যে মামলায় নিজেই তদন্তে নেমেছিলেন শার্লকস্রষ্টা আর্থার কোনান ডয়েল
শার্লক হোমস নামটা শুনলেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে ২১১বি, বেকার স্ট্রিট। এক কিংবদন্তি গোয়েন্দা, যার পর্যবেক্ষণের ক্ষমতা আর যুক্তির ধার ছুরির ফলার চেয়েও ধারালো। মুখে পাইপ, হাতে ম্যাগনিফাইং গ্লাস নিয়ে তিনি এমন সব রহস্যের সমাধান করেছেন, যা সাধারণ মানুষের ভাবনারও অতীত। কিন্তু তোমরা বইয়ে যে শার্লক হোমসের গল্প পড়েছ, তা শুধুই গল্প। কিন্তু কেমন হতো, যদি এই কালজয়ী চরিত্রের স্রষ্টা, অর্থাৎ স্যার আর্থার কোনান ডয়েল নিজেই তদন্তে নামতেন? গল্পের প্লট তৈরির জন্য যিনি মাথা খাঁটিয়ে এত রহস্য উপন্যাস লিখেছেন, তিনি বাস্তবে গোয়েন্দার ভূমিকায় নামলে কেমন হতো? তিনি কি পারতেন নিজের সৃষ্ট চরিত্র শার্লক হোমসের মতো ধাপে ধাপে কেসের সমাধান করতে? হ্যাঁ, পারতেন। একজন নিরাপরাধীকে বাঁচাতে তিনি সত্যিই শার্লকের ভূমিকায় নেমেছিলেন। চলো সেই সত্য ঘটনাটাই জানা যাক।
১৯০৩ সাল। ইংল্যান্ডের স্ট্যাফোর্ডশায়ারের গ্রেট ওয়ারলি গ্রাম। চারপাশ সবুজে ঘেরা। হঠাৎ এক রাতে সেই গ্রামের শান্তি উবে গেল। ভোরের আলো ফুটতেই একটি খামারে দেখা গেল বীভৎস দৃশ্য। একটি ঘোড়াকে কেউ নির্মমভাবে অত্যাচার করেছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে চিরে দিয়েছে ঘোড়ার পেট। সারা রাত ধরে পেট থেকে সব নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে গেছে, কিন্তু ঘোড়াটি বেঁচে আছে তখনো। মৃত্যুর প্রহর গুনছে। সেই মৃত্যুযন্ত্রণা থেকে ঘোড়াটিকে বাঁচান এক পুলিশ কর্মকর্তা। গুলি করে হত্যা করেন ঘোড়াটিকে। কিন্তু কে করল এই পাশবিক কাজ? কেনই–বা ঘোড়াটিকে এভাবে পেট চিরে রেখে গেল? এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর পাওয়া গেল না।
কিছুদিন পর আবার ঘটল একই ঘটনা। এবার একই অবস্থা হলো একটি গরুর। তারপর একটি ভেড়া। একের পর এক নিরীহ পশুকে রাতের অন্ধকারে কেউ বীভৎসভাবে হত্যা করছে। না, ঠিক হত্যা করছে না, এমন অবস্থায় রেখে যায়, যাতে সারা রাত ধুঁকতে ধুঁকতে সকালে মারা যায়। কিন্তু কে বা কারা এ কাজ করছে, তার কোনো সদুত্তর পাওয়া গেল না। পুরো গ্রামে যেন এক অদৃশ্য আততায়ী ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাত নামলেই সে বেরিয়ে আসে।
মানুষের মনে দানা বাঁধছে ভয়। সেই ভয়কে আরও বাড়িয়ে দিতে শুরু হলো নতুন উপদ্রব—বেনামি চিঠি। গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে আসতে লাগল অশ্লীল আর হুমকিভরা সব উড়োচিঠি। সেই চিঠিগুলোয় এমন সব ব্যক্তিগত তথ্য থাকত, যা কেবল গ্রামের মানুষজনই জানতে পারে। আতঙ্ক আর সন্দেহের এক কালো মেঘে ছেয়ে গেল গ্রেট ওয়ারলির আকাশ।
