ভূতের সঙ্গে অঙ্কের খেলা: ফিবোনাচ্চি এবং তাঁর খরগোশ বাহিনী

অধ্যায় ছয়

পরেরবার যখন সংখ্যার ভূতের সঙ্গে দেখা হলো, সে এক বিশাল আলুর খেতের মাঝখানে একটা ফোল্ডিং চেয়ারে বসে ছিল।

‘তুমি হয়তো ভাবো আমি একাই এমন,’ বলল ভূতটা।

‘একাই কী?’ জিজ্ঞেস করল রোহান।

‘একাই সংখ্যার ভূত। কিন্তু আসলে আমি একা নই। আমি অনেকের মধ্যে একজন। সংখ্যার স্বর্গে—যেখান থেকে আমি এসেছি—সেখানে গিজগিজ করছে আমাদের মতো ভূতে। আমি তো বসদের মধ্যে পড়িও না। বসরা বসে বসে শুধু চিন্তা করে। মাঝেমধ্যে তাদের একজন হাসে আর বলে, ‘Rn সমান hn ফ্যাক্টরিয়াল গুণ n-এর f প্লাস থিটা ক্লোজ ব্র্যাকেট,’ আর বাকিরা মাথা নাড়ে আর সঙ্গে হাসে। এমনও সময় আসে যখন আমি নিজেও একবিন্দু বুঝি না।’

‘বেচারা ভূত।’ বলল রোহান। ‘আর আমি ভাবতাম তুমি নিজেকে নিয়ে খুব গর্বিত।’

‘তুমি কী ভাবো, ওরা আমাকে রাতে বাইরে পাঠায় কেন? কারণ, রাঘববোয়ালদের তোমার মতো শিক্ষানবিশদের কাছে আসার সময় নেই।’

‘তার মানে তোমাকে পাওয়াটাও আমার ভাগ্য। তাই তো?’

‘ভুল বুঝো না,’ রোহানের বন্ধু বলল। বন্ধু বলছি কারণ এত দিনে তারা মোটামুটি ভালো বন্ধু হয়ে গেছে। এবার রোহানের বন্ধু বলতে শুরু করল, ‘সংখ্যার স্বর্গের ওই বসেরা যা আবিষ্কার করে, তার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। তাদের মধ্যে একজনকে আমি বিশেষ পছন্দ করি। তাঁর নাম ফিবোনাচ্চি। ইতালিয়ান লোক। তিনি মাঝেমধ্যে তাঁর কাজের সম্পর্কে আমাকে বলেন। বেচারা ফিবোনাচ্চি, মারা গেছেন অনেক বছর হলো। কিন্তু সংখ্যার ভূত হলে ওসব কোনো ব্যাপার না। তা ছাড়া লোকটা চমৎকার। আর যারা শূন্যের মানে প্রথম বুঝেছিল, তাদের মধ্যে সে একজন। সে শূন্য আবিষ্কার করেনি, কিন্তু সে ফিবোনাচ্চি সংখ্যা নামে দারুণ একটা জিনিস আবিষ্কার করেছিল। আর বেশির ভাগ ভালো আইডিয়ার মতো এটাও শুরু হয়েছে ১ দিয়ে। তুমি কী বলো রোহান?

একটা ১ অথবা বলা যায় দুটো ১ দিয়ে: ১ + ১ = ২।’

‘ঠিক ধরেছ তুমি।’

এরপর সংখ্যার ভূত গানের সুরে ফিবোনাচ্চি সংখ্যাগুলো আওড়াতে শুরু করল। যেন ফিবোনাচ্চি অপেরার কোনো গান গাইছে।

‘এক এক দুই তিন পাঁচ আট তেরো একুশ চৌত্রিশ পঞ্চান্ন উননব্বই একশ চুয়াল্লিশ দুইশ তেত্রিশ তিনশ সাতাত্তর...’

রোহান দুই হাতে কান চেপে ধরল।

‘ঠিক আছে, থামছি,’ বলল ভূতটা। ‘তার চেয়ে আমি বরং ওগুলো লিখে দিই যাতে তুমি দেখতে পারো ওগুলো কেমন দেখায়।’

‘তোমার কাছে লেখার মতো কী আছে?’

