বাফেট-গেটসের চোখে সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি অভ্যাস
শুধু বুদ্ধি নয়, সাফল্যের পেছনে অভ্যাসও কাজ করে।
সবাই জানে, ওয়ারেন বাফেট ও বিল গেটস বর্তমান সময়ের সবচেয়ে সফল দুই ব্যক্তি।
তাঁরা দুজনই বলেছেন, আইকিউ যত বেশিই হোক না কেন, ভালো অভ্যাস ছাড়া কেউ অনেক দূর যেতে পারে না। অর্থাৎ ভালো অভ্যাস সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি।
১৯৯৮ সালে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া বক্তৃতায় ওয়ারেন বাফেট ও বিল গেটস তাঁদের জীবন বদলে দেওয়া কিছু অভ্যাসের কথা বলেছিলেন।
বাফেটের অভ্যাস
বাফেট বলেছিলেন, যাঁদের তুমি শ্রদ্ধা করো, তাঁদের গুণ নিজের মধ্যে আনো।
বাফেট আরও বলেছিলেন, সাফল্যের অন্যতম বড় চাবিকাঠি হলো রেশনালিটি, অর্থাৎ যুক্তিসংগতভাবে আচরণ করা, ধারাবাহিক থাকা।
উদাহরণ দিতে গিয়ে বাফেট বলেছিলেন, অনেকে ৪০০ হর্সপাওয়ারের মোটর নিয়ে জন্মায়। কিন্তু কাজে লাগায় মাত্র ১০০ হর্সপাওয়ার। আবার কেউ ২০০ হর্সপাওয়ার নিয়ে জন্মে পুরোটাই কাজে লাগায়।
বাফেটের পরামর্শ হলো
তোমার আশপাশে যাঁকে সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা করো, তাঁর ভালো গুণগুলো লিখে ফেলো।
যাকে একেবারেই পছন্দ করো না, তার খারাপ গুণগুলোও লিখে রাখো।
এবার চেষ্টা করো প্রথমজনের ভালো গুণগুলো অর্জন করতে। আর দ্বিতীয়জনের খারাপ গুণগুলো নিজের ভেতর থেকে বাদ দিতে।
অর্থাৎ বাফেটের মতে, অন্যের ভালো অভ্যাসগুলো ধার করো। এটাই তোমাকে আলাদা করে তুলবে।
আর বিনিয়োগের ব্যাপারে তাঁর সহজ পরামর্শ—ছোট থেকেই শুরু করো, নিয়মিত করো। একটু একটু করে বিনিয়োগ করলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা অনেক বেড়ে যায়।
গেটসের অভ্যাস
বিল গেটস একটিমাত্র লক্ষ্যে অটুট থাকার, ফোকাস রাখার পরামর্শ দেন। বাফেটের পর মঞ্চে উঠে বিল গেটস বলেছিলেন, মাইক্রোসফট শুরু করার সময় মাথায় ছিল একটি স্বপ্ন—একদিন প্রতিটি ঘরে থাকবে একটি কম্পিউটার।
বিল গেটসের মতে, সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল শুধু দুই জিনিসের কারণে—
ছোটবেলা থেকে গড়ে তোলা অভ্যাস।
আর অবিশ্বাস্য ফোকাস।
বিল গেটসের ভাষায়, ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা, আর তাতে স্থির থাকা—এটাই সাফল্যের আসল শক্তি।
শেষ কথা
ওয়ারেন বাফেট ও বিল গেটস দুজনেই প্রমাণ করেছেন, বুদ্ধিমত্তা শুরু হতে পারে জন্ম থেকে। কিন্তু সাফল্যের শেষ লাইন পার হয় অভ্যাস আর ফোকাসের জোরে।
তুমি যদি আজ থেকেই শুরু করতে চাও—যাঁদের শ্রদ্ধা করো, তাঁদের গুণ লিখে রাখো। আর নিজের ফোকাসটা ঠিক করো একটা লক্ষ্যে।
জন্মগত প্রতিভা নয়; বরং গড়ে তোলা অভ্যাসই মানুষকে আলাদা করে।