পশু হত্যা ও বেনামি চিঠির তদন্তভার পড়ল স্ট্যাফোর্ডশায়ার পুলিশপ্রধান ক্যাপ্টেন জর্জ অ্যানসনের ওপর। তিনি মরিয়া হয়ে উঠলেন রহস্যময় অপরাধীকে ধরতে। তাঁর সন্দেহের তির ঘুরেফিরে গ্রামের এক অদ্ভুত পরিবারের দিকেই যাচ্ছিল, এদালজি পরিবার। এর পেছনেও আছে এক অদ্ভুত কাহিনি।
এদালজি পরিবারের প্রধান রেভারেন্ড শাহপুরজি এদালজি। তিনি ছিলেন একজন ভিকার বা ধর্মযাজক। ভারতের মুম্বাইয়ে এক পার্সি পরিবারে তাঁর জন্ম। শৈশবে তিনি খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত হন। এরপর মিশনারির কাজেও আগ্রহী হয়ে ওঠেন। উচ্চশিক্ষা আর ধর্মীয় কাজের জন্য দেশ ছেড়ে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান। সেখানে গিয়ে পুরোপুরি খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন। ধর্মান্তরিত হওয়ায় ভারতে আর স্থায়ীভাবে ফিরে আসেননি তিনি। স্থায়ী হয়েছেন ইংল্যান্ডে। ওয়ারলি গ্রামের এক নারীকে বিয়ে করে সেখানেই থিতু হন। তাঁদের এক ছেলে হয়, নাম জর্জ এদালজি। শান্ত, লাজুক আর পড়ুয়া এই ছেলে বড় হয়ে পেশা হিসেবে বেছে নেয় ওকালতি। এই যুবকই আমাদের আজকের গল্পের নায়ক (নাকি ভিলেন!)।
শাপুরজি এদালজি যেহেতু বিদেশবিভুঁই থেকে এসে ইংল্যান্ডের এক নারীকে বিয়ে করে সেখানে থিতু হয়েছেন, তাই এই পরিবারকে মানুষ ভিন্ন চোখে দেখত। অশ্বেতাঙ্গ হয়ে শ্বেতাঙ্গ নারীকে বিয়ে করাটা ভালো চোখে নেয়নি গ্রামের মানুষ। তাই সেখানকার পুলিশের চোখেও বিষের কাঁটা হয়ে ছিল এদালজি পরিবার।
যাহোক, এই কেসের তদন্তের ভার দেওয়া হয় জর্জ অ্যানসেনকে। ক্যাপ্টেন অ্যানসনের নেতৃত্বে পুলিশ জর্জ এদালজির বাড়িতে হানা দেয়। আর সেখান থেকেই বেরিয়ে আসে একের পর এক অকাট্য প্রমাণ। জর্জের ঘর থেকে পাওয়া গেল একটি ধারালো রেজার। পুলিশ দাবি করল, ওই রেজার দিয়েও পশুর পেট চিরে দেওয়া হয়েছে। পাওয়া গেল এক জোড়া কাদামাখা বুট আর একটি ভেজা কোট। রাতের অন্ধকারে অপরাধ করার একদম মোক্ষম পোশাক! শুধু তা–ই নয়, কোটের ওপর পাওয়া গেল কিছু চুল। সেগুলো ফরেনসিক পরীক্ষা করে ‘ঘোড়ার চুল’ বলে রায় দেওয়া হলো।
সবচেয়ে বড় প্রমাণ এল হাতের লেখা বিশ্লেষণ করে। উড়োচিঠিগুলোর হাতের লেখার সঙ্গে জর্জ এদালজির হাতের লেখা মিলে যায়। ব্যস, কেস প্রায় পানির মতো পরিষ্কার হয়ে গেল। জর্জ এদালজি, যে কি না একজন ভদ্রলোক ও আইনজীবী, রাতের অন্ধকারে সে–ই হয়ে ওঠে এক ভয়ংকর পশুহত্যাকারী।