‘তুমি কী চাও? একটা প্যাঁচানো কাগজ হলে চলবে?’

সে তার লাঠির মাথাটা প্যাঁচ দিয়ে খুলল আর সেখান থেকে একটা সরু কাগজের রোল বের করল। তারপর ওটা মাটিতে ছুড়ে দিয়ে একটু টোকা দিল। লাঙল দেওয়া জমির ওপর দিয়ে কাগজের এক অন্তহীন স্রোত গড়িয়ে চলল।

এত কাগজ ওই লাঠির মধ্যে আঁটল কীভাবে? অবাক হয়ে ভাবল রোহান।

ততক্ষণে কাগজটা গড়িয়ে গড়িয়ে চোখের আড়ালে চলে গেল, আর তার গায়ে লেখা ফিবোনাচ্চি সংখ্যাগুলো:

আরও পড়ুন

তারপর সংখ্যাগুলো এত দূরে আর ছোট হয়ে গেল যে রোহান আর পড়তে পারল না।

‘এখন কী?’

‘প্রথম পাঁচটার যোগফলের সঙ্গে যদি ১ যোগ করো, তবে ৭ নম্বরটা পাবে। প্রথম ছয়টার যোগফলের সঙ্গে যদি ১ যোগ করো, তবে ৮ নম্বরটা পাবে। আর এভাবে চলতেই থাকবে।’

‘বুঝেছি,’ বলল রোহান। কিন্তু তাকে খুব একটা উত্তেজিত মনে হলো না। ‘তুমি যদি সংখ্যা ডিঙিয়ে যাও, তাতেও এটা কাজ করে। শুধু মনে রেখো, প্রথম ১ সব সময় থাকতে হবে। তুমি এভাবে শুরু করো: ১ + ১ = ২ (এখন তুমি একটা ডিঙাও)।

‘চৌত্রিশ,’ রোহান বলল।

‘অন্যভাবে বললে, একুশের পরের ফিবোনাচ্চি সংখ্যা। আর যদি এটা তোমার কাছে খুব কঠিন লাগে, তবে তুমি লাফিয়েও (পড়ো বর্গ করে) ওখানে যেতে পারো। উদাহরণ হিসেবে, তুমি ৪ নম্বর ফিবোনাচ্চি সংখ্যাটা নাও। সেটা হলো ৩। আর ওটাকে লাফ দেওয়ালে হবে ৩২। অর্থাৎ বর্গ করলে হবে...’

‘৯,’ বলল রোহান।

‘এখন তুমি পরের ফিবোনাচ্চি সংখ্যাটা নাও, পাঁচ নম্বরটা। সেটা হলো ৫। আর ওটাকে বর্গ করলে পাব…’

‘৫২ = ২৫,’ একমুহূর্তও না ভেবে বলল রোহান।

‘দারুণ, এবার দুটো যোগ করো।’

৯ + ২৫ = ৩৪

‘আরেকটা ফিবোনাচ্চি সংখ্যা!’ সে চেঁচিয়ে উঠল।

‘শুধু তাই না,’ হাত ঘষতে ঘষতে বলল ভূতটা। ‘ঠিক ৯ নম্বরটা। কারণ ৪ আর ৫ যোগ করলে হয় ৯।’

‘দারুণ, দারুণ। খুব ভালো কথা। কিন্তু আমাকে বলো তো, তোমার এই ফিবোনাচ্চি সংখ্যাগুলো কী কাজে লাগে?’

‘তুমি কি ভাবো গণিত শুধু গণিতবিদদের জন্য? প্রকৃতিরও সংখ্যার দরকার হয়। গাছেরা যোগ করে। মাছেরা বিয়োগ করে।’

‘থাক, থামো তো,’ বলল রোহান। ‘তুমি নিশ্চয়ই আশা করো না আমি এটা বিশ্বাস করব।’

‘আমি আশা করি তুমি বিশ্বাস করবে যে প্রতিটি জীবন্ত প্রাণী সংখ্যা ব্যবহার করে। অথবা অন্তত এমন আচরণ করে যেন তারা সংখ্যা ব্যবহার করছে। আর কারও কারও হয়তো এটাও জানা আছে যে ওগুলো কীভাবে কাজ করে।’

‘আচ্ছা, আমি বিশ্বাস করি না।’

‘খরগোশদের কথাই ধরো। ওরা তো মাছের চেয়ে বেশি চনমনে। আমার বাজি, এই আলুর খেতে প্রচুর খরগোশ আছে।’

‘আমি তো একটাও দেখছি না,’ বলল রোহান।

‘তাকিয়ে দেখো, ওই যে দুটি!’

