায়। সেই অনুযায়ী বিশ্বের প্রতিটি দলই নাম লিখিয়েছিল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে। সেই বাছাইপর্ব পেরিয়ে উঠে এসেছে আটটি দল।
আমেরিকান বাছাইপর্ব:
আমেরিকান বাছাইপর্ব থেকে মাত্র একটি দল সুযোগ পেয়েছে বিশ্বকাপের মূল পর্ব খেলার। দলটির নাম কানাডা। দুই আমেরিকা মিলে ‘আমেরিকান বাছাইপর্ব’ খেলেছে মোট ১০টি দল। আঞ্চলিক বাছাইপর্বের ৯টি দল থেকে মূল পর্বে উঠে তিনটি দল। গত বিশ্বকাপ খেলায় সরাসরি মূল বাছাইপর্বে যোগ দেয় কানাডা। সেখানে বাহামাস, বার্মুডা ও কায়মান আইল্যান্ডসকে হারিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের নাম লেখায় কানাডা।
আফ্রিকান বাছাইপর্ব:
আফ্রিকান বাছাইপর্বে মোট অংশ নিয়েছিল ২০টি দল। ১৮টি দল আঞ্চলিক বাছাইপর্ব খেলে যোগ দিয়েছিল মূল বাছাইপর্বে। আর আগেই বিশ্বকাপ খেলায় নামিবিয়া আর উগান্ডা সরাসরি যোগ দিয়েছিল মূল পর্বে। বৎসোয়ানা, কেনিয়া, মালাউই, নাইজেরিয়া, তানজানিয়া ও জিম্বাবুয়ে বাছাইপর্ব খেলে এসেছিল মূল বাছাইপর্বে। দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে মূল বাছাইপর্ব থেকে সেমিফাইনালে ওঠে নামিবিয়া, তানজানিয়া, জিম্বাবুয়ে ও কেনিয়া। ফাইনালে ওঠা দুই দল, নামিবিয়া ও জিম্বাবুয়ে পায় বিশ্বকাপের টিকিট। আর নামিবিয়াকে হারিয়ে আফ্রিকান বাছাইপর্বের শিরোপা জিতে নেয় জিম্বাবুয়ে।
এশিয়ান বাছাইপর্ব:
আঞ্চলিক বাছাইপর্বকে ভাগ করা হয়েছিল দুটি ভাগে। এক ভাগে পূর্ব-এশিয়া ও এশিয়া প্যাসিফিকের দেশগুলো। অন্য ভাগে ছিল এশিয়ার বাকি দেশগুলো। এশিয়া প্যাসিফিক থেকে অংশ নিয়েছিল আটটি দল। দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে সেখান থেকে শীর্ষ দল সুযোগ পায় মূল বাছাইপর্বে। এশিয়া প্যাসিফিক থেকে মূল বাছাইপর্বে জায়গা নিশ্চিত করে সামোয়া ও জাপান।
অন্যদিকে এশিয়ার বাকি দেশগুলো থেকে অংশ নিয়েছিল ১৪টি দল। সেখান থেকে দুই গ্রুপের শীর্ষ দুই দল নিয়ে, মোট চারটি দল সুযোগ পায় মূল বাছাইপর্বে। সেই চারটি দল হলো কুয়েত, মালয়েশিয়া, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। আর গত বিশ্বকাপ খেলায় সরাসরি বাছাইপর্বে যোগ দেয় নেপাল, ওমান ও পাপুয়া নিউগিনি।
৯টি দলকে তিনটি গ্রুপে ভাগ করে শুরু হয় মূল এশিয়ান বাছাইপর্ব। সেখান থেকে সুপার সিক্স। আর সুপার সিক্স থেকে শীর্ষ তিন দল পায় বিশ্বকাপের টিকিট। সেই শীর্ষ তিন দল হলো নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান।
ইউরোপিয়ান বাছাইপর্ব:
ইউরোপিয়ান বাছাইপর্বে অংশ নিয়েছিল সর্বোচ্চ ৩০টি দল। সেই সঙ্গে গত বিশ্বকাপ খেলায় সরাসরি যোগ দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস ও স্কটল্যান্ড। আঞ্চলিক গ্রুপগুলো থেকে মূল বাছাইপর্বে উঠে আসে তিনটি দেশ—গার্নসি, ইতালি ও জার্সি। পাঁচ দলের লড়াইয়ে শীর্ষ দুই দল পায় বিশ্বকাপের টিকিট। সবাইকে চমকে দিয়ে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে বিশ্বকাপের টিকিট কাটে ইতালি। ফুটবল বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া নিয়ে দোটানা থাকলেও ২০২৬ সালে অন্তত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা হচ্ছে তাদের। সমান পয়েন্ট পেয়েও রান রেটে পিছিয়ে থাকায় বিশ্বকাপে সুযোগ হয়নি জার্সির।