আদালতে জর্জ এদালজির বিরুদ্ধে প্রমাণগুলো পেশ করা হলো। তাঁর শান্ত স্বভাব আর ভালো মানুষের তকমা ম্লান হয়ে গেল পুলিশের পেশ করা জোরালো প্রমাণের সামনে। ফলাফল, সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। গ্রেট ওয়ারলির মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল, ভয়ংকর সেই অপরাধী অবশেষে শ্রীঘরে।
গল্পের শেষটা এমন হতে পারত। কিন্তু এই গল্পের শুরু এখান থেকেই। তিন বছর কারাগারে থেকে মুক্তি পেলেন জর্জ। জেলে ভালো ব্যাবহারের কারণে তাঁর শাস্তি কমিয়ে দেওয়া হলো। কিন্তু তাঁর কপাল থেকে অপরাধীর কলঙ্ক মুছল না। সম্মান, পেশা আর ভবিষ্যৎ হারিয়ে তিনি তখন এক বিধ্বস্ত মানুষ। কারণ, কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও আরও চার বছর তিনি ওকালতি করতে পারবেন না। এমনকি ওয়ারলি গ্রামের বাইরে যেতে পারবেন না। থানায় হাজিরা দিতে হবে প্রতি মাসে। বিশেষ কাজে গ্রামের বাইরে যেতে হলেও লাগবে পুলিশি অনুমতি। আসলে এভাবে মুক্তি দেওয়ার চেয়ে কারাগারে থাকাই বোধ হয় ভালো ছিল।
যাহোক, এদালজি কিন্তু এতে দমে যাননি। কারণ, তিনি নির্দোষ। এই বিশ্বাসকে পুঁজি করেই তিনি তাঁর শেষ চেষ্টাটা চালালেন। একটি চিঠি লিখলেন। আর সেই চিঠি গিয়ে পৌঁছাল এমন একজনের ঠিকানায়, যাঁর নাম শুনলেই অপরাধজগতের শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায়। ২১১বি, বেকার স্ট্রিট। না, শার্লক হোমসের কাছে নয়; বরং তার স্রষ্টা স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের কাছে।
স্যার আর্থার তখন ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। সদ্য মারা গেছেন তাঁর স্ত্রী। সেই শোকে কোনো কাজে মন বসাতে পারছেন না। লিখতে পারছেন না শার্লক হোমসের পরের কিস্তি। এমন সময় তাঁর হাতে এসে পৌঁছাল একটি চিঠি। এখন আর সব চিঠি খুলে পড়েন না নিজে। বেশির ভাগই আসে শার্লক হোমসের নামে। বিড়াল-কুকুরের মতো পোষা প্রাণী খুঁজে দেওয়ার আবদার করতেও ছাড়ে না মানুষ। তাই ওসব চিঠি পড়েন তাঁর অ্যাসিস্ট্যান্ট মিস্টার উডি।
যথারীতি জর্জ এদালজির চিঠি পড়ে উডি তা স্যার আর্থারের জন্য রেখে দিলেন। জর্জ এদালজি স্যার আর্থারের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। কৌতূহলবশেই সেই চিঠি পড়তে শুরু করলেন স্যার আর্থার। পড়তে পড়তে তাঁর কপালে ভাঁজ পড়ল। কিছু একটা ঠিক নেই। এত সহজে সমাধান হয়ে যাওয়া কেসটা তার কাছে বড্ড বেশি গোলমেলে মনে হলো। তিনি জর্জ এদালজিকে দেখা করতে বললেন।