সত্যিই তো, দুটো পুঁচকে সাদা খরগোশ লাফাতে লাফাতে রোহানের পায়ের কাছে এসে বসে পড়ল।

‘আমার মনে হয় একটা ছেলে আর একটা মেয়ে,’ বলল ভূতটা।

‘আর একটা ছেলে এবং একটা মেয়ে মিলে হয় এক জোড়া। তুমি তো জানো, খেলা শুরু করার জন্য আমাদের শুধু একটা ১ দরকার।’

‘সে আমাকে বিশ্বাস করাতে চায় যে তোমরা পাটিগণিত পারো,’ খরগোশগুলোকে বলল রোহান। ‘আমি এত বোকা নই।’

‘তুমি খরগোশদের ব্যাপারে কী জানো রোহান?’ খরগোশ দুটো একস্বরে বলল। ‘আমরা বাজি ধরে বলতে পারি, তুমি ভাবছ আমরা স্নো র‍্যাবিট।’

‘স্নো র‍্যাবিট?’ বলল রোহান। সে দেখাতে চাইছিল যে খরগোশ সম্পর্কে সে কিছু জানে। ‘স্নো র‍্যাবিট তো শীতের প্রাণী, তাই না?’

‘ঠিক,’ ওরা উত্তর দিল, ‘আর ওরা সব সময় সাদা থাকে। কিন্তু আমরা শুধু ছোটবেলায় সাদা থাকি। বড় হতে আমাদের এক মাস সময় লাগে, তখন আমাদের পশম বাদামি হয়ে যায়। আর তারপর আমরা বাচ্চা নিতে চাই। বাচ্চা হতে আরও এক মাস সময় লাগে। একটা ছেলে খরগোশছানা আর একটা মেয়ে খরগোশছানা।’

‘মাত্র দুটো?’ জিজ্ঞেস করল রোহান। ‘আমি তো জানতাম খরগোশদের গাদা গাদা বাচ্চা হয়।’

‘হয় তো, হয়,’ বলল খরগোশেরা, ‘কিন্তু সব একসঙ্গে না। মাসে দুটোই যথেষ্ট। আর ওরাও বড় হয়ে একই কাজ করে। তুমিই দেখতে পাবে।’

‘কিন্তু ততক্ষণে তো আমার ঘুম ভেঙে যাবে। কাল সকালে আমাকে স্কুলে যেতে হবে...’

‘সমস্যা নেই,’ ভূতটা মাঝখানে বলল। ‘আলুর খেতে সময় দ্রুত চলে। এখানে এক মাস মানে মাত্র পাঁচ মিনিট। অন্তত যখন তুমি এই বিশেষ খরগোশ-ঘড়িটা ব্যবহার করবে। সেটা কাকতালীয়ভাবে এখন আমার সঙ্গে আছে।’

এই বলে সে ট্রাউজারের পকেট থেকে একটা বড় পকেটঘড়ি বের করল। ওটাতে দুটো বড় খরগোশের কান আছে, কিন্তু কাঁটা মাত্র একটা।

আরও পড়ুন

‘কাঁটাটা মাস দেখায়, ঘণ্টা নয়,’ সে বলল, ‘আর প্রতিবার একটা মাস পার হলে ঘণ্টা বাজে। ওটা চালু করার জন্য আমাকে শুধু ওপরের বোতামটা চাপতে হবে। চাপব?’

‘ওহ, চাপো!’ খরগোশেরা চেঁচিয়ে উঠল।

‘ভালো।’

সংখ্যার ভূত বোতামটা চাপল। ঘড়িটা টিকটিক করতে শুরু করল; ঘুরতে লাগল কাঁটাটা। ওটা যখন ১-এ পৌঁছাল, ঘণ্টা বাজল। এক মাস পার হয়ে গেছে, খরগোশগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে আর ওদের পশমের রং গেছে বদলে। এখন পশম সাদা থেকে বাদামি হয়ে গেছে।

কাঁটাটা যখন ২-এ পৌঁছাল, দুই মাস পার হলো। আর মা খরগোশ দুটো পুঁচকে সাদা ছানাকে পৃথিবীতে আনল। এখন হলো দুই জোড়া খরগোশ—এক জোড়া ছোট, এক জোড়া বড়।

কিন্তু তারা বেশিক্ষণ সন্তুষ্ট থাকল না। তারা আরও বাচ্চা চাইল, আর কাঁটাটা ৩-এ পৌঁছাতে পৌঁছাতে এবং ঘণ্টা আবার বাজার আগেই, মা খরগোশ আরও দুটো বাচ্চার জন্ম দিল।

রোহান জোড়াগুলো গুনল। এখন তিন জোড়া—সেই প্রথম জোড়া (বাদামি), তাদের প্রথমবারের বাচ্চারা যারা ইতিমধ্যে বড় হয়ে গেছে, আর সেগুলোর নতুন সাদা লোমশ বাচ্চারা। যখন কাঁটাটা ৪-এ পৌঁছাল, বুড়ো মা খরগোশ আরও দুটো বাচ্চার জন্ম দিল, আর তার বড় মেয়েও পিছিয়ে থাকল না, সেও দুটোর জন্ম দিল। তার মানে এখন আলুর খেতে পাঁচ জোড়া খরগোশ লাফাচ্ছে, যার মধ্যে তিন জোড়া বাদামি আর দুই জোড়া সাদা।

‘আমি তোমার জায়গায় হলে ওদের আলাদা করে চেনার চেষ্টা করতাম না,’ বলল ভূতটা। ‘ওদের গুনতেই তোমার জান বেরিয়ে যাবে।’

ঘড়ি যখন ৫-এ পৌঁছাল তখনো রোহানের গুনতে সমস্যা হলো না। মাত্র আট জোড়া।

কিন্তু ষষ্ঠ ঘণ্টা বাজার পর সংখ্যাটা হলো ১৩, আর রোহান ভাবল, এটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে! তবে ঘড়ি ৭-এ পৌঁছানোর পর সে কোনোমতে গুনতে পারল। ঠিক একুশ জোড়া।

‘কিছু বুঝলে?’ ভূতটা রোহানকে জিজ্ঞেস করল।

‘অবশ্যই। এটা পরিষ্কার,’ উত্তর দিল রোহান। ‘পুরোটাই ফিবোনাচ্চি সংখ্যা: ১, ১, ২, ৩, ৫, ৮, ১৩, ২১...’

কিন্তু তার কথা শেষ হওয়ার আগেই নতুন একপাল খরগোশ জন্ম নিল এবং আলুর খেতে তাদের বাদামি ও সাদা ভাই-বোনদের সঙ্গে লাফালাফি শুরু করল। কিছুক্ষণের মধ্যেই রোহান আর গুনে কুলিয়ে উঠতে পারল না। আর খরগোশ-ঘড়ি চলতেই লাগল।

আরও পড়ুন

‘বাঁচাও!’ চিৎকার করে উঠল রোহান। ‘হাজার হাজার খরগোশ আর থামার কোনো লক্ষণ নেই! এটা ভয়ংকর!’

‘তোমাকে আমার বানানো খরগোশদের তালিকাটা দেখাই। তাহলে পুরো ছবিটা পরিষ্কার হবে। এখানে ০ থেকে ৭ পর্যন্ত সব হিসাব আছে।’

‘কিন্তু ৭ তো অনেক আগে পার হয়ে গেছে,’ বলল রোহান। ‘নিশ্চয়ই এখন হাজার হাজার আছে।’

‘৪ হাজার ১৮১ জোড়া। মানে ৫ মিনিট পর হবে ৬ হাজার ৭৬৫ জোড়া।’

‘তুমি কি ওদের বাড়তেই দেবে? কারণ যদি দাও, তবে শিগগিরই পুরো পৃথিবী খরগোশে ঢেকে যাবে।’

‘তুমি যা ভাবছ তার চেয়েও তাড়াতাড়ি,’ চোখের পলক না ফেলে বলল ভূতটা। ‘ঘড়ির কাঁটা আর কয়েকবার ঘুরলেই হবে।’

‘থামাও ওদের! প্লিজ!’ মিনতি করল রোহান। ‘এটা কোনো কৌতুক নয়, এটা একটা দুঃস্বপ্ন! দেখো, খরগোশদের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমি খরগোশ পছন্দ করি। কিন্তু যা হয়েছে যথেষ্ট হয়েছে। ওদের থামাও! প্লিজ!’