স্যার আর্থারের সঙ্গে দেখা করতে জর্জ এদালজি এলেন লন্ডনের একটি হোটেলে। কোনান ডয়েল তাঁর সঙ্গে কথা বলার আগে পর্যবেক্ষণ করলেন। দেখলেন, জর্জ খবরের কাগজটা চোখের একেবারে কাছে এনে শিরোনামগুলো পড়ার চেষ্টা করছেন। তাঁর ক্ষীণদৃষ্টি এতটাই তীব্র যে সাধারণ দূরত্ব থেকে তিনি কিছুই দেখতে পান না।
আর ঠিক তখনই শার্লকস্রষ্টার মাথায় যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল! তাঁর অনুসন্ধানী মন বলে উঠল, ‘অসম্ভব!’ যে মানুষ দিনের আলোয় চশমা ছাড়া খবরের কাগজের শিরোনাম পড়তে পারে না, সে রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকারে, এবড়োখেবড়ো মাঠ আর কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে একটা পশুকে খুঁজে নিখুঁতভাবে হত্যা করবে? স্যার আর্থারের মন থেকে সব দ্বিধা দূর হয়ে গেল। তিনি বুঝে গেলেন, এই শান্ত, অসহায় যুবক এক ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে।
এবার গোয়েন্দার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন স্বয়ং কোনান ডয়েল। তিনি লন্ডন থেকে সোজা চলে গেলেন গ্রেট ওয়ারলি গ্রামে। শুরু হলো তাঁর নিজস্ব তদন্ত। সঙ্গে ওয়াটসনের মতো নিয়ে গেলেন মিস্টার উডিকে। পুলিশের তৈরি করা আপাতদৃষ্টে অকাট্য প্রমাণের দেয়াল তিনি এক এক করে ভাঙতে শুরু করলেন।
প্রথমে সেই রেজারটি পরীক্ষা করলেন। কোথায় রক্তের দাগ? কোথায় পশুর চুল? কিছুই নেই! ওটা ছিল জর্জের শেভ করার সাধারণ রেজার। এরপর গেলেন সেই মাঠে, যেখানে কয়েকটা অপরাধ ঘটেছিল। পুলিশ বলেছে, এখানকার কাদামাটিতে জর্জের জুতার ছাপ পেয়েছে। কিন্তু এই মাঠে তো অনেকেই আসে। তাহলে রাতের অন্ধকারে জর্জের জুতার ছাপ আলাদা করলেন কীভাবে?
এরপর এল সেই ঘোড়ার চুলের রহস্য। জর্জের কোটে যে চুল পাওয়া গেছে। আর্থার সেটি কোটও আবারও ভালোভাবে পরীক্ষা করলেন। তিন বছর আগে যে এই কোট পরীক্ষা করে রায় দিয়েছিলেন, কথা বললেন তাঁর সঙ্গেও। তাঁর কথায় গরমিলের আভাস পাওয়া গেল। আর কোটে যে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছিল বলে আদালত জানিয়েছিলেন, তা ছিল শুকিয়ে যাওয়া খাবারের দাগ!
সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দিলেন হাতের লেখার প্রমাণে। স্যার আর্থার দেশের সেরা হস্তলিপিবিশারদদের কাছে বেনামি চিঠি আর জর্জের হাতের লেখা পাঠালেন। তিনি পুলিশের সেই বিশেষজ্ঞর রায়কে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিলেন। আর্থারকে জানালেন, দুটি লেখার মধ্যে কোনো মিলই নেই!
তাহলে আসল অপরাধী কে? জর্জ এদালজি তো কোনোভাবে অপরাধী প্রমাণিত হন না। কিন্তু জর্জকে বাঁচাতে হলে ধরতে হবে আসল অপরাধীকে। তিনি শার্লোক হোমস গল্পের মতো ধাপে ধাপে কাজ শুরু করলেন। বেনামি চিঠিতে জন মিল্টনের কবিতার লাইন ছিল। নিশ্চয়ই কোনো এক সময় ইংল্যান্ডে জন মিল্টনের কবিতা পাঠ্যবইয়ে ছিল। খুঁজে বের করলেন, কত সালের দিকে এই কবিতা পাঠ্যবইয়ে ছিল। এসব তথ্য ঘাঁটতে ঘাঁটতে সামনে এল রয়ডেন শার্প নামে এক ছেলের নাম।
রয়ডেন শার্প দুষ্টের শিরোমণি। কোনো অপরাধ করতেই তার হাত কাঁপে না। স্কুলেও তার বেনামি চিঠি লেখার অভ্যাস ছিল। শিক্ষকদের পর্যন্ত বেনামি চিঠি লিখে ভয় দেখাত। তাই তাকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে পারেন স্যার আর্থার। সত্যটা নিজের চোখের সামনে দেখতে পান।
কিন্তু ব্রিটিশ প্রশাসন কি নিজেদের ভুল এত সহজে স্বীকার করবে? তাই কোনান ডয়েল এবার তাঁর সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্রটি ব্যবহার করলেন, কলম। তিনি ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় জর্জের কেস নিয়ে একের পর এক প্রবন্ধ লিখে সারা ব্রিটেনে ঝড় তুললেন। ওই লেখার কোনো কপিরাইট না থাকায় তা বাতাসের মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে শার্লোক হোমস চরিত্রের জন্যও সাহিত্যজগতে ব্যাপক প্রশংসনীয় হয়েছেন। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে তখন কোনান ডয়েল। এমন একজন লেখক যদি বাস্তবে তদন্ত করেন, তা তো বাতাসের আগে ছড়াবেই!
স্যার আর্থার নিজের প্রবন্ধে পুলিশের অযোগ্যতা, তদন্তে গাফিলতি আর এক নিরপরাধ মানুষের ওপর হওয়া অবিচার প্রকাশ্যে আনলেন। জনমতের চাপে ব্রিটিশ সরকার নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হলো। জর্জ এদালজিকে নির্দোষ ঘোষণা করে ক্ষমা করা হলো। তিনি ফিরে পেলেন তাঁর সম্মান ও আইনি পেশা। সেই সঙ্গে নিজের প্রথম কেস সফলভাবে সমাধান করলেন শার্লকস্রষ্টা স্যার আর্থার কোনান ডয়েল।
মামলাটা শুধু একজন নিরপরাধ মানুষকে মুক্তি দেয়নি, জন্ম দিয়েছিল এক ইতিহাসের। এ ঘটনার পরেই ব্রিটিশ বিচারব্যবস্থায় ‘ফৌজদারি আপিল আদালত’ গঠিত হয়। আর যাতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি অন্যায়ের শিকার না হন, যাতে সাধারণ মানুষ নিজের কথাটা বলার সুযোগ পান, তাই স্যার আর্থার কোনান ডয়েল আপিল আদালত করার জন্য জোর দেন। তিনি এই লড়াইয়ে নেমেছিলেন ন্যায়ের জন্য। প্রমাণ করে দিয়েছিলেন, সব রহস্য শুধু ভয়ংকর অপরাধের মধ্যে লুকিয়ে থাকে না, অনেক সময় সবচেয়ে জটিল রহস্য তৈরি হয় মানুষের বানানো অবিচারে। আর সেই রহস্য ভেদ করার জন্য প্রয়োজন হয় শার্লক হোমসের মতো তীক্ষ্ণ ও একটি অনুসন্ধানী মন।
সূত্র:
১. দ্য কেস অব মিস্টার জর্জ এদালজি স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন বাই স্যার আর্থার কোনান ডয়েল, এনসাইক্লোপিডিয়া
২. জর্জ এদালজি-কোনান ডয়েল, পোর্টসমাউথ
৩. স্যার আর্থার কোনান ডয়েল অ্যান্ড জর্জ এদালজি, ব্রিটিশ হেরিটেজ ট্র্যাভেল
৪. ডয়েল অ্যান্ড দ্য এদালজি কেস, দ্য ন্যাশনাল মেডিকেল জার্নাল অব ইন্ডিয়া
৫. জর্জ এদালজি, উইকিপিডিয়া
৬. শার্লকস্রষ্টা এবং বিশেষ কাঁটা, অরিজিৎ গাঙ্গুলি (অন্তরীপ পাবলিকেশন)