‘ঠিক আছে, রোহান। কিন্তু শর্ত হলো তোমাকে স্বীকার করতে হবে যে খরগোশগুলো এমন আচরণ করছে যেন ওরা ফিবোনাচ্চি সংখ্যা মুখস্থ করে এসেছে।’

‘ঠিক আছে। দারুণ। তুমি যা বলো। আমি স্বীকার করলাম। শুধু ওদের থামাও, নইলে ওরা একটু পরেই আমাদের ঘাড়ের ওপর উঠে নাচবে!’

সংখ্যার ভূত খরগোশ-ঘড়ির ওপরের বোতামটা দুবার টিপল, আর ঘড়িটা উল্টো দিকে চলতে শুরু করল। প্রতিবার ঘণ্টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে বিশালসংখ্যক খরগোশ উধাও হয়ে গেল এবং কাঁটাটা কয়েকবার ঘোরার পর আলুর খেতে মাত্র দুটো খরগোশ বাকি রইল।

‘এগুলোর কী হবে?’ জিজ্ঞেস করল ভূতটা। ‘ওদের রাখতে চাও?’

‘মনে হয় না। ওরা আবার সব নতুন করে শুরু করবে।’

‘হ্যাঁ, ওটাই তো প্রকৃতি!’ ফোল্ডিং চেয়ারে আনন্দে দোল খেতে খেতে বলল ভূতটা।

‘আর ওটাই ফিবোনাচ্চি সংখ্যা,’ জবাব দিল রোহান। ‘আমি জানি না ওদের এই অসীমে দৌড় দেওয়ার ব্যাপারটা আমার ভালো লাগে কি না।’

‘যদিও, তুমি যেমন দেখলে, ওরা সহজেই উল্টো দিকেও যেতে পারে। আমরা আবার সেখানেই ফিরে এসেছি, যেখানে শুরু করেছিলাম। আমাদের সেই ১-এ।’

আর তাই আবার ওরা শান্তিতে বিদায় নিল, খরগোশ দম্পতিকে ওদের নিজেদের মতো ছেড়ে দিয়ে। সংখ্যার ভূত ফিরে গেল তার পুরোনো বন্ধু ফিবোনাচ্চি আর সংখ্যার স্বর্গে তাদের অঙ্ক কষা সাঙ্গপাঙ্গদের কাছে। রোহান সারা রাত স্বপ্নহীন ঘুমাল। পরদিন সকালে যখন অ্যালার্ম বাজল, সে স্বস্তি পেল এটা দেখে যে শব্দটা একটা সাধারণ অ্যালার্ম ঘড়ি থেকে আসছে, কোনো খরগোশ-ঘড়ি থেকে নয়।

শেষের আগে

তুমি যদি এখনো বিশ্বাস না করো যে প্রকৃতি সংখ্যার নিয়ম জানে, তবে নিচের গাছটার দিকে তাকাও। হয়তো ওই সব খরগোশ তোমাকে একটু গুলিয়ে দিয়েছে। কিন্তু একটা গাছ তো আর মাঠজুড়ে লাফালাফি করতে পারে না, তাই ওটার ডালপালা গুনতে তোমার কোনো সমস্যা হবে না। নিচ থেকে শুরু করো, লাল দাগ দেওয়া ১ নম্বর লাইন থেকে। এটা শুধু কাণ্ডের ভেতর দিয়ে গেছে, যেমন গেছে ২ নম্বর লাইন। এক লাইন ওপরে, ৩ নম্বর লাইনে, কাণ্ডের সঙ্গে একটা ডাল যোগ হয়েছে। এভাবে চালিয়ে যাও। একদম ওপরে, ৯ নম্বর লাইনে পৌঁছালে কয়টা ডাল পাবে?

আরও পড়ুন